রবিবার ● ৭ জুলাই ২০১৩
প্রথম পাতা » আলোচিত সংবাদ » গোল্ডেন লাইফ ইনসিওরেন্সের বিতর্কিত এমডি মাহফুজুল বারী চৌধুরীর অপসারন এবং ৮ লাখ বীমা গ্রাহকদের টাকা ফেরতের দাবীতে মানববন্ধন ও অবস্থান ধর্মঘট অনুষ্ঠিত
গোল্ডেন লাইফ ইনসিওরেন্সের বিতর্কিত এমডি মাহফুজুল বারী চৌধুরীর অপসারন এবং ৮ লাখ বীমা গ্রাহকদের টাকা ফেরতের দাবীতে মানববন্ধন ও অবস্থান ধর্মঘট অনুষ্ঠিত
গোল্ডেন লাইফ ইনসিওরেন্স লিমিটেড
গ্রাহক-কর্মী-কর্মকর্তার সম্মিলিত প্রেসনোট
২৬ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে সি-৩৯৩১৪(১২৭২)৯৯ নং লাইসেন্সের মাধ্যমে কোম্পানীটি অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। ২০১৩ সাল পর্যন্ত কোম্পানীর মাঠ কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার। জেলা, থানা, ইউনিয়ন এমনকি গ্রাম পর্যায়ে মিলে মোট অফিসের সংখ্যা ৭ শতাধিক। গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে ৮ লাখ। লায়বিলিটি বা দায়বদ্ধতা প্রায় ৯ শত কোটি টাকা। পরিচালক ৭ জন। এরা হলেন ১। মোঃ শামসুর রহমান ২। সৈয়দ মুনসিফ আলী ৩। এ.কে.এম. আজিজুর রহমান ৪। মোঃ আতিয়ার রহমান লস্কর ৫। আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ ৬। সুলতান আহমেদ এবং ৭। মোঃ মুসা মিয়া। কোম্পানীর বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ শামসুর রহমান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. মাহফুজুল বারী চৌধুরী।
কোম্পানীটি প্রতিষ্ঠার ৩ বছরের মধ্যেই লাভের মুখ দেখে কিন্তু পরিচালকদের মধ্যে কয়েকজন বিশেষত এ.কে.এম. আজিজুর রহমান ও সৈয়দ মুনসিফ আলী নানাভাবে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে যার দরুন ৯শত কোটি টাকা লায়বিলিটির মধ্যে বর্তমানে সম্পদ আছে ২ থেকে ৩ শত কোটি টাকার। প্রতিষ্ঠা কালিন হিসাব বিভাগীয় প্রধান থেকে শুরু করে বর্তমান সিএফও সকলকে উক্ত ২ জন পরিচালক নিজস্ব লোক নিয়োগ দিয়েছেন এবং তাদেরকে ইচ্ছেমত ব্যবহার করে মাঠ পর্যায় থেকে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা কালেকশন হয়ে প্রধান কার্যালয়ে এসেছে ঠিকই কিন্তু কোম্পানীর ফান্ডে জমা হয়নি। ২০০০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ৭/৮ জন এমডি বদল হয়েছে এর মধ্যে অনেককেই উক্ত ২জন পরিচালককে মনমতন টাকা না দিতে পারায় চলে যেতে হয়েছে। উক্ত ২ জন পরিচালক কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং কোম্পানীর বিভিন্ন অবৈধকাজের সাথে জড়িত এবং উক্ত অবৈধ কাজ এবং আত্মসাতকৃত টাকার হিসেব চিরতরে মুছে ফেলার জন্য মোঃ শামসুর রহমান, মোঃ আতিয়ার রহমান লস্কর এবং আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ এই ৫ জনে মিলে একটি সিন্ডিকেট তৈরী করেছেন। মালিকদের এই সিন্ডিকেট চক্রটি গত ০৮ অগাষ্ট’২০১২ সালে মাহফুজুল বারীকে তাদের হীন এজেন্ডা এবং স্বার্থ চারিতার্থ করার জন্য এমডি হিসেবে নিয়োগ দেয়।
মাহফুজুল বারী নিয়োগের ১১ মাসে গ্রাহকদের অনুমোদিত এসবি, ম্যাচুইরিটি, মৃত্যুদাবীসহ বিভিন্ন দাবী বাবদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা পরিশোধ না করে তালবাহানা করছে। এর কারনে সারা দেশের ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা কর্মীদের মারধর, বাড়িঘর ভাংচুর, অফিসে হামলা, গাড়ি/মটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয়া এভাবে অপমান অপদস্থ করে চলছে প্রতিনিয়ত। এর মধ্যে কোন কোন গ্রাহক ২/৩ বছরেও তাদের জমাকৃত টাকা পাচ্ছেনা। গ্রাহক দ্বারা লাঞ্চিত হয়ে বরিশালের মিলন হালদার নামের এক কর্মকর্তা গত ১৭ জানুয়ারি’২০১৩ তারিখ আত্মহত্যা করেছে। প্রতিনিয়ত শত শত গ্রাহক প্রধান কার্যালয়ে আসে এমডিকে পায়না। অনেক গ্রাহক আইডিআরএ যায় সেখানেও কোন সুরাহা পায়না। আইডিআরের চেয়ারম্যান মাহফুজুল বারীর আত্মীয় বলে সে বলে বেড়ায় এবং যার কারনেই সকল অপকর্ম করে পার পেয়ে যায় বলে ধারনা। মাহফুজুল বারীর বর্তমানের ভূমিকা মালিকদের পালিত ক্যাডারের ন্যায়। সে গত ৮ এপ্রিল’২০১৩ থেকে অফিসে আসেনা। বাসায় বসে বিভিন্ন মিথ্যা অযুহাত দেখিয়ে আজিজুর রহমান ও মুনসিফ আলীর সকল অপরাধের যারা রাজস্বাক্ষী তাদের অর্থ্যাৎ এডিশনাল এমডি, ডিএমডি, প্রকল্প ইনচার্জ ৮ জন এবং এক্সিকিউটিভ অফিসার, ড্রাইভার, পিয়ন এবং ঝাড়–দারসহ এ পর্যন্ত ৫৫ জনকে গনহারে বরখাস্ত করেছে।
দীর্ঘ ১৩ বছরে আজও কোম্পানী আইপিও’তে যেতে পারেনি যার দরুন আইডিআরের নিয়ম মোতাবেক দৈনিক ৫ হাজার করে টাকা জরিমানা দিতে হচ্ছে। ২০০৪/২০০৫ সালের দিকে কোম্পানীর অবস্থা ভালো ছিল এবং তখন আইপিও’তে যাওয়ার উপযুক্ত ছিল; কিন্তু পরিচালক আজিজুর রহমান এবং মুনসিফ আলী টাকা আত্মসাতের পায়তারায় আইপিও’তে নেয়নি এবং তারা কোম্পানীর সকল কার্যক্রম সফটওয়ারভূক্ত করেনি। মাহফুজুল বারীর আমলে ৫০ সহাস্রাধিক পলিসির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তাদের ম্যাচুইরিটি দাবী পরিশোধ করছেনা, ৪ থেকে ৫ লাখ গ্রাহকের টাকা কম্পিউটারে এন্টি হয় নাই, এছাড়া গত ১ বছর পর্যন্ত ৬০/৭০ কোটি টাকার ডিসিএস কম্পিউটারে পুষ্টিং হয়নি, ৬০/৭০ কোটি টাকার পাকা রশিদ এবং লক্ষাধিক গ্রাহকের দলিল দেয়া হচ্ছেনা, হিসাব বিভাগের কোন লেনদেন সফটওয়ারে নাই, এ্যাডমিন স্ট্যাফ এবং উন্নয়ন কর্মীসহ সারাদেশে প্রায় ৪৪ হাজার কর্মী কর্মকর্তার কোন সার্ভিস রুল নাই, নিজস্ব সার্কূলার মোতাবেক পিএফ কেটে রাখে কিন্তÍ চাকুরী ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় অধিকাংশ জনই পিএফএর টাকা পায়না, মালিকদের আত্মসাৎকৃত টাকা উন্নয়ন বিভাগের কর্মকর্তাদের নামে ডেভিট দেখিয়ে মামলা করে তাদের হয়রানি করা, ১০ থেকে ১২ বছর পলিসি চালিয়ে মেয়াদ শেষে জমাকৃত টাকার চেয়ে কম পরিশোধ করা সহ আরও অনেক ভাবে মাহফুজুল বারী আমরা গ্রাহক ও কর্মীদের প্রতারনা করে যাচ্ছে।
মাহফুজুল বারী উক্ত পরিচালকদের দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে ‘‘একক স্বাক্ষরে’’ কোম্পানীর প্রায় ২ শতাধিক ব্যাংক হিসাব নিয়ন্ত্রন করে। এই সুযোগে মালিকদের কোটি কোটি টাকা দিয়েছে এবং নিজেও কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমরা ৫ জুলাই’১৩ তারিখ দৈনিক প্রথম আলোর সংবাদে পড়েছি মাহফুজুল বারী ঘজই এখঙইঅখ খওঋঊ ওঘঝটজঅঘঈঊ এর পরিচালক হয়েছে। ১১ মাস পূর্বে যোগদান কালীন সময়ে যার পরিবারের ভরন পোষনের জন্য টানাটানি ছিল এবং প্রতি মাসে বেতন অগ্রিম নিত সে আজ কোটি কোটি টাকা দিয়ে নতুন ইনসিওরেন্স কোম্পানীর মালিক হয়েছে। কোথায় পেল টাকা? মাহফুজুল বারীর অপকর্মে ফেসে যাবে বলে বর্তমানের হিসাব প্রধান মোঃ মনিরুল ইসলাম ২০ দিন পূর্বে পদত্যাগ করেছে। এছাড়া আজিজুর রহমান, মুনসিফ আলী এবং মাহফুজুল বারী মিলে গোল্ডেন লাইফকে বন্ধকরে দেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে ৫৫ জন বরখাস্ত, ৫০ কোটি টাকার দাবী পরিশোধ না করা, কর্মকর্তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়াসহ সকল কার্যক্রম চালাচ্ছে। এ পর্যন্ত বরখাস্তকৃতদের নামে ৮/১০টি মিথ্যে মামলা করেছে। সিন্ডিকেট স্বার্থ ছাড়াও মাহফুজুল বারীর ব্যক্তিগত স্বার্থ হলো নিপিড়িত লাঞ্চিত হাজার হাজার কর্মী মাহফুজুল বারীর নতুন কোম্পানীতে যোগদান করবে।
পরিচালক আজিজুর রহমান ও মুনসিফ আলীর নের্তৃত্বে উক্ত ৫ জন পরিচালক নূন্যতম ৫ শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং মাহফুজুল বারী উক্ত প্রমান নিশ্চিহ্ন করার জন্য নিয়োজিত হয়েছে। কোম্পানীর এফডিআর আছে ৭০ কোটি টাকা, নিজস্ব ভবনের মূল্য ১৫০ কোটি টাকা, গাড়ি আছে একশত এর উপরে যার মূল্য ১০/১২ কোটি টাকা, কুমিল্লায় একটি ফ্ল্যাট আছে যার মূল্য ২ কোটি টাকা- এই হিসেবে কোম্পানীর মোট সম্পদ আছে আড়াইশ থেকে সর্বোচ্চ ৩ শত কোটি টাকা। বাকী টাকা এই ৫ জন মালিক এবং মাহফুজুল বারী আত্মসাৎ করেছে বলে আমাদের বদ্ধমূল ধারনা। এই সিন্ডিকেট পরিচালক চক্রটি যেভাবে বা কায়দায় কোম্পানী থেকে টাকা সরিয়ে নেয় তার প্রমান স্বরূপ বলা যায়-
১। ফিল্ডের কালেশনের কোটি কোটি টাকা শুক্রবার বা শনিবার ক্লোজিংয়ের নামে ক্যাশ গ্রহন করে কোম্পানীর হিসেবে জমা না করে আত্মসাৎ করা ২। প্রতি মাসে ২/৩ বার বোর্ড মিটিং করে প্রতি মিটিংয়ে জনপ্রতি ১০ লাখ করে বোর্ড মিটিং অনারিয়াম ফি গ্রহন ৩। সেন্ট্রাল এবং বিভাগীয় কনফারেন্সের নামে কোটি টাকার ভূয়া বিল করে আত্মসাৎ করা ৪। সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির টাকা আত্মসাৎ করা ৫। শত শত কোটি টাকার নবায়ন ব্যবসাকে (যার কমিশন ১০%) প্রথমবর্ষ ব্যবসায় রূপান্তর করে (যার কমিশন ৯০%) আত্মসাৎ করা ৬। মাঠ পর্যায়ের কোটি কোটি টাকার নবায়ন কমিশন পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করা ৭। প্রজেক্টে একবার পরিশোধিত বিল নিয়ে সেন্ট্রাল হিসাব বিভাগ থেকে পরিশোধ দেখিয়ে পুনরায় ক্যাশ গ্রহন করে আত্মসাৎ করা এবং ৮। সময়ে অসময়ে ব্যাংক থেকে কোন পারপাস ছাড়া টাকা তুলে আত্মসাৎ করাসহ বহুবিধভাবে তারা এই টাকা আত্মসাৎ করেছে। এছাড়া আজিজুর রহমান, মুনসিফ আলী ও মাহফুজুল বারী মিথ্যা নিরাপত্তার অভাবের কথা বলে এই নিজস্বভবনটি বিক্রি করে এখান থেকেও শত কোটি টাতা আত্মসাতের চক্রান্ত হিসেবে ১ কোটি টাকা অগ্রিম দিয়ে, মাসে ৬ লাখ টাকা ভাড়ায় পান্থপথের ইউটিসি ভবনের ১৫ তলায় ৬ হাজার স্কায়ার ফিটের অফিস নিয়েছে। তাদের আত্মসাতের এই চিত্র জনাব মোঃ মুসা মিয়া ও সুলতান আহমেদ স্যার জানতে পেরে ২০১২ সালে হাই কোর্টে কয়েকটি রিট করেছে এবং তারা পরিচালক ও মাহফুজুল বারীকে ঘৃণা করে গত এ বছর সকল বোর্ড মিটিংসহ কোম্পানীর যাবতীয় কাজ থেকে দূরে সরে আছেন।
আমরা গ্রাহক ও কর্মী কর্মকর্তারা আমাদের ৯ শত কোটি টাকা ফেরৎ চাই, অন্যায়ভাবে চাকুরীচ্যুত করা ৫৫ জনকে পূনর্বহাল চাই, গরীব দুঃখি মানুষের রক্তচোষা মালিকদের দৃষ্ঠান্তমূলক বিচার চাই, মাহফুজুল বারীর পদত্যাগ ও বিচার চাই। ১ বছর পর্যন্ত কোন সমাধান পাইনা বলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্থক্ষেপ চাই।
তারিখ - ০৭ জুলাই’২০১৩ইং
গ্রাহক ও কর্মী-কর্মকর্তাবৃন্দ