সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০১৪
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » সিলিকন বাংলাদেশ তৈরিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে
সিলিকন বাংলাদেশ তৈরিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে
ডিজিটাল বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ও সিলিকন বাংলাদেশ তৈরি করতে সর্বস্তর থেকে উদ্ভাবনী আইডিয়া তুলে আনতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরির পাশাপাশি তাদের জন্য বিনিয়োগ করতে হবে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগে ঊৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় পলিসি করতে হবে।
শনিবার বিকেলে দৈনিক ইত্তেফাক ও স্টার্টআপ ঢাকা আয়োজিত ‘সিলিকন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি শামীম আহসান। গুগল ইউএসএ এজেন্সি ডেভেলপমেন্ট প্রধান বিকি রাসেল। মূল প্রবন্ধ প্রদর্শন করেন বিগ ডাটা পার্টনারশীপ ইউকের প্রিন্সিপ্যাল কনসালট্যান্ট ড. ক্রিশ্চিয়ান প্রকপ। দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক তারিন হোসেইনের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও আলোচনা করেন বিসিএস সভাপতি মাহফুজুল আরিফ, বিসিসি নির্বাহী পরিচালক আশরাফুল ইসলাম, ওকে মোবাইলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান, স্টার্টআপ ঢাকার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাইয়াজ তাহের, ইল্যান্স-ওডেস্কের বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার সাইদুর মামুন খান, টিম ইঞ্জিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামিরা জুবেরী হিমিকা, এটুআই এর যোগাযোগ কর্মকর্তা হাসান বেনাউল ইসলাম প্রমুখ।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের সমৃদ্ধির কার্যক্রম চলছে। প্রতিমাসে ৪০ হাজার সাধারণ জনগন ইউনিয়ত তথ্যসেবা কেন্দ্রগুলো থেকে সেবা নিচ্ছে। সরকারি ২৫ হাজার ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। সব মিলে তথ্যপ্রযুক্তি ও সেবা মানুষের হাতের মুঠোয় পৌছে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, গুগলের সহায়তায় ৪০০টি স্কুলে ৪ লাখ শিক্ষার্থীকে ইন্টারনেট সম্পর্কিত জ্ঞানদানের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌছে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে যাতে ফেসবুক, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠান তৈরি হয় সেই লক্ষে কাজ করা হচ্ছে। ৫৫ হাজার ফ্রিল্যান্সার তৈরির কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। পরবর্তীতে তাদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি হতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন ও আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। সবাই মিলে কাজ করলে একদিন সিলিকন বাংলাদেশ তৈরি হবে।
বেসিস সভাপতি শামীম আহসান বলেন, দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক/এনবিএফআই কিংবা তাদের শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে বিনিয়োগ বাড়াতে পারে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। তবে এক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানিকে দুইবার ট্যাক্স দিতে হয়। এ বিষয়ে একটি সমাধান প্রয়োজন। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির জন্য আমাদের দেশে কোনো আইন নেই। উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে ভেঞ্চারের গুরুত্ব বিবেচনায় এ সংক্রান্ত আইন করা প্রয়োজন। দেশে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল যদি সফল হতে পারে তবে অনেকেই এদিকে এগিয়ে আসবে। ফলে এর মাধ্যমেও ব্যবসায়ের অর্থায়ন প্রক্রিয়া সহজতর হবে। পাশাপাশি শুধু বিনিয়োগ পাওয়া নয়, এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিনিয়োগ পাওয়া প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে যেতে হবে।
শামীম আহসান আরও বলেন, দেশের সবচেয়ে ভালো মেধাবীদের ৮০ ভাগ বিদেশে চলে যায়। বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মেধা ও পুঁজি দেশে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। সংযোগ স্থাপন করে প্রযুক্তি খাতের দেশি বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে শিল্প স্থাপন কিংবা বিদ্যমান শিল্পে তাদের মেধা প্রয়োগের ব্যবস্থা করা জরুরি। এজন্য সরকারকে আরো উদ্যোগী হতে হবে।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশি স্টার্টআপ কোম্পানি কিনতে চায়। তবে তাদেরকে আগে দেখাতে হবে আমার সেই স্টার্টআপের পিছনে কতোটা বিনিয়োগ করেছি। এছাড়া সিলিকন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাইলে শুধু নিজেদের জনশক্তি নয়, প্রয়োজনে আমেরিকা, জাপানসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলো থেকে দক্ষ জনশক্তি আনতে হবে। টাকা খরচ করলে টাকা আসবে।