রবিবার ● ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১১
প্রথম পাতা » আইসিটি পড়াশোনা » অতিআলোকীয় গতি (Superluminal motion)
অতিআলোকীয় গতি (Superluminal motion)
অতিআলোকীয় গতি (ইংরেজি ভাষায়: Superluminal motion) বলতে আলোর চেয়ে বেশি বেগে চলনকে বোঝায়। আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার বিশেষ সূত্র অনুসারে এটি সম্ভব না হলেও প্রকৃতিতে এমন কিছু ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা গেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সক্রিয় ছায়াপথ কেন্দ্রিনের কেন্দ্র থেকে আলোর কাছাকাছি বেগে নিসৃত জেটের বেগ। এই ঘটনার বেশ কিছু ব্যাখ্যা রয়েছে, তবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা হচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে জেটের বেগ আলোর চেয়ে বেশি নয়, কিন্তু বেগের আপেক্ষিকতার কারণে তাকে আমাদের আলোর চেয়ে বেশি বেগ সম্পন্ন মনে হয়।এজিএন জেটের অতিআলোকীয় বেগ
এজিএন তথা সক্রিয় ছায়াপথ কেন্দ্রিনের কেন্দ্রীয় অতিবৃহৎ কৃষ্ণ বিবর এর প্রবৃদ্ধি চাকতি থেকে এ ধরণের জেট বের হয়। গ্যাসীয় এই জেটের বেগ থাকে আলোর বেগের খুব কাছাকাছি। কিন্তু জেটের গতিপথ আমাদের দৃষ্টিরেখার সাথে খুব কম উৎপন্ন করলে জেটের গতিকে আমাদের কাছে আলোর চেয়েও বেশি মনে হতে পারে। প্রকৃতিতে আসলে এমন কোন ঘটনা ঘটে না, এটি কেবলই আমাদের পর্যবেক্ষণের বিশেষ সীমাবদ্ধতা। নিচের চিত্রটির মাধ্যমে এজিএন জেটের অতিআলোকীয় বেগ প্রমাণ করা হচ্ছে।
ধরা যাক এজিএন এর কেন্দ্র থেকে নিসৃত একটি জেট AB বরাবর চলছে। t_1 সময়ে জেটের A বিন্দু থেকে একটি আলোকরশ্মি আমাদের দিকে আসতে শুরু করে এবং δt সময় পর t2 সময়ে আরেকটি রশ্মি আমাদের দিকে আসে। আলোর বেগ যেহেতু সসীম সেহেতু বিন্দু দুটি থেকে আসা দুটি আলো আমাদের কাছে তথা O বিন্দুতে পৌঁছুতে কিছু সময় নেবে। উল্লেখ্য জেটের বেগ v এবং জেটটি A বিন্দু ও পর্যবেক্ষকের মধ্যকার সরলরেখাটির সাথে θ কোণ উৎপন্ন করেছে, অর্থাৎ আমরা জেটটিকে θ কোণে দেখছি। ওদিকে আবার B ও O বিন্দুর সংযোগরেখা O ও A বিন্দুর মধ্যকার রেখাটির সাথে φ কোণ উৎপন্ন করে। নিচের সম্পর্কগুলো খুব সহজেই প্রতিষ্ঠা করা যায়,
, , ,
A থেকে নিসৃত আলোকরশ্মিটি সময়ে পর্যবেক্ষকের কাছে পৌঁছায়, আর B বিন্দু থেকে আসা রশ্মিটি পৌঁছায় সময়ে। এ দুয়ের পার্থক্য নির্ণয় করা যায় এভাবে,
- ,
- , যেখানে
- BC বরাবর ট্রান্সভার্স বেগ,
βT হচ্ছে আমাদের পর্যবেক্ষণকৃত বিটা ফ্যাক্টর। এর মান যদি ১ এর চেয়ে বেশি হয় তার অর্থই হচ্ছে, ট্রান্সভার্স দিকে আমরা আলোর চেয়ে বেশি বেগ পর্যবেক্ষণ করছি। উল্লেখ্য আকাশে আমরা কেবল ট্রান্সভার্স বেগই পর্যবেক্ষণ করতে পারি, ট্রান্সভার্স মানে এখানে আকাশের একটি বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুর দিকে। βT এর সর্বোচ্চ মান কত হতে পারে সেটা যদি আমরা হিসেব করতে পারি তবেই বোঝা যাবে কিভাবে আলোর চেয়ে বেশি বেগ পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। সর্বোচ্চ মান বের করার উপায় হচ্ছে, রাশিটিকে ব্যবকলন করে, ব্যবকলনের ফলাফলকে শূন্য ধরা।
- , যেখানে
γ এর মান সব সময় ১ থেকে বেশি, এবং β এর মান সব সময় ১ থেকে কম। কিন্তু γ-র মান যদি যথেষ্ট বেশি হয় তাহলে আমাদের পর্যবেক্ষণে এর মান অবশ্যই ১ থেকে বেশি হবে। অর্থাৎ ট্রান্সভার্স বেগের সর্বোচ্চ মান আলোর বেগের চেয়ে বেশি হবে। এভাবেই অতিআলোকীয় বেগ পর্যবেক্ষণ করতে পারি আমরা।