বৃহস্পতিবার ● ৮ মার্চ ২০১২
প্রথম পাতা » @নারী » তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে
তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে
একটি বিশেষ দিবস, তার পেছনে থাকে অনেক ঘটনা অনেক ইতিহাস। তেমনি ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস এর পিছনেও রয়েছে অধিকার আদায়ের সংগ্রাম ও ইতিহাস। আজ যে মেয়েটি সুস’-সুন্দর কাজের পরিবেশে কাজ করে তাঁর শ্রমের সঠিক মজুরি পাচ্ছে, যে কর্মজীবী নারীটি ভোগ করছেন প্রসবকালীন ছুটি, তাঁদের এই অর্জনের পেছনে আছে যেমন তাঁর যোগ্যতা ও ক্ষমতা, তেমনি আছে ৮ মার্চের ইতিহাস।
১৮৫৭ সালে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইর্য়কে আন্দোলনে নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে দমন-পীড়ন। ১৯০৮ সালে নিউইর্য়কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন-র্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ এবং জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স’পতিদের একজন। এরপর ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন-র্জাতিক নারী সম্মেলন। এ সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি যোগ দিলেন। ক্লারা প্রস-াব দিলেন ৮ মার্চকে আন-র্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার জন্য। সিদ্ধান- হলো, ১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। তবে দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা।
১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে লাগল আন-র্জাতিক নারী দিবস । বাংলাদেশেও স্বাধীনতার আগে থেকেই এই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। এরপর ১৯৭৫ সালে আন-র্জাতিক স্বীকৃতি পায় দিবসটি এবং তা পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এখন পৃথিবীজুড়েই পালিত হচ্ছে দিবসটি কিন’ সেই যে মজুরিবৈষম্য, কাজের মানবিক পরিবেশের জন্য লড়াই, তা কিন’ থেমে নেই।
প্রতিবছর জাতিসংঘ থেকে আন-র্জাতিক নারী দিবসের মূল একটি ভাবনা থাকে। এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় কানেক্টিং গার্লস টু ইনস্পায়ারিং ফিউচার, প্রিয় পাঠক, আমরা বাংলাদেশে আইসিটি সেক্টরে সফল নারীদের একটি অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনে দেখতে চেয়েছি আসল চিত্রটি। নিঃসন্দেহে আইসিটিতে কম হলেও মেয়েদের অংশগ্রহণ বেড়ে চলছে। আমাদের মেয়েরা তাঁদের মেধায় ও যোগ্যতায় নিজেদেরকে আইসিটি সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। তাঁদের অধ্যয়ন-জীবন আর স্বপ্নের কথা জানতে চেয়েছি আমরা।
আমাদের দেশের নারীরা এখন সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে পা বাড়িয়েছে কর্মক্ষেত্রে এবং তারা তাদের মেধার পরিচয় দিয়েছেন পরীক্ষায় ভালো ফলাফল, পেশায়, ব্যবসায় এবং সামাজিক কর্মকান্ডে। পোশাক শিল্পে, ক্ষুদ্র ঋণ, ব্যাংকি, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষকতা, গবেষণা, টেলিকম সহ তথ্যপ্রযুক্তির অন্যান্যখাতে নারীরা তাদের যোগ্য অবদানরেখেছে, তবে অন্যান্য পেশার তুলনায় তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ তুলনামূলক হারে কম। এ চিত্র সারাবিশ্বেই। আমাদের দেশে মোট কর্মসংস’ানে মাত্র ৪% তথ্যপ্রযুক্তিতে। এই ৪% এর মধ্যে নারীর অংশগ্রহণ একেবারেই কম নয়। আমেরিকায় ২০০৯ এর এক জরিপে দেখা গেছে তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ যতসামান্য। সে হিসাবে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে আমাদের অবস’ান বেশ ভালো। তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। মেয়েকে ডাক্তারী না পড়িয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং না পড়ানোর প্রবনতা এখন অনেকটাই কমে গেছে। আর এই পরিবর্তন ঘটেছে নারীদের যোগ্যতা প্রমানের মাধ্যমেই।