শনিবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » আইসিটি শিল্প ও বানিজ্য » টেলিকম কোম্পানির আগ্রাসন থেকে দেশীয় ই-কমার্স রক্ষার দাবি
টেলিকম কোম্পানির আগ্রাসন থেকে দেশীয় ই-কমার্স রক্ষার দাবি
দেশের সম্ভাবনাময় ই-কমার্স খাতের উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ ও সম্মিলিতভাবে খাতটিকে এগিয়ে নিতে এখনই টেলিকম কোম্পানির আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। শনিবার বেসিস মিলনায়তনে বেসিস ও বেসিস ই-কমার্স অ্যালায়েন্স আয়োজিত ‘দেশীয় ই-কমার্স শিল্পের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা : নেট নিউট্রালিটি ও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এমন দাবি জানান তারা।
বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান, পরিচালক উত্তম কুমার পাল, মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, বেসিসের ডিজিটাল কমার্স সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দা কামরুন আহমেদ, আজকের ডিলের পরিচালক ও বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর, ব্যারিস্টার ইন ল’ এবিএম হামিদুল মিসবাহ, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মাদ কামাল, বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক আলী কামরান আল জাহিদসহ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের স্টেকহোল্ডার, জাতীয় গণমাধ্যম ও সরকারের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিরা।বৈঠকে বক্তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ই-কমার্সের বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ ৩৫০ কোটি টাকা। ই-কমার্স কোম্পানিসহ এই খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন ধরণের ৫ হাজার উদ্যোক্তা রয়েছে, যাদের অধিকাংশই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। এছাড়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই খাতে ৩ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে দেশের খুচরা বাজারগুলোর ২ থেকে ৩ শতাংশ অনলাইনে আনা সম্ভব হলে অনলাইন বাজারের পরিমান দাড়াবে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। যেখানে অন্তত ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
অথচ দু:খের বিষয় এই যে, সম্ভাবনাময় এই খাতে ইতোমধ্যেই বড় বড় বিদেশি কোম্পানি বিশেষ করে টেলিকম অপারেটরদের সক্রিয় অংশগ্রহণ শুরু হয়েছে। তারা টেলিকম সেবাদানের অনুমোদন পেলেও এই খাতে ব্যবসা শুরু করছে, যা দেশের তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য হুমকিস্বরুপ। কারণ এসব কোম্পানির অবৈধভাবে অত্যধিক বিনিয়োগের ফলে বাজারে একটি অসম প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে। তারা নিজেদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সম্ভাব্য ভোক্তাদের বিনামূল্যে সাইট ভিজিট করতে দিচ্ছে। এছাড়া লোভনীয় নানা অফারতো থাকছেই। তাদের কাছে দেশীয় কোম্পানিগুলোর টিকে থাকা দায় হবে। কারণ তারা এ ধরণের সেবা দিতে পারছে না।
বক্তারা আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমনকি পার্শ্ববতী দেশ ভারতে এ ধরণের সুযোগ নেই। কোনো টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া, বিদেশী ই-কমার্স সাইটগুলো দেশীয় পণ্য বিক্রি করতে পারবে না এমন নানা উদাহরণ রয়েছে। যথাযথ গাইডলাইন না থাকার কারণে টেলিকম অপারেটররা সরাসরি বিনিয়োগ করে বাজারকে অস্থির করে তুলছে। দেশের উদ্যোক্তাদের রক্ষা করতে ও সম্ভাবনাময় খাতকে টিকিয়ে রাখতে যথাযথ আইন বা নীতিমালা করে টেলিকম কোম্পানিকে দেশের ই-কমার্স বাজারে প্রবেশে প্রতিহত করতে হবে। এছাড়া কেউ বিনিয়োগে আগ্রহী হলে দেশীয় কোম্পানির সাথে অন্তত ৫০ শতাংশ শেয়ারে কাজ করতে পারবে।
গোলটেবিল বৈঠক থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালা ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি), সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারি দফতরগুলোতে বৈঠকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হবে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে খসড়া নীতিমালা প্রদান করা হবে বলেও বেসিস ও বেসিস ই-কমার্স অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়।