শনিবার ● ৩১ জানুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » আইসিটি পড়াশোনা » দেশের প্রথম আর্মি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার
দেশের প্রথম আর্মি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার
দেশের প্রথম আর্মি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রথম এই বিশ্ববিদ্যালয়টি হবে নীলফামারী জেলাতে। একই জমিতে হাইটেক পার্কও নির্মাণ করা হবে। চলতি অর্থ বছরে এ দু’টি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শুক্রবার বিকালে নীলফামারী সদরের চড়াইখোলা গ্রামে বিটিসিএল-এর ১৫ একর জমি উপর হাইটেক পার্ক ও আর্মি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত ৩২ দশমিক ৯০ একর জমি পরিদর্শনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে যেতে উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োজন। তাই বর্তমান সরকার তথ্য প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় হাইটেক পার্ক বাস্তবায়নে একমত হয়েছেন। এটি বাস্তবায়িত হলে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, কমিউনিকেশন হার্ডওয়্যার, কমিউনিকেশন সফটওয়্যার, আইটি ভিত্তিক সেবা, ডিজাইন অ্যান্ড কনসালটেন্সি, পণ্যের উৎপাদন ও সমাবেশ ঘটানো এবং ইলেকট্রনিক সামগ্রীর নকশা তৈরিতে সহায়ক হবে।
এছাড়া, হাইটেক পার্কের পাশেই আর্মি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবে। এ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশের প্রযুক্তি প্রকৌশলী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এনামুল হক জানান, নীলফামারীর দারোয়ানি টেক্সটাইল মিলের অধীনে ১০৮ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে দারোয়ানি টেক্সটাইল মিলটি রয়েছে ৪০ একর জমির ওপর। বাকি জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় তা অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ একরে হবে হাইটেক পার্ক, ৩২ দশমিক ৯০ একরে হবে আর্মি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ২০ একরে হবে বিজিবি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্প।
জায়গা পরিদর্শনকালে নীলফামারীর জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এনামুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন, বিটিসিএল-এর রংপুর অঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল আজিজ, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেত আলী, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফা সুলতানা লাভলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর অধীনে তিনটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে যাচ্ছে। ‘বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (বিএইউএসটি)’ নামে এ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণও চূড়ান্ত করা হয়েছে। একই নামে এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কুমিল্লা, নীলফামারীর সৈয়দপুর ও নাটোরের সেনানিবাস এলাকায় স্থাপন করা হবে।
এ ব্যাপারে তিনটি পৃথক প্রকল্প প্রস্তাবও জমা দেয়া হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। এগুলোকে এখন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। ইউজিসি এ প্রকল্প প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠাবে। এরপরই অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে আরো কয়েক মাস সময় লাগবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এ দিকে ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে একটি জাতীয় দৈনিকে ওই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভাইস চ্যান্সেলর, রেজিস্টার, ট্রেজারার,পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক,ডেপুটি রেজিস্টার, অ্যাসিসটেন্ট ট্রেজারার, পিএস টু ভিসি এবং সহযোগী অধ্যাপক (টেকনিক্যাল), সহযোগী অধ্যাপক (নন-টেকনিক্যাল), প্রভাষক (টেকনিক্যাল), প্রভাষক (নন-টেকনিক্যাল) পদে প্রথম শ্রেণীর বেসামরিক কর্মকর্তা ও প্রথম শ্রেণীর বেসামরিক শিক্ষক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য ১৬ নভেম্বরের মধ্যে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (বিএইউএসটি)’ নামে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় নীলফামারীর সৈয়দপুর সেনানিবাস, নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাস ও কুমিল্লা সেনানিবাসে প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিএইউএসটির তিনটি পৃথক প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মানসম্পন্ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে এগুলো প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনটি প্রকল্প প্রস্তাবের ভাষা ও এর প্রস্তাবনাগুলো প্রায় একই।
ওই তিনটি এরিয়ার কমান্ডারদের উল্লিখিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডে চেয়ারম্যান হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন তাদেরকেই প্রস্তাবিত তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভিসি হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে।