শুক্রবার ● ২১ জুন ২০১৩
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » ঢাকার জন্য প্রথম বাস মানচিত্র
ঢাকার জন্য প্রথম বাস মানচিত্র
প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এবার ঢাকায় পথ চলার প্রথম বাস ম্যাপ উন্মোচিত হয়েছে। এই ম্যাপ ব্যবহার করে ঢাকায় আসা নতুন কেউ সহজেই বুঝতে পারবেন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে তাকে কোন বাসে উঠতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনভিত্তিক কোম্পানি ‘আরবান লঞ্চপ্যাড’ এর উদ্যোগে মানচিত্রটি তৈরি হয়েছে। এতে সহায়তা করেছে বাংলাদেশের ‘কেওকারাডং’ নামক একটি সংস্থা ও ক্রাউড ফান্ডিং ওয়েবসাইট ‘কিকস্টার্টার’।
ম্যাপটির বিষয়ে ম্যাপ প্রণয়নকারী টিমের অন্যতম সদস্য আরবান লঞ্জপ্যাড এর আলবার্ট সিং বলেছেন, ‘জিপিএস সিস্টেমের এই ম্যাপ ব্যবহার করে ঢাকার ১ কোটি ৮০ লাখ লোক নিশ্চিন্তে পথ চলতে পারবেন বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘গ্রীষ্মের ছুটিতে আমি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার ১২টি নগরী ঘুরেছি। এসময় এখানকার সাত বন্ধুর আমন্ত্রণে ঢাকায় আসি। এক সপ্তাহ ঢাকায় থেকে আমি বুঝতে পেরেছি পথে পথে কেমন নাকাল হতে হয় এখানকার অধিবাসীদের। অথচ এখানকার অধিকাংশের হাতেই রয়েছে সেলফোন। সাত বন্ধু মিলে চিন্তা করলাম সবাইকে স্বস্তি দিতে। এরপরই শুরু হলো পথের নানা তথ্য তালাশের কাজ এবং তা গুগল ম্যাপে সন্নিবেশের প্রচেষ্টা। গত ৫ জুন ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ঢাকা ম্যাপস’র পরীক্ষামূলক সংস্করণ বিতরণ করা হয়। এই সংস্করণ সম্পর্কে ঢাকার মানচিত্র কারিগরদের বক্তব্য, এটি দিয়ে ৭৫% এর মতো সঠিক ফলাফল এতে পাওয়া যাবে। ঢাকার প্রথম বাস মানচিত্র প্রকাশ করার মধ্যে দিয়ে আমরা আশা করছি এটি আপনাদের কাজে লাগবে এবং এও আশা করছি, ৯৯% পর্যন্ত সঠিক ফলাফল পেতে আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন।’
ইতিমধ্যে বাংলার পাশাপাশি মানচিত্রটির প্রমিত বাংলা সংস্করণ নিয়েও কাজ শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঢাকায় বাস সার্ভিসের অব্যবস্থাপনার শেষ নেই, এর ওপর বাসস্টপের সুনির্দিষ্ট চিহ্নিতকরণও সেভাবে করা নেই। ঢাকা শহরের পরিবহণ ব্যবস্থার অনেক সমিতি বা সংগঠন থাকলেও বাস রুট নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা বেশ স্বাধীনও বটে। এইসব সমস্যা প্রথম বাস ম্যাপটি করতে গিয়ে নানান জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে স্বেচ্ছাসেবকদের। তারপরও একটি সফল মানচিত্র তারা ঠিকই দাঁড় করাতে পেরেছে।
মানচিত্রটির এক পাতায় রুটগুলো চিত্রিত হয়েছে এবং অন্য পাতায় বাস এর নম্বর, কোম্পানি নাম এবং ছাড়ায় ও গন্তব্য স্থানের নাম চিহ্নিত করা হয়েছে আলাদাভাবে। অবশ্য মানচিত্রটি এখনো আলফা পর্যায়ে রয়েছে। অর্থাৎ এপ্রিলে প্রকাশ করা মানচিত্রের উন্নয়নে যে কেউ পরামর্শ দিতে পারবেন। সেসবের ভিত্তিতে পরবর্তীতে একটি পরিপূর্ণ মানচিত্র প্রকাশ করা হবে। অনলাইন থেকে যে কেউ মানচিত্রটির পিডিএফ সংস্করণ তার স্মার্টফোন বা ডেস্কটপে ডাউনলোডও করে নিতে পারবে।
ঢাকার এই মানচিত্র নিয়ে ফেসবুকে একটি গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী এই উদ্যোগ নেয়ার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এখানে এভারেস্ট জয়ী ওয়াসফিয়া নাজরীন ফেসবুকে খবরটি শেয়ার করে একে ‘বিস্ময়কর’ একটি প্রকল্প বলে অভিহিত করেছেন। এর ফলে ঢাকায় বাসে চলাচলকারীদের অনেক সুবিধা হবে বলে তিনি মনে করেন। এ সম্পর্কে আরও জানতে ঢাকায় প্রথম বাস মানচিত্র এর ফেসবুক পেজে https://www.facebook.com/DhakaBusMap যোগদান করতে পারেন।