সোমবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » অনলাইন ভালোবাসা » আমার ভালোবাসা !!!
আমার ভালোবাসা !!!
ভালোবাসা অসাঙ্গায়িত। তারপরও ভালোবাসা তো ভালোবাসা। আমার জীবনের প্রথম প্রেম যাকে আমি আমার ভালোবাসা বলে জানি। যেদিন শুনি ওর বিয়ে সে দিন থেকে ভালোবাসা আমার কাছে অভিশাপ।১২-১২-১২ তাং রাত ১১.৩০মিঃ একটা মেসেজ আসলো আমার সেটে । মেসেজটা - call back Emergency “sagor” আমি কল করি।
ওপার থেকে- কিছু কি শুনেছিস?
আমি- না।
ওপার থেকে - ওর তো কাল বিয়ে।
আমি - কার সাথে?
ওপার থেকে -লোকের সাথে!
আমি - তো দাওয়াত পাসনি?
ওপার থেকে - মাসকারা করিস না সত্যি বলছি । ওর মা আমাকে ফোন দিয়ে জানিয়েছে।
আমি - যা যা টাকা-পয়সা লাগলে বলিস দাওয়াত খেতে আমি যেতে পারবো না ভাই !
তার আগে কলটা শেষ । ও আর কল দিল না জানে যে আমি মনে হয় বিশ্বাস করবো না । যাই হোক, আমি কিন্তুু বিশ্বাস করে ছিলাম, কারণ আমিও কয়েক দিন আগে শুনে ছিলাম। কিন্তু আমার কাছে তা সম্ভাব ছিল না ,কারণ আমি একজন তার কাছে অচিন পাখি হয়ে গিয়েছিলাম । সে কথা আমার চেয়ে বেশি কেবা জানে ! তাই তো আমার কাছে ভালোবাসা এক অভিশাপ। ও বেশ কিছু দিন যাবৎ আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছে সে কোন এক কারণে তা আমি সাগরের কাছ থেকে জানলাম। যার সাথে আমার দীর্ঘ ৮ বছর সম্পর্ক অথচ আমাকে সে একবারও বলতে পারলো না যে তার বিয়ে । জানি না সে আমার সাথে কি জন্য এত দিন ছলোনার আশ্রয় নিয়ে ছিল ! হঠাৎ একদিন তার সাথে দেখা বাজারে ,আমি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছি আর গল্প করছি বন্ধুদের সাথে । হঠাৎ চোখ পড়ল রাস্তার দিকে দেখি ওর স্বামীর হাত ধরে আমার সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছে । আমি ঘটনা টা কাউকে বুঝতে না দিয়ে আড্ডা দিয়ে যাচ্ছি । তার পরও কিন্তু আমার খেয়াল ও দিকে । কোন এক কারনে ওর দৃষ্টি আমার চোখের দিকে ,দেখে মনে হল ও কিছু একটা বলবে কিন্তু সামাজিক প্রতিবান্ধ্যকতার কারনে সে কিছু বলতে পারছে না । বেশ কিছু ক্ষন আমার দিকে নজর ছিল তার । কিন্তু কেউ খেয়াল করিনি আমি ছাড়া। যাই হোক আমি আমার চোখকে এবার পুরোটা বিশ্বাস করে নিয়তির উপর ছেড়ে দিলাম আমার জীবনের এক সময়কার সঙ্গীকে।আজ তার বাস্তব চিত্র । তাই গুনী জন কহে ” বাস্তব কে বিশ্বাস করা কঠিন , কিন্তু তার সামনে মুকাবেলা করা তার চেয়ে বেশি কঠিন”।এ কথার সারমর্ম আমি ছাড়া বেশি কেউ কি জানবে ? জানবে না অবশ্যই। আমি সেই দিন স¦াভাবিক আচারণ করছিলাম বন্ধুদের সাথে। কিন্তু আমার হৃদয় তখন ভেঙ্গে যাচ্ছে। আমার এক বন্ধু শুভ সে আমার ভেতর টা বুঝতে পারে । সে সাবার সামনে থেকে আমার দুঃখটাকে গভীর ভাবে জানার জন্য ওই দিন সবার কাছ থেকে তাড়াতাড়ি বিদায় নিয়ে আমাকে ওর বাড়িতে নিয়ে গেল। আমি আজ কোন বাঁঁধা দিলাম না। রাত্রে ওর বাড়িতে গিয়ে সকাল সকাল খেয়ে ফাঁকা মাঠে গেলাম দোকান থেকে এক প্যাকেট সিগারেট ও একটা ম্যাচ নিয়ে। ও আমাকে খুশি করার জন্য মজার মজার সব গল্প বলছে । আমি কিন্তু না শুনে অন্য মনস্ক হয়ে একের পর এক সিগারেট শেষ করেই চলেছি । ও আমাকে বলে দোস্ত জানি আমি তোর মন ভাল করতে পারবো না তার পরও কি করবো বল “মেয়ে মানুষের মন বুঝা বড় দায়”, চিন্তা করিস না আমার টার সাথে কথা বলে তোকে একটা ব্যবস্থা করে দিতে বলবো । আমি বললাম “সত্যিকারের ভালোবাসা জীবনে একবারই আসে রে দোস্ত। সেটা বারবার সম্ভব নয়।” আরও অন্য গল্প করে সে দিনের মত দিনটা শেষ করা হল।আমি পরের দিন জুমার নামায পড়ে বাড়ি থেকে আমার মেসে চলে আসি
। সে দিন আমার সেল ফোন সারাদিনের জন্য অফ ছিল । মেসে এসে ফোন অন করতেই দেখি অনেক ম্যাসেজ এসেছে ,কারন মিসড কল এলার্ট করা ছিল তাই কে কে কয়বার কল দিয়েছে তা আমি দেখতে পারলাম । হঠাৎ দেখি একটা চিরচেনা নাম্বার থেকে অনেক বার চেষ্টা করেছে কিন্তু ফোন যে অফ ছিল ! আমি জানি না কি জন্যই বা আমাকে শেষ ঠিকানায় পৌছে দিয়ে পিছু ডাকছে ! অনেক কৌতুহল নিয়ে পড়াশুনায় বসতে চাইছি কিন্তু কিছুতেই মন বসাতে পারছি না । হঠাৎ সেই নাম্বার থেকে কল আসল।আমি বিলম্ব না করে রিসিভ করি
আমিঃ হ্যালো আস্সালামু আলাইকুম।
ওপার থেকে ঃ মেয়ে কন্ঠে অআলাইকুমুস্সালাম। বলে আবারও হ্যালো . . . .বলে
আমিঃ হ্যা ! ম্যাডাম আমি শুনতে পারছি ..বলুন কি ভাবে সাহায্যে করতে পারি ?
( কর্ণপাত না করে )ওপার খেকেঃ কেমন আছো?
আমিঃ যেমন থাকার কথা !
ওপার থেকেঃ আমি তোমাকে দেখেছিলাম গত কাল?
আমিঃ মানে কি শুনতে চাচ্ছো আমি এখন কেমন আছি ? তবে শুন আমি ভাল আছি ! তুমি কেমন আছো?
(কথাটা অন্য পথে নিতে প্রশ্ন গুলো করা)
ওপার থেকেঃ ভাল। তুমি এখন কোথায় ?
আমিঃ মেসে।
ওপার থেকেঃ তার মানে তুমি কি সকালেই চলে গিয়েছো?
আমিঃ হ্যাঁ। আর কি কিছু বলবে ?
ওপার থেকেঃ কেন?
আমিঃ সময় নেই আমার। কাল পরীক্ষা। (যাতে কোন আর প্রশ্ন না করার সুযোগ থাকে।)
ওপার থেকেঃ ও । তুমি তো এখনও খুব ব্যস্ত লোক ! তো সরি।
আমিঃ সরি বলার কি আছে ? আর বা কেন আমি পরের লোকের সাথে কথা বলবো ? আর আমি ব্যস্ততা দেখায় না কে দেখায় তা লোকে জানে ! (দুজনই অভিমানের সুরে কথা হচ্ছে । কিন্তু এই কথা গুলো এখন বলে আর কোন লাভ নেই আমি মনে মনে বলি।)
রেগে ওপার থেকেঃ তুমি নিজেকে কি মনে কর ?
আমিঃ মানুষ ! তুমি এখন কোথায় ? কথা কেউ শুনবে না তো ! (অন্য দিকে নিতে প্রশ্ন করা।)
ওপার থেকেঃ শুনুক তাতে তোমার কি ? তুমি একটা স¦ার্থপর !
আবাক হয়ে আমিঃ কেন কেন ? তোমার স্বামী কে কি আমি নিয়ে নিয়েছি ? (তখন ও স্বাভাবিক ভাবে কথা বলে । আমার মনে হল এতক্ষন ও যা যা বলেছে সব মনে হয় মন ভুলে বলেছে। )
তাই ওপার থেকেঃ আমার স্বামীর সাথে কথা বলবে ? (ওর কথা শুনে আমি বুঝি যে ও এখনও আমাকে ভাল একজন বন্ধু হিসাবে পেতে চাই।তাই আমি বলি হ্যাঁ নির্দ্বিধায়। )
আমিঃ হ্যাঁ । কোথায় সে ?
ওপার থেকে বলেঃ ঐ পাশে । দাড়াও এখনি দিচ্ছি।(এই বলে তার স্বামী কে ফোন টা দিল ) আমার একজন ভাল বন্ধ’ নাও কথা বল।
আমিঃ হ্যাঁলো আস্সালামু আলাইকুম।
ওর স্বামীঃ অআলাইকুমুস্সালাম। কেমন আছেন?
আমিঃ আল্লাহর রহমতে ভাল আছি।আপনি কেমন আছেন?
ওর স্বামীঃ ভাল । একদিন আসেন আমাদের ছোট্ট বাসায়?
আমিঃ পৃথিবীটা তো গোল তাই একদিন অবশ্যই দেখা হবে।তো ভাল থাকেন ,কাল আমার পরীক্ষা । আল্লাহ হাফেজ।
ওর স্বামীঃ হেঁসে । তা অবশ্যই । আচ্ছা রাখি।
এই বলে কথা শেষ করে আমি তার জন্য দোয়া করি , তারা সুখে-শান্তিতে বসবাস করুক ।আর আমার ভালবাসা চির অমর হয়ে থাক। দূরে থাকলেও তো তাকে একবার না একবার দেখতে পারবো।কিন্তু দুজনের কেউ যদি ভুল করে না ফেরার দেশে চলে যেতাম তা হলে আজ কি হতো?……………
আজ একজন ভাল বন্ধু হয়ে থাকতে পারতাম না । সব কিছুই হারাতে হতো আমার।
সুতরাং সবার কাছে অনুরোধ ভালোবেসে অভিমান করে চিরদিনের জন্য দূরে না যেয়ে কাছে থাকা ভাল।তবে যাই হোক তার জন্য শুভ কামনা রহিল সে তার স্বামীকে নিয়ে হাজার বছর বাঁচুক। ভালোবাসার দিবসে এই কামনা রহিল।
লিখেছেন-মোঃ শাহীন আক্তার।
যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
কম্পিউটার বিভাগ।