শুক্রবার ● ৭ নভেম্বর ২০১৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ফেসবুকে খুনির আস্তানা !!
ফেসবুকে খুনির আস্তানা !!
ফেসবুক এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে না, একে কাজে লাগিয়ে দুর্বৃত্তরা নানা অপরাধও করছে। ফেসবুকেই রয়েছে ভয়ংকর সব খুনিদের অ্যাকাউন্ট। সম্প্রতি অপরাধ বিশেষজ্ঞরা ফেসবুক ঘেঁটে ছয় ধরনের খুনির প্রোফাইল শনাক্ত করতে পেরেছেন। অবশ্য এর জন্য তাঁরা সরাসরি ফেসবুককে দোষ দিতে রাজি নন। দ্য গার্ডিয়ানের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা দাবি করেছেন, ফেসবুক কাজে লাগিয়ে অপরাধ ঘটায় এমন ছয় ধরনের খুনিকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট বিশ্লেষণ করে অপরাধী শনাক্ত করার গবেষণা এটাই প্রথম। যাতে তাঁরা দেখেছেন যে, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট অপরাধীর আচরণকে প্রভাবিত করে।
গবেষক এলিজাবেথ ইয়ার্ডলে ও ডেভিড উইলসন ফেসবুক কাজে লাগিয়ে সংঘটিত বিশ্বব্যাপী ৪৮টি খুনের ঘটনা নিয়ে গবেষণা করেন।
গবেষকেরা বলছেন, ফেসবুকে রিঅ্যাক্টর বা প্রতিক্রিয়াদাতা, ইনফর্মার বা তথ্যদাতা, অ্যান্টাগনিস্ট বা বিরোধী, ফ্যানটাসিস্ট বা খামখেয়ালি, প্রিডেটর বা শিকারি ও ইমপস্টার বা ছদ্মবেশী খুনিদের প্রোফাইল রয়েছে।
রিঅ্যাক্টর বা প্রতিক্রিয়াদাতারা সাধারণত সরাসরি আক্রমণ করে বসে। ফেসবুকে কোনো পোস্ট তাকে রাগান্বিত করলে সে সরাসরি হিংস্র প্রতিক্রিয়া দেখায়। ইনফর্মার সাধারণত ফেসবুকের মাধ্যমে অন্যদের কাছে কাউকে হত্যার কথা বলে বেড়ায়। খুন করার ইচ্ছার কথা বা খুনের পর ফেসবুকে খুনি তথ্য প্রকাশ করে বসে। অ্যান্টাগনিস্ট বা বিরোধীকে সরাসরি বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে মনের ক্ষোভ প্রকাশ করতে হয়। খামখেয়ালি বা ফ্যানটাসিস্ট খুনির কাছে কল্পনা ও বাস্তবতার মধ্যকার পার্থক্য দূর করা কঠিন হয়। তারা তাদের খামখেয়ালি বজায় রাখতে খুন করে বসে এবং অন্যরা যাতে তাকে ধরতে না পারে, এ জন্য উদ্ভট তথ্য ফেসবুকে দিতে থাকে। প্রিডেটর বা শিকারি খুনি ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে শিকারকে তার জালে ফাঁসানোর জন্য চেষ্টা করে। ইমপস্টার বা ছদ্মবেশী খুনি ফেসবুকে অন্যের নামে পোস্ট দিয়ে খুনের কথা বলতে পারে। এ ছাড়া খুন হয়ে যাওয়া ব্যক্তিটির ছদ্মবেশে ফেসবুকে পোস্ট চালিয়ে যেতে পারে কিংবা অন্য কেউ ফেসবুকে তার অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে-এমন ছদ্মবেশ নিতে দেখা যায়।
গবেষক ইয়ার্ডলে বলেন, ‘আমি ও আমার সহকর্মীরা মিলে ফেসবুককে কেন্দ্র করে সংঘটিত খুনগুলোর সঙ্গে অন্যান্য হত্যার পার্থক্য আছে কি না তা বের করতে চেয়েছিলাম। সবদিক বিবেচনায় দেখা যায়, হত্যার ক্ষেত্রে খুব বেশি পার্থক্য নেই।’
অবশ্য, এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের জন্য সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোকে দোষ দেওয়ার কোনো কারণ দেখেন না গবেষকেরা।
তাহলে একে ‘ফেসবুক মার্ডার’ বলা হচ্ছে কেন? এ প্রসঙ্গে গবেষক ইয়ার্ডলে বলেন, ‘অপরাধ বিশেষজ্ঞদের কাছে সমসাময়িক হত্যাকাণ্ডগুলোর ক্ষেত্রে ফেসবুক মার্ডার কোনো প্রয়োজনীয় বা ধারণাগত বৈধ শব্দ নয়। সহজাতভাবে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটের খারাপ কিছু নেই। হত্যাকাণ্ডে যেমন ছুরিকে দোষ দেওয়া যায় না, তেমনি এ ক্ষেত্রে ফেসবুককে দোষ দেওয়া চলে না। যারা এ ধরনের টুল ব্যবহার করে, তাদের মনোবৃত্তি এর জন্য দায়ী। আমাদের তাদের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।’ সুত্রঃ ইন্টারনেট