সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
সোমবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » অনলাইন ভালোবাসা » এমনো হয় ?
প্রথম পাতা » অনলাইন ভালোবাসা » এমনো হয় ?
৫৬৭ বার পঠিত
সোমবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

এমনো হয় ?

সিঁড়ির ধারে ঠিক প্রতিদিনের মতোই বসে আছে রাতুল আর সোহাগ। দু’জনের চোখই একদিকে স্থির নেই, চারদিকেই যেন ঘুরছে আর কি খুঁজছে। দু’জনের মুখই কালো হয়ে আছে । একবারে তীর্থের কাকের মতো তাদের অবস্থাটা। সময়টা ছিল বিকেল বেলা। কিন্তু হঠাৎ তাদের মুখে একটু একটু করে হাসি ফুটে উঠতে শুরু করলো। অবস্থাটা এমন হতে লাগল যেন পিপাসায় তাদের মুখ শুকিয়ে যাচ্ছিল কিন্তু, হঠাৎ তাদের মুখে একটু পানি পড়ল এবং প্রাণ ফিরে পেল তারা ।কিন্তু হঠাৎ মুখ ঘুরিয়ে তারা একে অপরের দিকে তাকাতে লাগল এবং মনে হচ্ছিল এক জনের হাসি মুখ যেন আর একজনের নিকট কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ালো।হঠাৎ রাতুল বলেই ফেলল, এই তুই এমনভাবে তাকিয়ে আছিস কেন ঐ দিকে? মনে হচ্ছে তোর কিছু হয় বা তোকে ও কথা দিয়েছিল এখানে আসবে। সোহাগের সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর, তা আমাকে কথা না দিক কেউ হতে কতক্ষণ ?
রাতুল বলল, ঠিকই ধরেছিস সে তোর ভাবী হতে যাচ্ছে।

সোহাগ বলে, তুই কি চোখের মাথা খেয়েছিস ? দেখছিস না আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

রাতুল বলল, আমি এ মেয়েকে ভালো ভাবেই চিনি। ও লক্ষী টেরা যার দিকে তাকায় মনে হয় যে তার পাশের জনের দিকে তাকিয়ে আছে।

সোহাগ বলল, তুই কি বলছিস? এত সুন্দর মেয়ের এরকম হবে কেন! আমি এক্ষুনি ওর সঙ্গে গিয়ে কথা বলছি।

যেমন কথা তেমন কাজ। সোহাগ ঠিকই গিয়ে তাদের সামনে থাকা মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করে ফেলল,আপনি কি টেরা নাকি?
সোহাগের ভাগ্যে যা হওয়ার তাই হলো। মেয়ে কষে সোহাগের গালে একটি চড় মারলো। চড় খেয়ে সোহাগ তার সমস্ত রাগ যখন বন্ধুকে মেরে মেটাতে আসল তখন দেখল রাতুল আর তার জায়গায় নেই। ডানে তাকিয়ে দেখে সে খুব জোরে দৌড়চ্ছে।

২.
একই এলাকায় তাদের এক বড় ভাই থাকে,নাম তার রাসেল। রাতুল দৌড়াতে দৌড়াতে রাসেলে সঙ্গে ধাক্কা খায়। রাতুল তাকিয়ে রাসেলকে দেখেই মাথা নিচু করে বলে ওঠে ‘সরি’, ভাইয়া আমি আপনাকে খেয়াল করিনি।

রাসেল বলল, আরে না, তোমার এত লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই আসলে আমি নিজেই একটি বিষয় নিয়ে বেশ চিন্তিত অবস্থায় রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম, তাই তুমি দৌড়ে আসছিলে দূর থেকে তা আমি ও লক্ষ্য করিনি।

রাতুল বলল, বিষয়টা কি ভাই? বাসায় কোনো সমস্যা হয়েছে নিশ্চয়ই, যাই বলেন না কেন ভাই আপনার আসলে একটা কিছু করা উচিত। ঘরের একমাত্র ছেলে আপনি। নিশ্চয়ই কাকা আজকেও আপনার সঙ্গে রাগারাগি করেছে বাসায়।

রাসেল বলল, আসলে, তোমরা পারও বটে, আত্মবিশ্বাসটা তোমার এমন যেন তুমি কোথাও বসে গোপন ক্যামরার সাহায্যে আমাদের ঘরের এসব দেখেছিলে। বিষয়টা হচ্ছে, এক মেয়ের চাহনি ।

রাতুল বলল, আরে কি বলেন ! আপনি আমার সাথে মজা নিচ্ছেন নাকি ? সেই ঘুরে ফিরে আবার মেয়ের চাহনি।

রাসেল বলল, আমি প্রায়ই এ রাস্তা দিয়ে আসার সময় লক্ষ্য করি যে, একটি মেয়ে তিন তলা থেকে আমার দিকেই তাকিয়ে থাকে। কি বলব তোমাকে, মেয়ের চেহারাটাও কম যায় না। প্রথম দিন তার এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে আমি ও এ
রাস্তা দিয়ে আসা যাওয়াটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছি।

এদিক দিয়ে রাসেলের কথা শুনে রাতুল মুচকি মুচকি হাসতে থাকে। রাসেল তার দিকে তাকালেই তার হাসি থেমে যায়।

রাসেল বলল, কিন্তু, মেয়ের চোখের দিকে তাকালে মনে হয় সে যেন আমাকে কিছু বলতে চাচ্ছে। অথচ কখনই তাকে নিচে কিংবা রা¯তায় দেখি না। বলতো রাতুল কি করা যায়?

রাতুল বলল, এখন বাসায় যান ভাই, কাল ঠান্ডা মাথায় এর একটা সমাধান ঠিকই বেরিয়ে আসবে।

৩.
পরের দিন আবার রাতুল আর রাসেল দু’জনেরই দেখা হয় একই রা¯তায়।

রাসেল - কি কোনো কিছু ভেবেছ?
রাতুল - আজ আপনি ঐ মেয়ের বাসার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আমিও আপনার সঙ্গে যাব এবং মেয়েটিকে দেখবো।

রাসেল বলে, চল ।

তারা দু’জনেই হাঁটতে শুরু করলো এক পর্যায়ে ঐ মেয়ের বাসার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় রাতুল ঠিকই লক্ষ্য করলো যে মেয়েটি এমনভাবে রাসেলের দিকে তাকিয়ে আছে, যেন রাসেলকে কাছে ফেলে সে তার ভালোবাসার কথা ঠিকই জানিয়ে দিত। কিন্তু, মেয়েটির বাসায় কেউ তাকে জোর করে ধরে রেখেছে কিংবা বেঁেধ রেখেছে।

রাতুল বললো, ভাই আপনার আর এক মুহূর্তও দেরী করা ঠিক হবে না। আপনি তার দিকে হাত উচুঁ করে হায় দিন।

রাসেল তাই করতে গেল কিন্তু তাঁকিয়ে দেখল, মেয়েটি আর নেই। তারা সেদিন কথা বলতে বলতে চলে গেল।

৪.
পরের দিন বেশ সকাল বেলাই রাসেল মেয়েটির বাসার সামনে দিয়ে ব্যায়াম করতে দৌড়ে যাচ্ছিল । হঠাৎ ঘাঁড় উচুঁ করে উপরের দিকে তাকাতেই দেখে যে মেয়েটি ঠিক আগের জায়গাতেই বসে এবং সেই আগের মতোই তার দিকে চেয়ে আছে। রাসেল আগের দিনের মতোই তার দিকে তাঁকিয়ে হাত উচুঁ করে হায় দেয়।কিন্তু, রাসেল যা আশা করেছিল ঘটেছে তার ঠিক উল্টোটা । মেয়েটির মুখ হঠাৎ বিমর্ষ হয়ে ওঠে এবং সে বসা থেকেই উল্টো দিকে ঘুরে যায় তারপর, দাঁিড়য়ে আ¯েত ভেতরের দিকে চলে যায়। মেয়েটির শরীরে সে দিনের সকালে খুব সুন্দর একটি চাদর জড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে তাকে ভালই লাগছিল। রাসেল বিষয়টি আবার রাতুলের সঙ্গে শেয়ার করে।

রাতুল বলল, বুঝতে পেরেছি, ভাই আপনার সঙ্গে চিটিং হয়েছে। আসলে মেয়েটি আপনাকে দুর্বল করার জন্যই এরকম কিছু একটা করেছে। সুন্দরী মেয়েদের কাছে বর্তমানে এটা একটা ফ্যাশন, তারা কোনো সহজ সরল কিংবা ভদ্র ধরনের ছেলেকে নিয়ে এরকমটা করেই মজা পায়। আপনি ঠিকই দেখবেন, তাকে আর বারান্দায় দেখা যাচ্ছে না। কারণ, আপনি এখন বিষয়টা আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন, সে তা বুঝতে পেরেছে।

পরে ওই রা¯তা দিয়ে আসা যাওয়া করতে গিয়ে সত্য সত্যই মেয়েটিকে আর দেখা যায়নি। বেশ ক’দিন পর একদিন হঠাৎ ঐ মেয়েরা যে বাড়িতে থাকে সে বাড়িতে যেন কার বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছিল দেখে, রা¯তার একজনকে ডেকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারে যে তিন তলায় যারা থাকেন সে ঘরের মেয়ের বিয়ে হচ্ছে। রাসেল শোনা মাত্রই অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে বাসায় গিয়ে শুয়ে পড়ে। রাসেলকে তখন বেশ অসহায় দেখাচ্ছিল। রাতুল তখনই তার বাসায় আসে।

রাসেল বলল, সত্যিই তুমি যা বলেছিলে সব ঠিক। আমি এ ধরনের বাজে মেয়ের ফাঁদে পড়িনি এটাই আমার জন্য ভালো হয়েছে। এতদিন কত সময়ই না নষ্ট হয়েছে, নিজের পড়ালেখা,ঘুম সব হারাম হয়েছিল। দেখো, এ মেয়ে স্বামীর ঘরেও সুখী হবে না শুধু তার উদ্ভট চিন্তা ভাবনার কারণে।

রাতুল বলল, দেখলেন তো, কাছের মানুষ কখনই আপনার খারাপ চাইতে পারে না। যাক যা হয়েছে ভালোই হয়েছে।আমি আজ আসি তাহলে।

৫.
৩ মাস পর, সেই একই রা¯তা দিয়ে যাওয়ার সময় রাসেল মেয়েটিকে আবার দেখতে পায়। তবে এবার সে রা¯তাতেই মেয়েটিকে দেখতে পায় এবং সঙ্গে একটি ছেলে।মেয়েটি তখনও চাদর গায়ে জড়িয়ে রেখেছিল। রাসেল তাদের দেখে, পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে ছেলেটি নিজ থেকে এসেই রাসেলের হাত ধরে এবং বলে দয়া করে ঐশীকে ভুল বুঝবেন না।

রাসেল বলে, আপনি আমাকে কিভাবে চেনেন? আর আপনিই বুঝি ঐ মেয়ের স্বামী?

ছেলেটি উত্তর দিল না ভাই, আমি তার বোনের স্বামী। সে আমার বোনের বড় বোন। ডাক্তারের পরামর্শে, তাকে নিয়ে আমরা দূরে কোথাও ঘুরতে যাচ্ছি। কেননা, এভাবে আর বেশি দিন থাকলে সে মানসিকভাবে চরম বিপর্যয়ের দিকে ঝুঁকে পড়বে।

রাসেল বলে,কেন, কি হয়েছে তার?

ছেলেটি বলে, বেশ কয়েক বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় সে তার দুটি হাতই হারিয়ে ফেলে এবং হারিয়ে ফেলে বাক শক্তি। তখন থেকেই সে বুঝতে পারে যে দুনিয়ার অনেক আনন্দ,চাওয়া - পাওয়া আর তার জন্য নয়। সব সময়ই সে নিজেকে গুটিয়ে রাখতো আর বিমর্ষ হয়ে থাকতো।কিন্তু একপর্যায়ে তাকে সুস্থ হতে দেখা যায়। সে তখন প্রায় বারান্দায় এসে বসে থাকতো আর সামনের রা¯তার দিকে তাকিয়ে থাকতো।এ সময় তাকে ঘরেও বেশ হাসি খুশি দেখা যেত।ক’দিন না যেতেই আবার সে আগের অবস্থা। পরে আমার স্ত্রী অর্থাৎ তার বোনের কাছে আমি সব জানতে পারি।ওরা দুই বোন একে ওপরের সঙ্গে সবকিছুই শেয়ার করতো। সে প্রায়ই বলতো যে, আমি কারও কাছে বোঝা হয়ে থাকতে পারবো না, আর নিজের ভালোবাসাকে আদায় করতে কাউকে ঠকাতে পারবো না।

রাসেল এতক্ষণ কথাগুলো শুনছিল মনযোগ দিয়ে, শেষের দিকে সে মাথার চুল দু’হাত দিয়ে টেনে ধরে এবং আস্তে করে হাঁটু ভেঙ্গে বসে পড়ে । তারপর, কিছুক্ষণ পরই কান্না কান্না চোখ দুটো হাতের ওপরে এনে ঐশীর দিকে তাকিয়ে থাকে। ঐশীর চোখ থেকে তখন পানি পড়ছিল।

লিখেছেন-ফারুক আহমেদ,
ঢাকা



পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
২০৩০ সাল নাগাদ ৫ হাজার সেমিকন্ডাক্টর প্রকৌশলীর কর্মসংস্থান করবে উল্কাসেমি
দেশের বাজারে লেক্সারের জেন৫ এসএসডি
বাজারে এলো স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট চিপসেটের রিয়েলমি জিটি ৭ প্রো স্মার্টফোন
সর্বাধিক বিক্রি হওয়া স্মার্টফোনের তালিকায় শাওমি রেডমি ১৩সি
নাসার গ্লোবাল ফাইনালিস্টের তালিকায় বাংলাদেশের ‘টিম ইকোরেঞ্জার্স’
দেশের বাজারে ভেনশন ব্র্যান্ডের স্মার্ট ডিসপ্লে যুক্ত পাওয়ার ব্যাংক ও ইয়ার বাডস
টিকটক অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪ এর ভোটিং শুরু
টেক্সটেক আন্তর্জাতিক এক্সপো ২০২৪ এ ট্যালি প্রাইম ৫.০
ভিসাকার্ড পেমেন্টে ফুডপ্যান্ডায় ছাড়
বাংলালিংকের মাইবিএল অ্যাপে রয়্যাল এনফিল্ড বাইক জেতার সুযোগ