
মঙ্গলবার ● ১৯ আগস্ট ২০১৪
প্রথম পাতা » আইসিটি বিশ্ব » ফেসবুকে অভিনব প্রতারণার ফাঁদে ৫ হাজার মানুষ
ফেসবুকে অভিনব প্রতারণার ফাঁদে ৫ হাজার মানুষ
‘দয়া করে সবাই পড়ুন। আধুনিকতার এই যুগে সবার হাতেই একটি করে মোববাইল থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু এ মোবাইল চালাতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। আর একটা ব্যাপার, ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করা যায় সেটাও নিশ্চয়ই জানেন। কিন্তু কীভাবে? সেটা জানেন কি? তাই আপনার জন্য একটা উপায় আমি নিয়ে এলাম। কাজটা করতে আপনার মাত্র ৫ থেকে ৬ মিনিট সময় লাগবে। কিন্তু এতেই আপনি কামিয়ে নিতে পারবেন সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা। কি অবাক লাগল?
হ্যাঁ এটাই সত্যি। আপনি শুধু নিচের লিংকে ঢুকুন। ওখানে আপনাকে মাত্র ৩টি কাজ করতে বলা হবে। কাজগুলো যথাযথভাবে করলেই আপনি পাবেন ২৫০ টাকার ফ্লেক্সিলোড! তো এখনই শুরু করুন। এই লিংকে ঢুকুন → » http://moneybd.ml’
ইদানীং সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকে আমাদের ফ্যানপেজ থেকে শুরু করে মূল সাইটেরও কিছু কিছু সংবাদের নিচে প্রায়ই দেখা যায় এমন চটকদার বিজ্ঞাপন।
বিজ্ঞাপনদাতাদের দু’একজনের প্রোফাইলে গিয়ে দেখা গেলো নামিদামি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও আছেন তালিকায়।
লিংকগুলো অনেকবার রিমুভ করেও কোনো লাভ না হওয়ায় আমরা নিজেরাই বিষয়টি পরীক্ষা করার উদ্যোগ নেই।
উপরের লিংকটিতে ক্লিক করলে মানিবিডি.এমএল নামক যে পেজে নিয়ে যায় সেখানে গিয়ে দেখা যায় আরো চটকদার বিজ্ঞাপন- ‘আপনি গ্রামীণ, রবি, বাংলালিংক কিংবা সিটিসেলসহ যে কোম্পানিরই গ্রাহক হোন না কেন, তারা আপনাকে ৫ মিনিটে ২৫০ টাকা মোবাইল ব্যালেন্স দেওয়ার কথা বলেছে সেখানে।
এবার তাদের কথামতো ‘মাত্র ২টি ধাপ’ পালনের পালা।
প্রথমে বলা হলো সাইটের ফ্যান পেজে লাইক দিতে, দেওয়া হলো।
এবার বলা হলো মোবাইল নম্বর লিখতে, তাও লেখা হলো।
তাদের কথামতো ২৫০ টাকা চলে আসার কথা মোবাইলে। কিন্তু তা না, এবার নতুন যে ধাপ পালনের কথা বলা হলো সেখানেই পাওয়া গেলো শুরুর সেই কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নের উত্তর।
তৃতীয় ধাপে উপরের সেই হাস্যকর কথাটি দিয়ে বলা হয়েছে ফেসবুকে তা ১৫ জায়গায় শেয়ার করতে, নয়তো আসবে না সেই কাঙ্ক্ষিত ২৫০ টাকা।
কিন্তু, না। শেয়ার দেওয়ার পরেও সেই শুভঙ্করের ফাঁকি। বলা হলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যে কোনো সময় চলে আসবে টাকা। তারপর ২৪ ঘণ্টা, ৪৮ ঘণ্টা… এমন আরো অনেক সময়ই যায়। ফলাফল শূন্য।
এবার একটু আইটি টিমের সাহায্য নিয়ে আমাদের দেখার পালা যারা লাইক দেয় তারা আসলে কাকে দেয়, কেন দেয়!
মনে আছে, সাইটের ফ্যান পেজ ফলো করতে বলেছিল প্রথম ধাপে। আপনি সেখানে আসলে কোনো সাইটকে না বরং এ প্রতারণার মূল গুরুকে ‘লাইক’ করেছেন। ফলাফল, আপনার অ্যাক্টিভিটি দেখে আপনার কোনো ফেসবুক বন্ধুও হয়তো লাইক দিচ্ছে তার পেজ। লাভ যদি কিছু হয়, তবে পুরোটাই সেই প্রতারকের।
ফেসবুকে নাম মুরাদ। পরিচয়, একটি মোবাইল সমস্যার সমাধান দেওয়া প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা- এটাও ফেসবুক পরিচয়। বাস্তবে এমন কিছুর অস্তিত্ব নেই। আপনার আগে আরো প্রায় ৫ হাজার মানুষকে এভাবে বোকা বানিয়েছেন তিনি। আর তার কথামতো ইন্টারনেটে যদি টাকা আয় করার কোনো সুযোগ থেকেও থাকে, তবে তার পুরোটাই গিয়েছে তার পকেটে!
সংগ্রহে বাংলানিউজ ২৪