সোমবার ● ১৫ জুলাই ২০১৩
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » তথ্য প্রযুক্তির ভূত-ভবিষ্যৎ
তথ্য প্রযুক্তির ভূত-ভবিষ্যৎ
আমরা কি কোন মুহূর্ত প্রযুক্তির ছোঁয়া ছাড়া কল্পনা করতে পারি ? আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও সহজ, সুন্দর, এবং সহজলভ্য হয়েছে এই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে। আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এবং অপরিহার্য অংশ হল তথ্য-প্রযুক্তি। প্রতি মুহূর্তে পৃথিবীর সবই তথ্য আমাদের হাতের মুঠোয় চলে আসে এই তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে। যোগাযোগ, তথ্য আদান-প্রদান, বিনোদন, শিক্ষা, গবেষণাসহ আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে আছে এই তথ্য-প্রযুক্তি।
আমাদের ব্যক্তিগত ও দেশের বর্তমান, ভবিষ্যতের সার্বিক উন্নতি নির্ভর করছে এই তথ্য-প্রযুক্তির ব্যাবহারের উপর। আর তাই তথ্য-প্রযুক্তির উপর ভাল জ্ঞান না থাকলে আর কম্পিউটারে দক্ষ না হলে ভাল চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এই ধ্যানধারণার উপর নির্ভর করেই আমদের শিক্ষা ব্যবস্থার এবং জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্নক্ষেত্রে নানা পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তির ব্যাবহার খুবই আশাব্যঞ্জক। উইকিপিডিয়া জুলাই ২০১২ সূত্রমতে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি প্রায় ১২ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে তথ্য-প্রযুক্তির সেবা নিচ্ছে। প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির এই ভাণ্ডারে যুক্ত হচ্ছে নিত্যনতুন সব এ্যাপস ( সফটওয়্যার), আর বৃদ্ধি পাছে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা।
ইন্টারনেট হল যোগাযোগ ব্যবস্থা। আমারা সারা বিশ্বের অন্যান্য কম্পিউটার এবং কম্পিউটার সার্ভারের সাথে যারা ইন্টারনেট এর সাথে যুক্ত তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারি এই ইন্টারনেটের মাধ্যমে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমারা যে সেবা গুলা পাই তার মধ্যে অন্যতম হল ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (ড়িৎষফ রিফব বিন). এর নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার নাম হল ড়িৎষফ রিফব বিন ঈড়হংড়ৎঃরঁস(ড৩ঈ)।
ওয়েব টেকনোলজি নিয়ে বর্তমান বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে গবেষণা হচ্ছে। জানতে চাইলে ওয়েব টেকনোলজির গবেষক সিএসই বিভাগের (ইউআইটিএস) লেকচারার আল-ইমতিয়াজ বলেন, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির উপর আমাদের সম্পূর্ণ কম্পিউটার ব্যবস্থা নির্ভর করবে । ইন্টারনেটর সংযোগ ছাড়া হয়ত আমারা কম্পিউটারই অন করতে পারব না। কিন্তু এর ফলে আমারা সবসময় পাবো সর্বাধুনিক এবং সময়োপযোগী সেবা আর সেবা-দান প্রতিষ্ঠানগুলো পাবে তার সঠিক মূল্য। পাশাপাশি পাইরে-টেড পণ্যের ব্যবহার কমে যাবে । ওয়েব নির্ভর এই সেবাগুলা ক্লাউড কম্পিউটিং নামেও পরিচিতি।
ওয়েব নির্ভর সেবাগুলার জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর পিছনে রয়েছে অনেকগুলো কারণ যেমন,এই এ্যাপসগুলা বিভিন্ন প্লাটফর্মে চলতে সক্ষম, (যেমন ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ট্যাবলেট কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন ইত্যাদি।) এর ফলে একই এ্যাপসের মাধ্যমে বিশাল পরিমাণ জনসংখ্যাকে সেবা প্রধান সম্ভব।
তিনি বলেন, সহজলভ্যতাই এই জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ। সঠিক পাসওয়ার্ড প্রধানের মাধ্যমে আপনি আপনার তথ্য পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে দেখতে, ব্যবহার করতে এবং পরিবর্তন করতে পারবেন। আবার হারানো বা নষ্ট হবার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। আপনার কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ যে তথ্য থাকে তা ভাইরাসের কারণে অকার্যকর অথবা আপনার হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ টাই হারিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে তার কোন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
আমাদের কম্পিউটারে ব্যবহৃত এ্যাপসগুলা প্রতিনিয়ত আপডেটের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ওয়েব এ্যাপসগুলা সবসময়ই আপডেটে-ড, আলাদাভাবে আপডেট করার কোন দরকার নেই। অন্যান্য সফটওয়ারের মত এইগুলা ইন্সটল করার কোন প্রয়োজন হয় না। তাই ভাইরাস, ম্যালওয়্যার ইত্যাদির কোন ঝুঁকি নাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ব্যবহৃত অন্যান্য সফটওয়ারে এমনকি অপারেটিং সিস্টেমও ওয়েব অ্যাপ্লিকেশানের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যেহেতু এই অ্যাপ্লিকেশানগুলা আমাদের কম্পিউটারে ইন্সটল করতে হবে না এবং সম্পূর্ণ কাজ করবে (ডাটা প্রসেস) আমাদের কম্পিউটারের বাইরে (সেবা প্রদানকারীর সার্ভারে), তাই আমাদের প্রসেসর খুব উচ্চমানের না হলেও চলবে। আর যদি ওয়েব স্টোরে বাকি তথ্যগুলা রাখি তাহলে-তো হার্ড ডিস্ক ড্রাইভের কোন দরকারই নাই, সুধু দরকার ভাল আর একটু বেশী স্টোরেজ ক্ষমতা সম্পূর্ণ জঅগ আর ইন্টারনেট সংযোগ।
বাংলাদেশর তথ্য-প্রযুক্তির বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন , আর এইসবের জন্য দরকার কাঠামোগত উন্নয়ন; এই লক্ষে সরকার বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছে।
যা বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করবে বলেও তিনি আশা পোষণ করেন।
আরিফ উদ্দিন রাসেল
ইউআইটিএস, ঢাকা