সোমবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » অনলাইন ভালোবাসা » তোমাকে আরো কিছু বলতে চাই
তোমাকে আরো কিছু বলতে চাই
শিশু,কিশোর পেরিয়ে যখন যৌবনে এসে পা দিলাম তখন মনে হল আমার একজন জীবন সাথী দরকার।মা বাবাকে হারানোর পর আমার জীবনটা কেটেছে অন্যের বাড়িতে লজিং থেকে।সংসার কি জিনিস আগে তা বুঝিনি আর যখন আস্তে আস্তে বুঝতে সুরু করলাম তখন মামির সহযোগিতায় তোমাকে দেখতে গিয়ে আমি নিজেকে হারিয়ে ফেললাম তোমার মাঝে।সে সময় আমার ভিতর অন্য রকম এক অনুভুতি কাজ করেছিলো এবং মনে হয়েছিলো তুমি যেন শুধু আমার জন্যই পৃথিবীতে এসেছো।সেই চেনা মেয়েটি যেন আমার পাশে বসে আছে এবং এও মনে হয়েছিলো তোমার সাথে যেন অনেক দিন ধরে প্রেম চলছিলো।সব চেয়ে বেশি অলোকিক ঘটনা ছিলো তোমার নাম কারন তোমার নামের সাথে আরেক জনের নামের মিল ছিলো।বাসর রাতে যার কথা তোমাকে বলেছিলাম।এমন ঘটনা আমার মনে হয়না কারো জীবনে ঘটেছিলো কিনা।সাথে সাথে মামিকে ডেকে বলেছিলাম ওকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে এবং এই ললনা আমার জীবন সঙ্গী হতে পারে যদি সে রাজি থাকে।পরে শুনলাম তুমিও নাকি আমাকে দেখা মাত্র positive answer দিয়েছিলে।সে সময় আমার বেতন ছিলো একেবারে অল্প তাই চিন্তা এসে আমাকে ভর করেছিলো এই ভেবে যে, তোমাকে নিয়ে কিভাবে চলবো।বর ভাইয়ের সাহায্য সহযোগিতায় তোমাকে বিয়ে করার তিন মাসের মাথায় ভাগ্যের উপর ভর করে মাত্র দশ টাকা পকেটে করে তোমাকে নিয়ে বের হলাম but কোথাও ঠাই না হওয়াই শেষে আমার শাশুড়ী ও তোমার ভাই(মিলন ভাই) এর সাহায্য ও সহযোগিতায় আমাদের জন্য একটা ছোট বাসা ভাড়া করা হল।তখন যে বেতন পেতাম তাতে আমাদের ঘর ভাড়া দিতে প্রায় সব টাকা চলে যেতো।মিলন ভাই ও আমার শাশুড়ীর একান্ত সাহায্য ও সহযোতায় খুব কষ্টে দিন যাচ্ছিল।এর পর যখন শুনলাম তোমার কোলে আসছে সন্তান তখন অনাগত সন্তানের জন্য যেমন আনন্দ লাগছিলো তেমনি চিন্তা আমাকে গ্রাস করেছিলো।কারণ নিজেরা চলতে পারিনা তার উপর সন্তানকে কিভাবে লালন পালন করব।এখানেও মিলন ভাই সাহায্যের হাত বাড়ালেন এবং যেভাবে তিনি financial help করলেন তা কখনো ভুলতে পারবোনা।তোমাকে আমি আমার নিজের টাকা দিয়ে একটা সুতি কাপড়ও কিনে দিতে পারিনি কারন আমার সেই ability ছিলো না।এতে তোমার কোন অভিযোগ ছিলো না কারণ বেতনের রশিদ সহ সব টাকা তোমার হাতে দিয়ে দিই।আমার ভাগ্যর সাথে তোমাকে জড়িয়ে নিজেকে খুব অযোগ্য husband মনে হতো।কিন্তু আমাকে ভালোবেসে তুমি সব কিছু মেনে নিয়েছ কারণ আমি জানি তুমি আমাকে অনেক ভালোবাস।তোমাকে আমি কোথাও বেড়াতে নিয়ে যেতে পারিনা।ঈদ আসলে তোমার অনেক কষ্ঠ হতো আমি তা ভালো ভাবে জানতাম কারণ তোমাকে আমি অতিরিক্ত কোনো টাকা তোমার হাতে দিতে পারতাম না।ঈদে কোরবানে কাউকে কোন কিছু ইচ্ছা থাকলেও দিতে পারতাম না।এমন কি তোমার জন্মদিন অথবা আমাদের wedding anniversary তেও তোমাকে একটি লাল গোলাপ ছাড়া আর কিছু দিতে পারতাম না এখনো দিতে পারি না।একমাত্র মেয়ের জন্মদিনেও তেমন কোন কিছু করতে পারতাম না।আজ আমরা বিবাহিত জীবনে দশ বছরে পা দিয়েছি কিন্ত চাওয়া পাওয়ার হিসাবে আমি Husband হিসাবে বিন্দুমাত্র দায়িত্ত টুকূও পালন করতে পারিনি এটা আমি ১০০% believe করি।সারা জীবণ অফিস করে করে তোমাদের সময় দিতে পারিনি।বিয়ের পর পর এসব নিয়ে রাগ করতে কিন্তু যখন দেখলে আমার চাকরি আমার কাছে first priority তাই তুমি এসব নিয়ে আমার সাথে রাগ করা বন্ধ করে দিয়েছ সব মেনে নিয়েছ নিজের অজান্তে।তুমি সব সময় আমাকে অভিযোগ করে আসছো পাশে বসে তোমার সাথে ভালো করে কথা বলিনা।এত কিছুর পরও তুমি আমার সংসার করে যাচ্ছো এটা ভেবে আমি নিজেও অভাগ হয়ে যাই।Recently আমি ভালো একটি কম্পানিতে join করার পর পরিবারে কিছুটা হতাশা কেটেছে।এখন তোমাকে ও মেয়েকে নিয়ে দুইটা ডাল-ভাত খেতে পারি কিন্তু এখনো অতিরিক্ত কোন খরচ করতে পারি না।
আজ ভালোবাসা দিবসে তোমাকে আমার অনেক না বলা কথা বলার ছিলো কিন্তু সীমাব্ধতার জন্য অনেক কথা রয়ে গেল মনের ভেতর।তবুও বলতে চাই তুমি আমার জীবনে এলে,ভালোবাসলে এবং লাগামহীন জীবনের আবসান ঘটিয়ে সুন্দর ও সুশ্রিঙ্খল জীবন দান করলে যাহা সপ্নেও কল্পনা করিনি।একমাত্র তোমার ভালোবাসার শক্তিতে আমি আজ এই সুন্দর সন্মানজনক অবস্থানে আসতে পেড়েছি।আমি loudly বলতে পারব আমার মত ভাগ্যবান Husband এই পৃথিবীতে আর দৃতীয়টি নেই যদিও থাকে তাহলে বলতে হবে সেও আমার মত lucky।
পরিশেষে এইটুকু বলতে চাই তোমার তুলনা শুধু তূমি এর কোন বিকল্প নেই।ভালোবাসা দিবসে তুমি, আমি এবং আমাদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে সুখী ও সুন্দর জীবন প্রত্যাশা ছাড়া আমার আর কিছু চাওয়া-পাওয়ার নেই।Cordially বলতে চাই “HAPPY VALENTINE’S DAY”.
তোমারই সব সময়ের সঙ্গী—–
এম,এ,আর ভূইঁয়া
লিখেছেন- এম,এ,আর ভূইঁয়া
rahimbhuyan@gmail.com