সোমবার ● ১১ মার্চ ২০১৩
প্রথম পাতা » নিউজ আপডেট » টানা হরতালের দিকে দেশ
টানা হরতালের দিকে দেশ
৷৷ নিউজ আপডেট ৷৷ আগামী মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা তিন দিনের হরতাল প্রস্তুতি রেখেই এগুচ্ছে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। তাদের পালে বাতাস দিচ্ছে সমমনা সব দল।অপরদিকে সরকার পক্ষ চাইছে প্রধান বিরোধী জোটকে হরতালের পথ থেকে সরিয়ে রাখতে।
এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে আপোস-রফা আর দরকষাকষির খবরও মিলছে বিভিন্ন সূত্রে।
সূত্রমতে, চাপ তৈরি করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে হরতাল থেকে সরিয়ে রাখতেই গত সপ্তাহে পাঁচটি মামলা হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে। হরতাল বা অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি থেকে তাদের সরিয়ে রাখতে সামনে রাখা হয়েছে আরো এক দফা কারাবাসের খাঁড়া।
এ কৌশলে কিছুটা কাজও হয়েছে বটে। হরতালের বদলে গায়েবানা জানাজা পড়েছে বিএনপি। সোমবার দিয়েছে বিক্ষোভ কর্মসূচি। তার আগে রোববার বিক্ষোভ আছে ছাত্রদলের।
এসব আপাত নিরীহ কর্মসূচিকে কাভার হিসেবে রেখে মূলত সময়ক্ষেপণেরই কৌশল নিয়েছিলো বিরোধী দল। কেন্দ্রীয় নেতাদের কারাবাস হলে পরিস্থিতি হয়তো অন্যরকম হতে পারতো।
কিন্তু রোববার বিএনপির সাত শীর্ষ নেতা ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান ও বরকত উল্লাহ বুলু-এর জামিন হওয়ায় অন্তত চার সপ্তাহের জন্য অনেকটাই নির্ভার বিরোধী দল।
তাই গত ক’দিন ধরে রাজনীতির ময়দানে ব্যাকফুটে খেলা বিএনপি এবার ফ্রন্টফুটে খেলবে বলেই আভাস দিচ্ছে দলীয় সূত্র।
আগামী ১৩ মার্চ চট্টগ্রামে লালদীঘি ময়দানে যাবে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ। ঢাকা বাইরে গণজাগরণ মঞ্চের এই কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করতে ওই দিন হরতাল পালনের জোর ভাবনাও চলছে সরকার বিরোধী শিবিরে।
উপরন্তু বিভিন্ন ইস্যুতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আঞ্চলিক হরতালের সাম্প্রতিক উদাহরণ আর জামায়াতের ধারাবাহিক সহিংসতা হরতাল সফল হওয়ার প্রেক্ষাপট অনেকটাই রচনা করে দিয়েছে।
আর এমন পরিস্থিতিতে এসে কৌশলে এগুচ্ছে ১৮ দলীয় জোটে বিএনপির প্রধান শরিক জামায়াত। যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা আর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে এককভাবে সহিংস হরতাল পালন করা জামায়াত এখন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ব্যানারে অথবা ১৮ দলের পাশাপাশি যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে।
এক্ষেত্রে, ১৮ দলীয় জোটের সঙ্গে, অথবা জোটের বাইরে থেকে যুগপৎ হরতাল বা অবরোধ কর্মসূচিতে যেতে পারে জামায়াত।
আর এমনটি হলে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার ভাগাভাগি করে হরতাল দিতে পারে ১৮ দলীয় জোট ও জামায়াত। তাদের সহযোগী হিসেবে মাঠে নামানো হতে পারে সমমনা দলগুলোকেও।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট, জামায়াত ও সমমনা দলগুলো একদিন করে হরতাল দিয়ে মঙ্গল থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অচল করে দিতে পারে দেশ। তিন দিন না হয়ে আসতে পারে দু’দিনের হরতালও। আবার এ সপ্তাহের পরিবর্তে আসছে সপ্তাহ হরতালে অচল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে প্রধান বিরোধী জোট।
শনিবার রাতে ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলার বিএনপি নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মূলত হরতালের গ্রাউন্ড ওয়ার্ক সেরে ফেলেছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
দলীয় সূত্র বলছে, হরতালের সব আয়োজন সম্পন্ন জামায়াত-বিএনপি শিবিরে। তবে সরকার পক্ষের সঙ্গে যে কোন পর্যায়ে সংলাপ, নিদেনপক্ষে সংলাপের সম্ভাবনা জাগানিয়া প্রেক্ষাপট তৈরি হলেও হরতালের পথ থেকে সরে আসতে পারে প্রধান বিরোধী দল ও তার মিত্ররা।
বিএনপি সূত্র বলছে, ডায়ালগ হলে হরতালে যাবে না। কিন্তু ডায়ালগের বিষয়ে সরকার আন্তরিক নয়।
অপরদিকে যথেষ্ঠ সম্ভাবনা ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপ থাকা সত্ত্বেও সংলাপ না হওয়ার জন্য বিরোধী দলকেই দায়ী করছে সরকার পক্ষ।
সংশ্লিষ্ট এক সূত্র বলছে, এখনো সমঝোতার ভিত্তিতে চলমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের পথ খুঁজছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু এ নিয়ে কমপ্রোমাইজের কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি পয়েন্ট অব নো রিটার্নে চলে গেছে। -বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম