সোমবার ● ১১ মার্চ ২০১৩
প্রথম পাতা » নিউজ আপডেট » পাল্টাপাল্টি কমিটি: হুমকিতে জননিরাপত্তা
পাল্টাপাল্টি কমিটি: হুমকিতে জননিরাপত্তা
৷৷ নিউজ আপডেট ৷৷ বাংলাদেশে চলমান সহিংসতায় জনগণের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অনেকটা একই উদ্দেশ্যে কিন্তু পৃথক নামে দেশজুড়ে তৃণমূল পর্যায়ে নাগরিক কমিটি গঠনের উদ্যোগ চূড়ান্ত করে এনেছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানের পর আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে জেলায় জেলায় ‘সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি’ গঠনের নির্দেশনা পাঠিয়ে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলছেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই সারা দেশে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের কাজ শেষ হবে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ব্যক্তি কিংবা সংগঠনের সদস্যরা এই কমিটিতে থাকবেন।
এদিকে আপাতত ‘কমিটি ফর পাবলিক সেফটি’ বা জন নিরাপত্তা কমিটি হিসেবে অভিহিত করে একটি যুতসই নাম খুঁজছে বিএনপি।
সংগঠনটির একজন যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলছেন, ”সারা দেশে সামাজিক শক্তি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, আঠারো দল এবং যারা জনগণের নিরাপত্তা, সংখ্যালঘুদের জান-মাল ও উপসনালয়ের নিরাপত্তা, সর্বোপরি সর্বস্তরের মানুষের নিরাপত্তার জন্য যারা আগ্রহী তাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে তারা। ”
মি. রিজভী আরও বলছেন, দু-একদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে কমিটি গঠনের কাজ।
পাল্টাপাল্টি কমিটি কি সংঘাত বাড়াবে?বাংলাদেশের প্রধান দুই দলের এমন উদ্যোগ দেখে দৃশ্যত মনে হচ্ছে দল দুটি একই উদ্দেশ্য নিয়ে পৃথক পৃথক কমিটি গঠন করছে এবং সম্প্রতি বাংলাদেশ-জুড়ে যে সংঘাত-সহিংসতা চলছে, তার জন্য দুপক্ষই পরস্পরকে দোষারোপ করছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক আব্দুর রব খান বলছেন, ”এক দলের পর আরেক দলের ঘোষণা দেখে বিষয়টিকে অনেকটা প্রতিযোগিতার মতোই মনে হচ্ছে। এর ফলে এক দিকে বিষয়টিকে ভাল মনে হচ্ছে যে জনগণের নিরাপত্তা দেয়ার মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেলো।”
তবে মি. খানের আশঙ্কা, ”এটা যদি পাল্টাপাল্টি হয়, যেটা হবার সম্ভাবনাই বেশী, তবে বর্তমানে নাজুক অবস্থায় থাকা জননিরাপত্তা আরও বেশী নাজুক হয়ে পড়বে’।
এমন কমিটি কি আইনসংগত?আইনজীবী ও বেসরকারি সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলছেন, যেকোনো নাগরিকই এ ধরণের কমিটি গঠন করতে পারে।
তবে সেটা কীভাবে হচ্ছে, কোন্ পদ্ধতিতে হচ্ছে, তাদের কার্যক্রম কী সেটাই হবে মূলত: দেখার বিষয়।
সুলতানা কামাল বলেন, ”সেখানে কোনও দলীয় কথাবার্তা কিংবা দোষারোপ এবং একে অপরের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া চলবে না। এটা হলে জনসাধারণের উপকার যতটা হবে তার চাইতে অপকার অনেক বেশী হবে।”
সুলতানা কামাল আরও বলেন, তিনি তার অতীত অভিজ্ঞতায় দেখেছেন যে যতক্ষণ পর্যন্ত এ কমিটিগুলো সর্বদলীয় না হয় কিংবা জনগণের উদ্যোগে না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত এই কমিটি, নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত থাকে এবং পরস্পরের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে এক পর্যায়ে আইনের বাইরে চলে যায়।
- বিবিসি অবলম্বনে