বুধবার ● ৬ মার্চ ২০১৩
প্রথম পাতা » আইসিটি বিনোদন » ভার্চুয়াল জগতের কবিতা
ভার্চুয়াল জগতের কবিতা
প্রকাশক ও বই বিক্রেতাদের সঙ্গে কবিতা নিয়ে কথা বলে দেখুন, শুনবেন বই বিক্রি অনেক কঠিন হয়ে গেছে । বর্তমান প্রজন্ম বইবিমুখ, কবিতা তো অনেক দূরের কথা, কিন্তু ভার্চুয়াল দুনিয়ায় আসুন! দেখবেন এর বিপরীত চিত্র। আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভোগা একজন তরুণও সহজেই অনলাইনে তার কবিতা প্রকাশ করছেন। শুধু কি তাই, হাজার হাজার কিশোর-যুবা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সামাজিক সাইটে কবিতা লিখছেন। একবার ঢুঁ মেরে আসুন ওয়াটপ্যাডে। এখানে যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় বসে কবিতা পড়তে ও লিখতে পারবেন। লেখক-কবিদের সঙ্গে আলাপও চালাতে পারবেন। ওয়াটপ্যাডের মতো রিডিং সাইটগুলোয় লাখ লাখ সক্রিয় সদস্য রয়েছেন। মোভেলাস নামে লেখালেখির সাইটে প্রতিদিন ২০-৩০টি কবিতা আপলোড হয়, যা প্রতিদিন পড়া হয় ১৫ হাজারবার পর্যন্ত। সঙ্গে থাকে ২০ থেকে ২০০টি মন্তব্য। সাইটগুলোর বয়স খুব বেশি নয়। এদের জন্ম হয়েছে সদ্য।
প্রেম, দ্রোহ, মিলন প্রভৃতি বর্তমান বেশির ভাগই কবিতার উপজীব্য। এসব বিষয়ে লিখতে নতুন লেখকরা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যই বোধ করেন। অনেক সময়ে নিজেদের এ আবেগ প্রকাশে তারা একটু নার্ভাস বোধ করেন। খুব একটা ভালো হয়নি- এ রকম হীনম্মন্যতায়ও ভোগেন অনেকে। মনে করেন, হয়তো পাঠকরা লেখাটি পছন্দ করবেন না। এসব ভাবনা থেকেই তারা প্রথমে ইন্টারনেটে কবিতার কোনো সাইটে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। সেখানে নির্দ্বিধায় মনের আবেগ উজাড় করে দেন। এটাকেই নতুনরা বিশেষ সুযোগ মনে করছেন। তাদের কাছে এটা কবিতার নতুন যুগ, নতুন বিপ্লব।
এ বিপ্লব ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের সবখানে। আমাদের দেশেও এ রকম অনলাইননির্ভর পত্রিকা রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ফেসবুক। ফেসবুকে রয়েছে কবিতাসহ লেখালেখি-বিষয়ক ভূরি ভূরি ফ্যান পেজ। যেখানে চাইলেই যে কেউ তাদের লেখা প্রকাশ করতে পারেন। রয়েছে কবিতা নিয়ে ব্লগ। তরুণ লেখকরা তাদের প্রথম প্লাটফর্ম হিসেবে বেছে নিচ্ছেন এসব ডিজিটাল মাধ্যম। ফলে বাড়াতে পারছেন নিজেদের পরিচিতি। সুযোগ পাচ্ছেন কাজ দেখানোর। জানতে পারছেন পাঠকের অনুভূতি। ফল হিসেবে শুধরে নিতে পারছেন নিজেদের ভুলত্রুটি। নিজের কাজ ও উন্নতি নিজেই পরখ করে নিতে পারছেন। এ জগতে অভিজ্ঞতা কিংবা দাড়ি-গোঁফ পাকিয়ে ফেলার চিন্তা নেই। তাছাড়া প্রকাশকের পিছনে ছোটাছুটির বিড়ম্বনা থেকে তো মুক্ত হতে পারছেন। প্রথম বই প্রকাশে ভুক্তভোগী হওয়ার ঝামেলা থেকে কিছুটা হলে বাঁচা যাবে।
কবিতা সবসময়ই তরুণ। সে খাপ খাইয়ে যায় সময়ের সঙ্গে। নিজেকে ব্যস্ত রাখতে, সচল রাখতে কবিতার প্রয়োজন চিরকালের। এজন্য কবিতার চর্চা করতে পারেন। নিজের জন্য লিখুন, পাঠকের জন্য লিখুন। চিন্তার কিছু নেই, লেখালেখির অবারিত দ্বার উন্মোচন করেছে ইন্টারনেট, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে। ইন্টারনেটের সাহায্যে তারা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সহজে নিজেদের প্রকাশ করতে পারছেন। মাসের পর মাস প্রকাশকের মুখ চেয়ে বসে থাকা কিংবা লেখার ওপর ছুরি-কাঁচি চালানোর তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে মুক্ত এ সময়ের লেখক-কবিরা। বরং ইন্টারনেটে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যাবেন হাজারো পাঠক। বিষয়টিও তরুণ লেখকদের অনলাইনে লিখতে বেশি আকর্ষণ করছে। আবার বলা যায়, রয়েছেন দূরে কোথাও। হাতের কাছে বইও নেই। খুলে ফেলুন নোটবুক বা ইন্টারনেটযুক্ত সেলফোন সেট। এবার পড়ে নিতে পারেন পছন্দের যেকোনো বিষয়। দেশে অনেক বিশেষজ্ঞ এ অবস্থাকে অনলাইনের কবিতাবিষয়ক আন্দোলন হিসেবে দেখছেন।
সবশেষে বলা যায়, ভার্চুয়াল জগতে শুধু নতুন লেখাই প্রকাশ নয়। আমাদের লোকগীতি, রূপকথা কিংবা মুখে মুখে যুগ যুগ ধরে চলে আসা কাব্য-মহাকাব্য সবই প্রবেশ করতে পারে ইন্টারনেট দুনিয়ায়। এসব চিন্তা করতেই আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে মন। হয়তো এটাই হবে আমাদের লেখালেখির বিবর্তনকাল। - লেখক, রতন কুমার দাস
(আইসিটি নিউজ, আইটি নিউজ, আইটি সংবাদ, প্রজুক্তি সংবাদ, তথ্যপ্রযুক্তি, অনলাইন নিউজপেপার, তথ্যপ্রযুক্তি পত্রিকা, আইটি প্রোডাক্ট, প্রযুক্তি পণ্য, আইফোন, প্রযুক্তি বাজার, বাজারদর, ইন্টারনেট, নতুন পণ্য এর সর্বশেষ খবর জানতে ভিজিট করুন www.dailyictnews.com )