সোমবার ● ২০ মে ২০১৩
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বাংলাদেশের বাজারে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ফোর
বাংলাদেশের বাজারে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ফোর
স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স বাংলাদেশ এবং টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীনফোন লিমিটেড যৌথভাবে গত ১৮ মে বাংলাদেশের বাজারে স্যামসাং এর নবতম অভিনব ফোন স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ফোর উদ্বোধন করেছে। এই ডিভাইসটি ডিজাইন করা হয়েছে ব্যবহারকারীদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মূহুর্তগুলো আরো প্রাণবন্ত করে তোলার জন্য।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স বাংলাদেশ এর জেনারেল ম্যানেজার এস এইচ সং, হেড অফ মোবাইল হাসান মেহদী, ট্রান্সকম গ্র”পের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান, ট্রান্সকম মোবাইলের সিওও আরশাদ হক এবং গ্রামীনফোনের প্রডাক্ট এবং কমার্শিয়াল হেড ও ডিরেক্টর মাইকেল ম্যালভেবো।
এ সময় বক্তারা বলেন, জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো বুঝে নিয়ে স্যামসাং গ্যালাক্সি এসফোর এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা জীবনযাত্রাকে পুন:সংজ্ঞায়িত এবং জীবনের পরিপূর্ণতাকে উপভোগ করতে সহায়ক হবে। এই আকর্ষণীয় স্মার্টফোনটি সম্পর্কের মূল্যবোধকে নতুন করে তুলে ধরে পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করে তুলতে সহায়তা করবে। ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো স্যামসাং ও গ্রামীনফোনের যৌথ উদ্যোগে অসাধারন কিছু অফার শুরু হতে যাচ্ছে খুব শীঘ্রই।
এই ফোনটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে যে মাত্র ১৩০ গ্রাম ওজন এবং ৭.৯ মিমি সরু আকারের মধ্যে এটে যাওয়া একটি বিশাল স্ক্রিন এবং ব্যাটারি। অ্যান্ড্রয়েড ৪.২.২ এবং ১.৬ গিগাহার্টজ অক্টা কোর (এক্সিনস ৫) প্রসেসর সম্বলিত এই ফোনটি পাওয়া যাবে ব্ল্যাক মিস্ট এবং হোয়াইট ফ্রস্ট দুটি আকর্ষণীয় রঙে।
গ্যালাক্সি এস ফোর এর এইচডি সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে এবং ৪৪১ পিপিআাই সম্বলিত ৫ ইঞ্চি বড় স্ক্রিনে দেখার অভিজ্ঞতা হবে আরো প্রাণবন্ত। কর্নিং এর একদম নতুন গোরিলা গ্লাস ৩ দ্বারা ফোনটির স্ক্রিন তৈরি যার ফলে এই ফোনটি নিশ্চিন্তে বহন করা সম্ভব হবে।
১৩ মেগাপিক্সেল রিয়ার ক্যামেরা সহকারে গ্যালাক্সি এস ফোর এ রয়েছে একই সাথে ফ্রন্ট (২ মেগাপিক্সেল) এবং ব্যাক ক্যামেরা ব্যবহারের সুবিধা। ছবি তোলার সময়, ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ধরনের ফ্রেমে দুটি ছবি খুব সহজেই মিলিয়ে দিতে পারবেন এবং এমনকি একটি বড় ছবির ভেতর একটি ছোট ছবি অনায়াসে ফিট করতে পারবেন। ব্যবহারকারীরা ৮টি ভিন্ন উপায়ে ফ্রন্ট ক্যামেরা এবং রিয়ার ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবি সমন্বয় করে রাখতে পারবেন। একই ভাবে ডুয়াল ভিডিও কলের সাহায্যে ভিডিও চ্যাট করতে পারবেন এবং প্রিয়জনদেরকে দেখাতে পারবেন তারা নিজেরা কি দেখতে পারছেন।
ফোনটির গ্র”প প্লে এর সাহায্যে কোন প্রকার ওয়াই ফাই এপি বা সেলুলার সিগনাল ছাড়াই ব্যবহারকারীরা তাদের আশেপাশের মানুষের সাথে গান, ছবি, ডকুমেন্টন্স এবং গেম শেয়ার করে উপভোগ করতে পারবেন। এই অভিনব ফিচারটি তৎক্ষনাত অন্যদের সাথে ব্যবহারকারীদের সরাসারি সংযোগ স্থাপনের সুযোগ করে দেয়। ফোনটির শেয়ার মিউজিক এর সাহায্যে সিঙ্ক করে একই গান একসাথে একাধিক ফোনে বাজানো সম্ভব হয়, যা কিনা খুব সহজেই একটি আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে।
গ্যালক্সি এস ফোরের “এস ট্রান্সলেটরের” তাৎক্ষণিক অনুবাদের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ভ্রমন হয়ে উঠতে পারে আরো উপভোগ্য, যা ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা সহজেই ইমেইল, মেসেজ বা চ্যাট অন এ টেক্সট বা টেক্সট থেকে স্পিচ এর সহায়তায় সরাসরি অনুবাদ করতে পারবেন প্রায় যেকোন ভাষা। বিদেশে ভ্রমনকালে এটি খুব কাজে লাগবে।
গ্যালাক্সি এস ফোর এর অভিনব ফিচার, যা কোন রকম স্পর্শ ছাড়াই শুধুমাত্র ব্যবহারকারীদের চেহারা, কন্ঠ এবং নড়াচড়ার মাধ্যমে স্ক্রিন কন্ট্রোল করতে পারে, এর মাধ্যমে কাজ করার অভিজ্ঞতা আরো সহজ ও উপভোগ্য করে তোলে। “স্যামসাং স্মার্ট পজ” এর সাহায্যে ব্যবহারকারী সহজেই নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন তাদের স্ক্রিন। কোন ভিডিও দেখার সময় ব্যবহারকারীরা অন্য কোন দিকে তাকালে তা সাথে সাথে থেমে যাবে এবং ব্যবহারকারীরা ফিরে তাকালে তা আবার চালু হয়ে যাবে। আর স্যামসাং স্মার্ট স্ক্রল এর সাথে স্ক্রিন না ধরেই স্ক্রল করা সম্ভব হবে কোন ব্রাউজার কিংবা ইমেইল। ফোনটির এর ফিচারটি স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা ব্যবহারকারীদের মুখাবয়ব এবং কব্জির নাড়াচাড়া উপর ভিত্তি করে সেই অনুযায়ী উপরে বা নিচে স্ক্রল করে পেজ।
“এয়ার ভিউ” এর সাহায্যে ব্যবকারীরা আঙুলের ছোয়ায় ইমেইল, এস প্ল্যানার, ইমেজ গ্যালারী বা ভিডিও না খুলেই প্রিভিউ করতে পারবেন। ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেট ব্রাউজার অথবা কি প্যাড এর স্পিড ডায়ালে সেভ করা কোন ফোন নম্বর বিবর্ধিতভাবে দেখতে পারবেন।”এয়ার জেসচার” এর সাহায্যে হাতের ইশারায় পরিবর্তন করা সম্ভব হবে স্ক্রিন, কোন গান কিংবা গ্রহন করতে পারবেন কল।
গাড়ি চালানোর সময় “এস ভয়েস ড্রাইভ” এর সাহায্যে ফোন নিয়ন্ত্রন করা যাবে ভয়েস কন্ট্রল এর সাহায্যে। ব্লুটুথ এর সাহায্যে গাড়ির সাথে সংযোগ স্থাপনের পরই ফোনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ড্রাইভিং মোড এ চলে যাবে এবং পরবর্তীতে যেকোন টেক্সকে পরিবর্তন করে ফেলে যার ফলে গাড়ি চালানোর সময় ব্যবহারকারীরা স্ক্রিনের দিকে না তাকিয়েই জানতে পারবেন মেসেজের তথ্য।
“স্যামসাং অপটিকাল রিডার” জীবনকে আরো সহজ করে তুলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টেক্সট, বিজনেস কার্ড বা কিউআর কোড চিনে নিয়ে এবং স্বয়ংক্রিয় ভাবে প্রদান করে অনুবাদ, কল, মেসেজ বা সার্চের সুবিধা।
“এস হেলথ” এর সাহায্যে গ্যালাক্সি এস ফোর ব্যবহারকারীরা সহজেই নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খবর রাখতে পারবেন এবং ভালো থাকার তথ্যও জানতে পারবেন। ডিভাইসটির ভেতরকার সেন্সর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্য ও পারিপার্শিক অবস্থা সম্পর্কিত তথ্য সঙগ্রহ করে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে সহায়তা করে। ব্যবহারকারীর সুস্থ থাকার জন্য একই সাথে খাবারের ডায়েরি, ব্যায়াম ডায়েরি এবং ঘুম মনিটর নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।
এই সব অভিনবত্ব ছাড়াও এই ফোনটিতে রয়েছে ১৬ জিবি মেমোরি (৬৪ জিবি পর্যন্ত বর্ধনশীল), ২ জিবি এলপিডিডিআর ৩ র্যাম এবং ২৬০০ এমএইচ ব্যাটারী। বাংলাদেশে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ফোর এর মূল্য ঠিক করা হয়েছে ৬৭,৫০০ টাকা। এই ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা নির্ধারিত কয়েকটি গ্রামীনফোন সেন্টারে এবং সকল স্যামসাং স্মার্টফোন ক্যাফেতে।