মঙ্গলবার ● ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » ফ্রি বাংলা ওসিআর ও ই-পাবলিক লাইব্রেরির যাত্রা শুরু
ফ্রি বাংলা ওসিআর ও ই-পাবলিক লাইব্রেরির যাত্রা শুরু
বাংলা ভাষার অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিকগনিশন বা ওসিআর এবং জাতীয় পাবলিক লাইব্রেরির অনলাইন সংস্করণের যাত্রা শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অমর একুশে বইমেলায় অ্যাকসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) ই-তথ্যকেন্দ্র থেকে ফ্রি বাংলা ওসিআর এবং ই-পাবলিক লাইব্রেরির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
পাবলিক লাইব্রেরির অনলাইন সংস্করণের মাধ্যমে এখন অনলাইনেই গ্রন্থাগারে কি বই রয়েছে, এর প্রকাশক ও প্রকাশকাল সম্পর্কিত তথ্যাদি জানা যাবে। এছাড়া নতুন বই, সর্বাধিক পঠিত বই, ই-বুক এবং জনপ্রিয় বইয়ের তালিকা পাওয়া যাবে। এটুআই জানায়, এই উদ্যোগের মাধ্যমে জনগণ সহজেই গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরেরর যাবতীয় সেবা সম্পর্কে জানতে পারবে। এছাড়া এখানে রয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের লাইব্রেরী এবং এর সহযোগি প্রতিষ্ঠানের লিংকসমূহ। এতে স্বত্তাধিকার সংরক্ষণের বাইরে মোট ১১৭৮টি ই-বুক যা অনলাইনে যে কোন পাঠক যে কোন স্থান থেকে পড়তে বা সংরক্ষণ করতে পারবেন ।
এদিকে মেলায় এটুআই-এর স্টল থেকে প্রকাশিত বইয়ের হালনাগাদ তথ্য, বই মেলায় স্টল ম্যাপ, ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরি, বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন ও সেবাকুঞ্জ এবং ফ্রি ওয়াইফাই ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাবে। আর এ সংক্রান্ত আরও তথ্য পাওয়া যাবে http://goo.gl/CQpe32 এই ইভেন্ট পেজে।
ওসিআর প্রকল্পটির মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা এটুআইয়ের ইনোভেশন অ্যাসোসিয়েট মোহাম্মদ নাহিদ আলম জানান, ওসিআরটি যে কেউ বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। ‘অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিকগনিশন’ বা ‘ওসিআর’ সফটওয়্যার দিয়ে হাতে লেখা, টাইপ করা ও ছাপার হরফের লেখাকে যন্ত্রে পাঠযোগ্য লেখায় রূপান্তর করা যাবে।
ওসিআর ছবিতে সংরক্ষিত অক্ষরও চিনতে পারে। এতে ছবির অক্ষরকে স্ক্যান করে অথবা ছবি তুলে টেক্সট ফাইলে পরিবর্তন করা যায়। ওসিআর দিয়ে বাংলা ভাষার নতুন, পুরনো সব প্রকাশনা খুব সহজেই স্থায়ী সংরক্ষণ করা যাবে। ইংরেজিসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় নিখুঁত ওসিআর থাকলেও বাংলায় তা ছিল না।
বই মেলায় উদ্বোধন হলেও আগামী মার্চ মাস থেকে ওসিআরটি ই-ফাইলিংসহ বিভিন্ন কাজে সরকারি কার্যালয়ে ব্যবহার শুরু করতে পারবে বলে ওই কর্মকর্তা জানান। আর চলতি বছরের শেষ নাগাদ জনসাধারণের জন্য এটি উম্মুক্ত করে দেওয়া হবে। নাহিদ জানান, সরকারি ব্যবহারের সময়ে ওসিআরটিকে আরও উন্নত করতে ফাইন টিউনিং করা হবে। জনসাধারণের উম্মুক্ত হওয়ার সময়ে এটি একটি বিশ্বমানের ওসিআর হবে। এ ওসিআর তৈরিতে ২৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানান তিনি।
সরকারি অনুদানের এ প্রকল্পের প্রধান ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাসান সারোয়ার জানান, এটি তৈরিতে প্রায় সাত-আট বছর ধরে প্রচেষ্টা চালিয়েছি আমরা। এটুআইয়ের অনুদান পাওয়ায় এতে গতি আসে।
বর্তমানে এটুআইকে হস্তান্তর করা সফটওয়্যারটি সরকারি পর্যায়ে ব্যবহারের কথা রয়েছে। এরমধ্যে বাস্তবিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন পরে কোনো বাগ থাকলে তা ঠিক করা হলে তা বিশ্বমানের হয়ে উঠবে বলে জানান তিনি। এটির আগে গত বছর আগস্টে টিম ইঞ্জিন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আরেকটি ওসিআর তৈরি করে। তবে সেটি এখনও বাজারে আসেনি। অন্যদিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ওসিআর নিয়ে আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ওসিআরসহ সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যার তৈরি করা হবে।
প্রসঙ্গত, ইউএনডিপি এবং ইউএসএইড এর কারিগরি সহায়তায় এটুআই এ পাবলিক লাইব্রেরির এই ডিজিটাল সংস্করণ বাস্তবায়িত করেছে।