সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
সোমবার ● ২ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » বিশেষ সাক্ষাৎকার » ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে, প্রান্তিক ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে চাই- প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ
প্রথম পাতা » বিশেষ সাক্ষাৎকার » ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে, প্রান্তিক ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে চাই- প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ
১৯৮৪ বার পঠিত
সোমবার ● ২ মে ২০১৬
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে, প্রান্তিক ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে চাই- প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ

---

প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ দেশের একজন বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। তিনি বর্তমানে ডা: সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ। এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন- বিএমএ’র যুগ্ম মহাসচিব এবং স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর এর জনপ্রিয় ও সংগ্রামী মহাসচিব।

তিনি পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি সততা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে চিকিৎসকদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তরুণ চিকিৎসকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রতিশ্রুতিশীল একজন চিকিৎসক নেতা হিসেবে সমাদৃত।

স্কুল ও কলেজ জীবন পেরিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নের সময় প্রত্যক্ষভাবে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। মেডিকেল কলেজে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ময়মনসিংহ জেলায় ছাত্র নেতৃত্ব দেন।

জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে ৯০’র স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ময়মনসিংহ জেলায় সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেন।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ে সফলতা অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ অনেক সম্মাননায় ভূষিত হন।

ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী ও চৌকস ছাত্র ছিলেন। শৈশব কাটে ময়মনসিংহ সদরের ৬নং চরঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নের চর বড়বিলা গ্রামে।
জন্মগ্রহণ করেন ১৯৬০ সালের ১৩ মে। তাঁর পিতার নাম মোঃ হাসান আলী। তিনি ১৯৮৫ সালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। তিনি ১৯৮২ সালে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৮৩ সালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, ১৯৮৪ সালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, ১৯৮৫ সালে বিএমএ ময়মনসিংহ শাখার সেন্ট্রাল কাউন্সিলর, ১৯৮৯ সালে বিএমএ নেত্রকোনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৩ সালে স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ১৯৯৫ সালে হোস্টেল ওয়েলফেয়ার কমিটি, আইপিজিএম এ্যান্ড আর’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৬ সালে বিএমএ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ও বিএমএ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, ২০০২ সালে স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, ২০০৩ সালে স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, ২০০৯ সালে বিএমএ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে তিনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। তারপর তিনি রাজধানীর মগবাজারের ডাঃ সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজে ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি এই মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর ২০১২ সাল থেকে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো বিএমএ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ছিলেন।
সম্প্রতি এই কৃতী চিকিৎসক নেতার মুখোমুখি হলে তিনি আইসিটি নিউজকে দেশের স্বাস্থ্য সেবার ওপর একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার প্রদান করেন।

আইসিটি নিউজ : প্রতিটি মানুষের সফলতার পেছনে কারো না কারোর অনুপ্রেড়না থাকে। আজকের এই অবস্থানে উঠে আসার পেছনে আপনার সবচেয়ে কার কথা মনে পড়ে?

প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ: আমার বাবার, আমি মনে করি যেকোন মানুষের একটা দৃঢ় প্রত্যয় এবং ভিশন থাকা উচিত, ছাত্র জীবন থেকেই আমার দৃঢ় চেতনা ছিল আমি একটা লক্ষ্যে যাবো আর আজকের এই অবস্থানে উঠে আসার পেছনে আমার বাবার অনুপ্রেড়না বেশী কাজ করছে।
আইসিটি নিউজ :  কী স্বপ্ন আপনি দেখেন, কতদূর যেতে চান?

প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ:   দেখুন পেশাগত, রাজ‌নৈ‌তিক, সামা‌জিকভা‌বে অামার কিছু ক‌মিট‌মেন্ট রয়ে‌ছে। পেশাগত ভা‌বে বল‌তে গেলে সাধারন মানু‌ষের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন, এ‌ক্ষে‌ত্রে অামার এলাকায় গ‌রীব‌দের স্বাস্থ্য সেবা দি‌য়ে থাকি,গরীব‌দের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ ক‌রে থা‌কি, সমা‌জের উন্নয়‌নে বি‌ভিন্ন পদ‌ক্ষেপ গ্রহন ক‌রে‌ছি। অাবার ভা‌লো ডাক্তার গঠন করাও অামার একটা ক‌মিট‌মেন্ট র‌য়ে‌ছে, সা‌থে সা‌থে ডাক্তার‌দের কিছু সমস্যা, বৈষম্য দূর করারও একটা ক‌মিট‌মেন্ট র‌য়ে‌ছে।

অাস‌লে স্বাস্থ্য হ‌লো মানু‌ষের ‌মৌ‌লিক অ‌ধিকা‌রের ম‌ধ্যে অন্যতম। বর্তমান সরকার এই স্বাস্থ্য সেক্ট‌রের সমস্যা নিরুপন ক‌রে‌ এর সমাধান ও সেবার মান উন্নয়ন ক‌রে যা‌চ্ছে, ঠিক অা‌মি এই জায়গাটা‌তে কিছু অবদান রাখ‌তে চাই। যেন চিকিৎসক, চিকিৎসা সেবা এবং রোগী সর্বপ‌রি জনগন একটা তৃ‌প্তির জায়গায় থাকে।

---

আইসিটি নিউজ :  বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে রাজনীতি, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এগুলোর মধ্যে কোন সেক্টরটি দিয়ে এ দেশের ডেভেলপমেন্ট জোরালোভাবে আনা যায় বলে মনে করেন?

প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ:  অাস‌লে অাপনি য‌দি জনগ‌ণের ভাগ্য উন্নয়ন কর‌তে চান তাহ‌লে রাজ‌নৈ‌তিক একটা ক‌মিট‌মেন্ট থাক‌তে হ‌বে এবং তা বাস্তবায়ন কর‌তে হ‌বে। উদাহরনটা অা‌মি প‌রিস্কারভা‌বে দি‌তে পা‌রি। দে‌খেন বর্তমা‌ন প্রধানম‌ন্ত্রী জন‌নে‌ত্রী শেখ হা‌সিনার নেতৃ‌ত্বে দেশ যেভা‌বে উন্ন‌তির দি‌কে এ‌গি‌য়ে যা‌চ্ছে এর একমাত্র কারন দেশ ও জনগ‌নের প্র‌তি তাঁর অাদির্শক ও রাজনৈ‌তিক ক‌মিট‌মেন্ট এবং বাস্তবায়ন। সুতারাং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পরিকল্পিত রাজনীতি দিয়েই এ দেশের ডেভেলপমেন্ট জোরালোভাবে আনা যায় বলে মনে করি।
আইসিটি নিউজ :  দেশে প্রায় লোকের অভিযোগ, সরকারী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার মান ভালোনা আর বেসরকারী হাসপাতালগুলোতে সার্ভিস চার্জ বেশি। ডাক্তারদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা বেশি। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ:  দেখুন, যে অভিযোগটা সাধারন মানুষ করে যে সরকারী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার মান ভালোনা আর বেসরকারী হাসপাতালগুলোতে সার্ভিস চার্জ বেশি। অাপনি পাশ্ববর্তী‌ দেশ ভার‌তের সরকারি হাসপাতা‌লের সেবার মান দেখুন, সেখান থে‌কে অামা‌দের দে‌শের স্বাস্থ্য সেবার মান অ‌নেক অ‌নেক গুন ভা‌লো। দে‌শের সরকা‌রি হাসপাতাল গু‌লো‌তে চি‌কিৎসা সরঞ্জাম র‌য়ে‌ছে, রোগী‌দের ঔষধ ফ্রি‌ দেওয়া হয়, এখন অ‌নেক পরীক্ষাও সরকারি হাসপাতা‌লে ফ্রি‌তে করা হয়। সরকারী হাসপাতাল ও মেডি‌কেল ক‌লেজগুলোতে কি পর‌মিান উন্নত চি‌কিৎসা দেওয়া হয় তার একটা উদাহরন দিত‌ে পার‌ি; কার্ড‌িয়াক সার্জা‌রি, হার্টের য‌ে বাইপাস সার্জা‌রি পাশ্ববর্ত‌ী দে‌শের চে‌য়ে অমা‌দের দে‌শের মান অ‌নেক উন্নত এবং অান্তর্জা‌তিক মা‌নের । এখন অার বাইপাস সার্জা‌রির জন্য ইন্ড‌িয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এ যাওয়া লা‌গেনা। এই যে বলেন ব‌ি‌দে‌শের চি‌কিৎসা ভা‌লো কোন হাসপাতালগু‌লো‌তে ভা‌লো বলত‌ে পারেন, সবই বেসরকা‌রি হাসপাতা‌লে। অার যে বল‌লেন অমা‌দের দে‌শের বেসরকা‌রি হাসপাতা‌লের চার্জ বেশ‌ি, তা কোন অবস্থাতেই বিদেশী হাসপাতা‌ল থেকে বেশী না।

ধীরে ধীরে সাধারন মানুষের দৃ‌ষ্টি ভ‌ঙ্গি পর‌বির্তন কর‌তে হ‌বে। রোগী এবং এ্যাটেনডেন্টদের সচেতনতা বাড়বে। ছোট ছোট প্রতারণামূলক ক্লিনিকগুলো বন্ধ করতে হবে। দালাল শ্রেণীর লোকদের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। সাধারণ লোকজন দালাল বা এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারদের কথায় কনভিন্সড হওয়া যাবেনা।

---

আইসিটি নিউজ :  দীর্ঘদিন যাবৎ আপনি স্বাস্থ্য সেক্টরের সাথে জড়িত। অাওয়া‌মীলীগ সরকার স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ কি কি ভূমিকা রেখেছে?

প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ:   ১৯৯৬ সা‌লে যখন অাওয়া‌মীলীগ সরকার ক্ষমতায় অাস‌লো তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকা‌রি হাসপাতালগু‌লো‌কে উন্নয়‌নের পাশাপা‌শি বেসরকা‌রী হাসপাতাল গঠনের সুয‌োগ সৃ‌ষ্টি ক‌রে দি‌লেন এবং কিছু কিছু চি‌কিৎসা সরঞ্জা‌মের উপর ট্যাক্স ফ্র‌ি ক‌রে দি‌লেন, এ‌তে স্বাস্থ্য সেক্ট‌রে একটা বিপ্লব সৃ‌ষ্টি হ‌লো। এখন ল্যাপা‌রোস্ক‌পি সার্জা‌রি, চক্ষু বিজ্ঞা‌নে ফেক‌ো সার্জা‌রি এ‌গি‌য়ে। তখনই বঙ্গবন্ধু ‌শেখ মু‌জিব মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ বিশ্ববিদ্যালয় না‌মে অান্তজার্তিক মা‌নের এক‌টি ম‌ে‌ডি‌কেল বিশ্ব‌বিদ্যালয় প্র‌তিষ্ঠা করা হয়।

এছাড়া, প্র‌তি‌টি ব‌েসরকার‌ি মেড‌ি‌কেল ক‌লেজ ও হাসপাতা‌লে ১০% গ‌রীব রোগীর কোটা সরকার নির্ধারন ক‌রে দি‌য়ে‌ছে যেখানে গ‌রীব রো‌গীরা বিনামূূল্যে চি‌কিৎসা সেবা পা‌বে। এখন বাহি‌রের দেশগুলো অামা‌দের রোল ফ‌লো কর‌ছে।

এর আগে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সা‌লে বঙ্গবন্ধুর ন‌েতৃত্বে প্রথম যে পঞ্চবার্ষ‌িকী প‌রিকল্পনা করা হয় , সেখা‌নে অ‌নেক গু‌লো স্টেপ নেওয়া হ‌য়ে‌ছিল স্বাস্থ্য সেক্ট‌রে। প্রথমত চি‌কিৎসকরা দ্বি‌তীয় শ্রেনীর কর্মকর্তা ছিল এ‌দেরকে প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা করা হ‌লো। স্বাস্থ্য‌সেবা‌কে সাধারন মানু‌ষের দোর‌গোঁড়ায় নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য কম‌প্লেক্স প্র‌তিষ্ঠা কর‌া হলো। ‌মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ থ‌ে‌কে পাশ করার সা‌থে সা‌থে ডাক্তারদের সরকারী চাকরীর সু‌যোগ কর‌ে দেওয়া হলো। তখনই নিপসম, বি‌সি‌পিএস গঠন করা হয়।

দুঃখজনক ভাব‌ে ১৯৭৫ সা‌লে বাংলা‌দে‌শ কলং‌কিত হ‌লো, অমা‌দের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু‌ ও তার প‌রিবার‌কে নৃশংস্যভা‌বে হত্যা ক‌রে বাংলা‌দে‌শের উন্নয়‌নের ধারা থা‌মিয়ে দিল। এর পর দীর্ঘ ২১ বছর স্বাস্থ্যখা‌তে তেমন কোন উন্ন‌তি হয়‌নি।

২০০৯ সা‌লে অাবার ক্ষমতায় এ‌সে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১২ হাজার নতুন চি‌কিৎসক নি‌য়োগ দি‌য়ে স্বাস্থ্যখা‌তে জনবল বৃ‌দ্ধি ক‌রে‌ছে। প্রত‌ষ্ঠিা ক‌রে‌ছে অ‌নেক হাসপাতাল সহ বি‌শেষা‌য়িত হাসপাতাল।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য বিভাগ অন্যান্য মন্ত্রণালয় থেকে অনেক এগিয়ে আছে। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয় একটি ডিজিটাল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে।

---

আইসিটি নিউজ : চিকিৎসকদের তিনটি সংগঠন স্বাচিপ, ড্যাব, বিএমএ। এই সংগঠনগুলো সম্পর্কে জানতে চাই।

প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ: বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) দেশের ৬০ হাজার চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন। এটি আমাদের দেশের সব চাইতে বড় পেশাজীবী সংগঠন । স্বাধীনতা যুদ্ধে এই পেশার যতোগুলো মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, অন্য কোনো পেশায় তা দেখা যায়নি। এটি দলমত নির্বিশেষে সকল চিকিৎসকের একমাত্র নিরপেক্ষ সংগঠন; যা চিকিৎসকদের ন্যায্য দাবি নিয়ে কথা বলে, সমসাময়িক চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতি, এবং জনসাধারণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। এ ছাড়াও জাতীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক ইস্যুগুলোতেও বিএমএ সবসময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকে। এই সংগঠনের উল্লেখযোগ্য অর্জন গুলোর মধ্যে রয়েছে- ৫২’র ভাষা আন্দোলন, শহীদ মিনার নির্মাণ, স্বধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ড. মিলনের রক্ত, গণবিরোধী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নের প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তোলা।

স্বাচিপ ও ড্যাব এ দু’টি সংগঠন রাজনৈতিক আদর্শের উপর ভিত্তি করেই চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠন। স্বাচিপ হলো স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, স্বাধীনতার স্বপক্ষের চিকিৎসকদের সংগঠন। এদের আদর্শ বঙ্গবন্ধুর দর্শন ধর্মনিরপেক্ষতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। ড্যাব হলো ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনস অব বাংলাদেশ, এটি বাংলাদেশ জতীয়তাবাদে বিশ্বাসী চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন।
আইসিটি নিউজ :  বর্তমানে আপনি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাচিপ এর মহাসচিব,আপনার প্রতি সকল মানুষের যে প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে তা পূরনের জন্য আপনি কতটুকু প্রস্তুত?

প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ:  দেখুন, বর্তমান সরকারের সময়ে স্বাস্থ্য খাতের অনেক অর্জন হয়েছে । এর মধ্যে- এমডিজি ৪ পুরস্কার, সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড, শিশু মৃত্যুহার ও মাতৃ মৃত্যুহার, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, সফল ভেকসিনেশন প্রোগ্রাম, কমিউনিটি ক্লিনিক ইত্যাদি। এই অর্জন গুলোর সাথে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, স্বাস্থ্য সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবদান উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে আমাদের চিকিৎসকদের মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিয়ে চিকিৎসকরা উদ্বিগ্ন। চিকিৎসকদের এই স্পর্শকাতর জায়গায় নিয়ে কাজ করছি।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতার স্বপক্ষের সকল চিকিৎসকদের নিয়ে আগামীর পথে এগিয়ে যেতে চাই। সাধারণ দুঃখী মানুষের কাছে সেবা পৌঁছাতে চাই, ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রান্তিক ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে সকল চিকিৎসক সমাজকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চাই।

আইসিটি নিউজ :  ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিএমএ কতটুকু ভূমিকা রেখেছে, বলবেন কী?

প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ:  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য বিভাগ অন্যান্য মন্ত্রণালয় থেকে অনেক এগিয়ে আছে। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয় একটি ডিজিটাল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে।

টেলিমেডিসিন ও মোবাইলের মাধ্যমে একজন রোগী বিনামূল্যে সেবা পাচ্ছে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে একজন গরীব রোগী বিনামূল্যে উচ্চতর চিকিৎসা সেবা বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারছেন। এছাড়াও সরকারের গৃহীত সব উদ্যোগ ও স্বাস্থ্যসেবা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে বিএমএ সর্বাধিক সহযোগিতা করে আসছে। হাসপাতালগুলোও অটোমেশনের আওতায় পর্যায়ক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ ভিশনে ডিজিটাল সমাজ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য খাতকে আমরা ডিজিটালকরণ করার ব্যাপারে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। তাতে বিএমএ নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। হেলথ ইনফরমেশন সিস্টেম এর আওতায় সব হাসপাতাল ( বিশেষায়িত, টারসিয়ারি, জেলা সদর উপজেলা, ইফেকশাস ডিজিজ, টিবি, লেপ্রোসি ক্লিনিক, আরবান ডিসপেনসারি, স্কুলহেলথ ইত্যাদি), হেলথ কমিউনিটি ক্লিনিককে একটি নেটওয়ার্কের ভেতরে নিয়ে আসা হয়েছে; এর মধ্যে- Health facility information, Health facility Utilization, Morbidity, Profile, Mortalitu profile, Emergenvcy obstetric care profile, Health personal information, logistic information, monthly annual reporting, Population information, Data, Publication ব্যতীতও অনেক অবাধ তথ্য এবং তথ্য যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। আমি মনে করি, যা যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

এছাড়া ই-হেলথ এর মাধ্যমে ইন্টারনেট কানেকশনের আওতায় মোট ৮শ’টি পয়েন্টে উপজেলা লেভেল পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকও এই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে।

আইসিটি নিউজ :  জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেছেন?

প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ: তিনি আজ শুধু বাংলাদেশেরই নেত্রীই নন। তিনি আজ নেতৃত্ব দিয়ে সাউথ এশিয়াসহ সমগ্র বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তিনি রোল মডেল। আজ বিশ্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। সকল সূচক আজ ঊর্ধ্বগতি, খাদ্য, নিরাপত্তা, ডিজিটাল, পরিবেশ, অটিজম, নারীর ক্ষমতায়নে, মাথাপিছু আয়, অর্থনীতিতে অগ্রগতি, স্বাস্থ্যসূচকে ঈর্ষাণীয় সাফল্য, ওবামার উক্তি Look Bangladesh, Look SK Hasina, Lancent পত্রিকায় বারবার বাংলাদেশ, জাতিসংঘে বাংলাদেশ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থায় (WHO) বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড এ বাংলাদেশ, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের অর্জন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল ভিশন বাস্তবায়ন, চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ, আইসিটি অ্যাওয়ার্ড, সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড, এমডিজি ৪ সহ বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। মমতাময়ী মা জননেত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। জঙ্গী দমন, গণতন্ত্র, খাদ্য উন্নয়ন, কৃষি উন্নয়ন, শিক্ষা উন্নয়ন, স্বাস্থ্য উন্নয়নে বাংলাদেশ আজ নেতৃত্ব দিবে বিশ্বকে। আমরা নিরাপদ গতিশীল এই নেতৃত্বে চিকিৎসক সমাজ ঐক্যবদ্ধ। জননেত্রীর অগ্রযাত্রায় চিকিৎসক সমাজ সব সময় জননেত্রীর দুর্দিনে পাশে ছিলো, সুদিনেও পাশে আছে। আগামী দিনে পাশে থাকার অঙ্গীকার করে আগামীর পথে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশে আমরাও শরিক হয়েছি এবং উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সারথী হতে চাই। নেত্রী আমরা আপনার পাশে আছি, থাকবো। আমাদের ঠিকানা হোক আদর স্নেহের ভরসাস্থল জননেত্রী হাসিনা।

আইসিটি নিউজ :  আপনার জীবনের প্রিয় ব্যক্তিত্ব?

প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ:  প্রিয় ব্যক্তির কথা বলতে গেলে, আমার বাবা তাঁর কাছ থেকে আমি যতটুকু শিখতে পেরেছি সেটাকে আমি আমার বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে চাই।
আইসিটি নিউজ :  আপনার ভবিষ্যতের কোন স্বপ্নটিকে লালন করে আপনি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন?
প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ:  এই হেলথ সেক্টরে কাজ করে আমি সেই জায়গাটাতে যেতে চাই, যেখানে একদিন বাংলাদেশের মানুষ বিদেশে না গিয়ে বাংলাদেশ থেকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাবেন। বর্তমানে বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা খাত নিয়ে নানা তর্ক-বিতর্ক আছে। এসব সমাধান করার জন্য কাজ প্রত্যেককে করতে হবে। একটি প্রশ্ন উঠে আসে যে, বেসরকারি স্বাস্থ্য খাত কী করছে? আসলে কী বেসরকারি খাতের স্বাস্থ্য সেবায় কোনো অবদান নেই? ভেবে দেখুন তো- বেসরকারি খাতের ভূমিকা ছাড়া স্বাস্থ্য সেবা খাত ১২ বছরে বর্তমানে এই অবস্থানে কী আসতে পারতো ? জানি এই খাতে অনেক Communication Gap আছে। অনেক ভুল বোঝা-বুঝি আছে। কিছু খারাপ লোকজনও আছে। কিছু খারাপ প্র্যাকটিস আছে। তবে এটা সামান্য। আর এ ধরনের নেগেটিভ বিষয় সব সেক্টরেই আছে। অন্ন, বস্ত্রের পরেই চিকিৎসার স্থান। ব্যক্তি যদি সুস্থ না থাকে তাহলে সে দেশকে কিছুই দিতে পারবে না। উল্টো দেশের কাছ থেকে তাকে নিতে হবে। মানুষের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য অনেক কাজ করার বিষয় রয়েছে। আমি খুব সাধারণ স্বপ্ন দেখি, বাংলাদেশের জনগণ একদিন চমৎকার সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী হবে। স্বাস্থ্য নিয়ে বাঁচবে, দীর্ঘায়ু হবে। আর প্রয়োজনে মানুষ ঘরে বসে সুচিকিৎসা পাবেন।
আইসিটি নিউজ : আপনার প্রিয় বন্ধু?
প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ:  প্রিয় বন্ধু হিসেবে এই মুহূর্তে তিন জনের নাম চলে আসে। আমার দুই মেয়ে আর আমার স্ত্রী। আমার খুব ভালো বন্ধু ওরা।

আইসিটি নিউজ : আগামী প্রজন্মের উদ্দেশে আপনার বক্তব্য কী?
প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ: ‘ভালো মানুষ হয়ে ওঠো’। একজন ভালো মানুষ পৃথিবীকে অনেক কিছু দিতে পারে। আর তোমরা যে আধুনিক সুযোগ সুবিধা পাচ্ছো তা কাজে লাগিয়ে উন্নত প্রযুক্তিময় বাংলাদেশ গড়ে তোলো।
আইসিটি নিউজ : কেমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন?
প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ: বাংলাদেশ এক দিন পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় একটি দেশে রূপান্তরিত হবে।
আইসিটি নিউজ :  এক্ষেত্রে আমাদের চলার পথ কেমন হওয়া উচিত?
প্রফেসর ডাঃ এম এ আজিজ: ব্যক্তি স্বার্থ যেন দেশের স্বার্থের উপরে উঠে না যায়; সেটি মাথায় রেখে কাজ করা উচিত।



বিশেষ সাক্ষাৎকার এর আরও খবর

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
মেয়াদপূর্তির আগেই নির্বাচনে যাচ্ছে আইএসপিএবি
ভিভো এক্স২০০ ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনে থাকছে জাইস টেলিফটো প্রযুক্তি
ছোটদের বিজ্ঞান গবেষণায় চিলড্রেন রিসার্চ ফান্ড
ফিলিপাইনের ডিজিটালাইজেশনে কাজ করছে অরেঞ্জবিডি
সাইবার সুরক্ষায় রবি ও সিসিএএফ’র যৌথ উদ্যোগ
ঢাকা কলেজে প্রযুক্তিপন্যের প্রদর্শনী করল স্মার্ট
দারাজের ১.১ নিউইয়ার মেগা সেল ক্যাম্পেইন
পুরানো ল্যাপটপে ৫০ দিনের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ইংরেজি শিক্ষার সহযোগী এআই টুল ‘ইংলিশ মেট’
এআই এর প্রসার বাড়াতে গ্লোবাল অ্যালায়েন্সে যোগ দিল ক্যাসপারস্কি