শুক্রবার ● ২৮ জুন ২০১৩
প্রথম পাতা » নিউজ আপডেট » জিএসপি স্থগিতাদেশের পক্ষে মজিনার যুক্তি প্রদান
জিএসপি স্থগিতাদেশের পক্ষে মজিনার যুক্তি প্রদান
ক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করার পক্ষে যুক্তি দিয়ে রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা বলেছেন, এই সুবিধা ফিরে পেতে চাইলে বাংলাদেশকে এখন কারখানার নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং তাতে বাংলাদেশেরই লাভ হবে।
শুক্রবার রাজধানীর ইউনূস সেন্টারে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শ্রমিকদের কর্ম পরিবেশের উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ আবারও জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে পারে।
তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও সাভারে রানা প্লাজা ধসে ১২ শ’র বেশি শ্রমিকের প্রাণহানির ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে মজিনা বলেন, “এই সুবিধা বাতিল করা হয়নি, স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশকে এখন এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে ওই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।”
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি মাইকেল ফ্রোম্যান বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানান, কারখানার কর্ম পরিবেশের উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের পণ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার-সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আদেশে বলা হয়, ‘আমি নিশ্চিত, বাংলাদেশের পাওয়া জিএসপি সুবিধা এখন স্থগিত করাই শ্রেয়… কারণ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারগুলো বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ বাংলাদেশ নেয়নি।”
মজিনা বলেন, জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে চাইলে বাংলাদেশকে শ্রমিক অধিকার বাস্তবায়ন, তাদের ইউনিয়ন করার স্বাধীনতা দেয়া, সব কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা এবং কারখানা ভবনের কাঠামোগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিতে হবে।
“কেউ কেউ এটাকে নেতিবাচক হিসাবে দেখছেন। কিন্তু এসব বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে নিলে বাংলাদেশ পোশাক খাতে চীনকে পেছনে ফেলে বিশ্বের এক নম্বর ব্র্যান্ড হয়ে উঠতে পারে।”
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাবে, ২০১১-১২ অর্থবছরের বাংলাদেশ মোট রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেশি পণ্য। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে মোট রপ্তানির ২১ শতাংশ (৫০০ কোটি ডলার)।
যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, সরকার যেখানে তাদের বাণিজ্য সহযোগীদের ইচ্ছা এবং সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা দেখিয়ে আসছে সেখানে জিএসপি বাতিলের এই কঠোর সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের সম্প্রসারণে ‘নতুন করে বাধা’ সৃষ্টি করবে।
“দেশের কারখানাগুলোর নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার যেখানে বেশ কিছু উপযুক্ত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়েছে ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের কারখানার শ্রমিকদের জন্য জিএসপি বাতিলের মতো সিদ্ধান্তের চেয়ে দুঃথজনক খবর আর হতে পারে না।”
জিএসপি স্থগিতের এই সিদ্ধান্তকে ‘দুঃখজনক’ অভিহিত করে সরকার আশা প্রকাশ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র শিগগিরই আবার এই সুবিধা ফিরিয়ে দেবে।