সোমবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » অনলাইন ভালোবাসা » প্রথমে হাসির শব্দ
প্রথমে হাসির শব্দ
এমনেতেই আজকে আমার কাছে সবসময়ের কঠিন পরীক্ষা differential equation তার উপর যদি কেও হাসাহাসি শুরু করে কেমন লাগে, তবে বিশ্বাস কর সেদিন সামনে তাকিয়ে এক অপরূপ চোখের দেখা পেয়েছিলাম। তুমি আর তোমার বান্ধবি বিকেলের নিস্তব্ধ পরিবেশ কে হাসির শব্দে ভেঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছিলে, এখন আমার মনে পড়ে আমাদের লাইব্রেরি এর সামনে তোমাকে প্রথম দেখা।
সন্ধ্যা রাত, ঈদ আর একদিন বাকি আব্বু বলল বাজার এ যেতে হবে, কি আর করা গেলাম, রাতে কেন যে এত মানুষ বাইরে বের হয় তা আমার কাছে অবাক লাগে। একটু যেতেই আবার সেই চোখ এবার আমাদের দুজনার চোখে চোখ, তুমি যথারীতি স্বাভাবিক আর আমার তখন মাথায় হাত, এটা কি করে সম্ভব তুমি এই এলাকায় কেমন করে!!!!
আমাদের প্রথম দেখার পর, একদিন লাইব্রেরি তে বসে ছিলাম, একটু পর দেখলাম তুমি অনেক সুদর করে সেজে লাইব্রেরি তে এসে আমার টেবিল থেকে একটু দূরে বসে, বই পড়তে শুরু করলে। অবাক হলাম আজকে তো ভার্সিটি তে কোন অনুষ্ঠান নেই, কত বিশেষ দিবস ও না তাহলে এত সাজার কারন কি, এই নিয়ে বন্ধুদের সাথে হাসাহাসি করছিলাম। একটু পর কি একটা শোরগোল আমার দৃষ্টি তোমার দিকে নিয়ে গেলো, জুনিয়র কিছু ছেলে একটা ছেলের ছবি তুলছে যে ছেলের ঠিক অপর পাশে তুমি বসে আছ, বুঝতে বাকি রইল না যে ওরা তোমার ছবি তুলছে। যেন আজিব এক চিড়িয়া পেয়েছে তোমাকে, লাইব্রেরি তে সবাই তামাশাটা ভালই উপভোগ করছিল, আমিও করছিলাম না এটা বলব না। তবে তোমাকে দেখে খারাপ লাগছিল, তুমি এক দৃষ্টিতে নিচে তাকিয়ে ছিলে, হাসি মুখটায় যেন বর্ষার কাল মেঘ এসে ভর করেছিল, তবে এত কিছু সত্ত্বেও তুমি চলে যাও নি, নিশ্চুপ বসে ছিলে।
মোটামুটি খোঁজার পর তোমার facebook ID টা পেলাম, প্রোফাইল পিকচার এ তোমার সেই হাসি মাখা দুচোখ, অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছ। তোমাকে একটু একটু করে জানা ও ভালবাসার শুরু এখান থেকে, বড় বিচিত্র তুমি, কখন মনে হয়েছে অবুঝ শিশু কখনও অতি চালাক কখনও রাগী আবার কখনও একজন অসাধারণ মানুষ । তাই তোমার নাম দিয়েছি “the magnificent puzzle” মনে পরে এটা শুনে তুমি হেসেছিলে। আমাদের প্রথম কথা হয় facebook এ, জানি না কেন অল্প কিছু দিনেই আমরা দুজনের ভাল বন্ধু হয়ে যাই, অন্তত এতা আমি মানি। একবার তুমি জিজ্ঞাস করেছিলে আমাদের মাঝে সম্পর্ক কি, আমরা কি বন্ধু? অবশ্যই সবার আগে তুমি আমার বন্ধু, কিন্তু এটা কোন অপরাধ না বন্ধুকে ভালবাসা। তোমার ভালবাসা পাইনি, ঠিক আছে জীবনে সব কিছু পেলে, না পাবার মাঝে কষ্টটা কিভাবে বুঝবো।
যেদিন তোমার সাথে ভার্সিটিতে প্রথম কথা বললাম, বিশ্বাস কর আমি সব ধরনের অপমানের জন্য প্রস্তুত ছিলাম কিন্তু তুমি সবসময় আমাকে অবাক করেছ, সেইদিনের পরে যতবার তোমার সাথে দেখা হয়েছে ওই হাসি মুখটা ততবার দেখেছি, এর চেয়ে বেশি কিছু আমি আর কি চাইতে পারি। সবসময় চেয়েছি তোমার কষ্টগুলো মুছে দিতে, বলব না সুযোগ পাইনি, হয়ত আমার ভালবাসা তোমার মত অসীম না। বড় দুর্ভাগা সে যে তোমাকে পেয়েও চিনতে পারেনি।
তোমাকে মনের কথাগুলো বলা হয়নি, হয়ত আমাদের এই ছোটগল্পের আর বাকি আছে, আবার হয়তবা এখানেই শেষ। তবু তোমার বিশ্বাস কে আঘাত দিতে পারব না। কে বলেছে ভালবাসা শুধু এক তরফা হয় না।প্রতি ভালবাসা দিবসে তোমার দেয়া গানটা শুনতে শুনতে হারিয়ে যাব, তোমাকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখব, রাস্তায় চলার পথে প্রতিটি মুখে তোমাকে খুজে বেড়াবো, প্রতিদিন তোমার ফেসবুক ওয়ালটা দেখব, প্রতি বছর তোমার জন্মদিনে যাকে পাব তাকেই ফ্রী খাওয়াব, তোমার জন্য কবিতা লিখব…..
আধার পথে হেঁটে হৃদয়ের জানালায়,
কখনো জল চোখে নিশ্চুপ হাহাকার
হৃদয়গ্রাসী তিক্তবানী আর ঘৃণার ফুলঝুরি,
হতাশার হিমশিতল অনুভূতি
এবং বোবা মনের অব্যাক্ত বুলি
ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি……
লিখেছেন- আনোয়ারুল সিফাত
খিলগাঁও, ঢাকা।