শনিবার ● ৫ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » সুষ্ঠু বাজার তৈরিতে নতুন জোট বাফকমের যাত্রা শুরু
সুষ্ঠু বাজার তৈরিতে নতুন জোট বাফকমের যাত্রা শুরু
দেশের সামগ্রিক প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম, দক্ষ ও কার্যকর প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন ও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার সুযোগ সৃষ্টিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রতিনিধিদের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করার উদ্দেশ্যে একটি জোট গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স ফর ফেয়ার কম্পিটিশন (বাফকম) নামক এই বেসরকারি অলাভজনক জোটটি সকল খাতের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত করবে। মোস্তাফা জব্বারকে আহ্বায়ক করে বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স ফর ফেয়ার কম্পিটিশন (বাফকম) এর ১৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে। গত ২ নভেম্বর বেসিস মিলনায়তনে বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স ফর ফেয়ার কম্পিটিশন (বাফকম) এর কার্যক্রমের সূচনা, আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা ও এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাফকমের আহ্বায়ক ও বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর টেলিকম ও আইটি কমিটির আহ্বায়ক এবং এমসিসিআই এর আইটি কমিটির চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ এন করিম, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের আতিক-ই-রাব্বানী, ব্যান্ডশিল্পী মাকসুদুল হক, বেসিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, টাই ঢাকার সহ-সভাপতি ফারজানা চৌধুরী, বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর, বাক্যর মহাসচিব তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোটার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ) সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব, বাংলাদেশ জুনিয়র চেম্বার অব কমার্স (জেসিআই) এর প্রাক্তণ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, কনটেন্ট প্রোভাইডার অ্যান্ড অ্যাগ্রিগেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সিপিএএবি) সভাপতি এ টি এম মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ কপিরাইট অ্যান্ড আইপি ফোরামের প্রধান নির্বাহী ব্যারিস্টার এ বি এম হামিদুল মিসবাহ্ প্রমুখ।
বাফকমের আহ্বায়ক ও বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স ফর ফেয়ার কম্পিটিশন (বাফকম) এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে বেসিস, এফবিসিসিআই, ডিসিসিআই, এমসিসিআই, জেসিআই, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন, ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন, ই-ক্যাব, বাক্য, আইএসপিএবি, বাংলাদেশ কপিরাইট ও আইপি ফোরাম, বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরাম ও মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশসহ অন্যান্য অ্যাসোসিয়েশন ও ফোরামগুলো। এই ফোরামের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে সকল খাতে বৈষম্যহীন উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা। দেশে টেলিকম অপারেটরের মতো অন্যান্যরাও একচেটিয়া ব্যবসা করার প্রচেষ্ঠা চালাচ্ছে। এই ধরনের একচেটিয়াত্ব আমাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্ম ও বিকাশের অন্তরায়। আমরা সেই একচেটিয়াত্ব চাইনা। এসব প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে প্রয়োজন যথাযথ আইন, নীতিমালা ও সংশ্লিষ্টদের সচেতনতা। সেসব লক্ষ্য নিয়েই কাজ করবে বাফকম। শুধু টেলিকম বা আইটি খাত নয়, দেশের সকল খাতে সুষ্ঠু বাজার নিশ্চিত করতেই কাজ করা হবে। বিভিন্ন খাতের বাজারে যাতে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা বিদ্যমান থাকে তার জন্য কম্পিটিশন অ্যাক্ট ২০১২ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা থাকবে। প্রয়োজনে সরকারের সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত আমরা যাবো। কারণ বিদেশিদের প্রভাবে আমাদের দেশের উদ্যোক্তাদের ধ্বংস মেনে নেওয়া যাবে না।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর টেলিকম ও আইটি কমিটির আহ্বায়ক এবং এসসিসিআই এর আইটি কমিটির চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ এন করিম বলেন, দেশের এখন বিভিন্ন খাতের ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করার জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রয়াস। গুটিকয়েক গোষ্ঠি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে আমরা থমকে যেতে চাই না। মনোপলি ভেঙ্গে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা তৈরিতে সবাইকে কাজ করতে হবে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি আতিক-ই-রাব্বানী বলেন, দেশের অর্থনীতিকে সুষ্ঠুভাবে সচল রাখতে ও দেশীয় উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে আমাদেরকে আগে এসএমই প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর রাখতে হবে। সরকারের উচিত বিদেশি বড় প্রতিষ্ঠানকে আরও বড় না করে বরং এসব এসএমই প্রতিষ্ঠান কিভাবে টিকে থাকতে পারে তার ব্যবস্থা করা।
ব্যান্ডশিল্পী মাকসুদুল হক বলেন, আমরা সব খাতের লোকজনই টেলিকমের কাছে বন্দি হয়ে গেছি। গ্রামীণফোনসহ অন্যান্য অপারেটরগুলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন মহল পর্যন্ত কৌশলে নিজেদের আয়ত্বে নিয়েছে। শিল্পীরা তাদের নিজের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ করতে পারছেন না এসব অপারেটরের কারণে। অনুমতি ছাড়াই গান, মুভি বা কনটেন্ট প্রকাশ করে ব্যবসা করছে এসব কথিত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। আমরা টেলিকমসহ মেধাস্বত্ব বিকিয়ে দেয়া কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি হ্রাস করা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ, ইন্টারনেট নিরপেক্ষতা, অবাধ, ন্যায়সঙ্গত ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, পাইরেসি বন্ধ, দেশীয় উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা, উদ্ভাবনী পণ্য ও সেবাসমূহের সুযোগ সৃষ্টি করা এবং এই খাতে নতুন বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সূচকসমূহ অর্জনের মাধ্যমে রুপকল্প ২০২১ এবং জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি বিনির্মানে অবদান রাখাই হবে এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।