বুধবার ● ৩০ জানুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » গুগলের তথ্য রক্ষার অঙ্গীকার
গুগলের তথ্য রক্ষার অঙ্গীকার
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ই-মেইল ও অন্যান্য ডিজিটাল তথ্য সরকারি সংস্থার কাছ থেকে যেকোনো মূল্যে রক্ষার অঙ্গীকার করেছে গুগল। এ লক্ষ্যে অন্যান্য ইন্টারনেট সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সরকারের প্রতিনিধিদের কাছে এ বিষয়ে লবিং করার জন্য কাজ করছে তারা। গত সোমবার এক ব্লগপোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন গুগলের প্রধান আইনি কর্মকর্তা ডেভিড ড্রামোন্ড। খবর রয়টার্সের।
ব্লগপোস্টে ডেভিড জানান, অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলে কংগ্রেসকে এ-বিষয়ক আইন হালনাগাদ করানোর অনুরোধ জানাবে গুগল। এ-বিষয়ক আইন করা হয়েছে ১৯৮৬ সালে এবং বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এটি অবশ্যই হালনাগাদ করা উচিত।
তিনি আরো জানান, ব্যবহারকারীদের তথ্য জানতে চেয়ে বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছ থেকে অনুরোধের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। ২০০৯ সালের তুলনায় গত বছর এর পরিমাণ ৭০ শতাংশ বেড়েছে।
গুগলের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ৩১ হাজার ৭২ জন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর বিভিন্ন তথ্য দেয়ার জন্য সরকার ১৬ হাজার ৪০৭ বার অনুরোধ জানিয়েছে। এর বেশির ভাগই বিভিন্ন মামলার কাজে ব্যবহার করা হবে বলে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে।
ডেভিড লেখেন, ‘আমরা আইন মেনে চলা একটি প্রতিষ্ঠান। আমাদের দেয়া সেবা কারো কোনো ক্ষতি করুক তা আমরা অবশ্যই চাই না। এ কারণেই আমরা এ-বিষয়ক আইনটি হালনাগাদ করাতে চাই।’
ইন্টারনেটের শুরুর সময়ের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশনস প্রাইভেসি অ্যাক্ট চালু হয় (ইসিপিএ)। এ আইন অনুযায়ী, অনলাইনে থাকা কোনো ব্যক্তির ই-মেইল বা অন্যান্য তথ্য দেখার জন্য সরকারি সংস্থার কোনো ওয়ারেন্ট প্রদর্শনের প্রয়োজন হয় না। এ-বিষয়ক তথ্য চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলো দেখাতে বাধ্য। ব্যক্তিগত চিঠি দেখার জন্য ওয়ারেন্ট প্রদর্শন করতে হয়, কিন্তু ই-মেইল দেখার জন্য এ রকম কিছুরই প্রয়োজন হয় না।
বিষয়টির বিরোধিতা করছে গুগল, মাইক্রোসফট, ইয়াহু ও টুইটারের মতো প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের কোনো তথ্য দেখতে হলে সার্চ ওয়ারেন্ট দেখাতে হবে বলে দাবি জানাচ্ছে তারা। গোপনীয়তার সমর্থকরাও এর পক্ষে। তাদের ভাষায়, এ-বিষয়ক আইনটি এখন সেকেলে হয়ে গেছে। মানুষকে ন্যায্য অধিকার দেয়ার জন্য আইনটিতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। গত বছর সিনেটের জুডিশিয়ারি কমিটির ডেমোক্র্যাট সিনেটর প্যাট্রিক লেহি পুরনো আইনটি হালনাগাদ করার জন্য একটি বিল উত্থাপন করেন।
লেহি এ বিষয়ে গত সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, ইন্টারনেট চালুর তিন দশক হয়ে গেছে। এখন কংগ্রেসের উচিত পুরনো আইনকে হালনাগাদ করা। নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্যই কাজটি করা উচিত।
এদিকে আইনি সংস্থা ও ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। তাদের ভাষ্য, এর ফলে অপরাধের তদন্ত করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে। অনলাইন অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে।
গত বছর লেহি এ-বিষয়ক বিল উত্থাপন করলেও হাউস জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান বব গুডলাতের আরেকটি বিলের কারণে লেহির বিলটি চাপা পড়ে যায়। সেখানে অনলাইনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বলা হয়, কিন্তু গোপনীয়তার বিষয়টি রাখা হয়নি। সে সময় গুডলাতে জানিয়েছিলেন, এ বিষয়টিতেও পরিবর্তন আনা জরুরি, কিন্তু এর আগে বিষয়টির সব দিক যাচাই করতে হবে।
লেহি জানিয়েছেন, চলতি বছর আইনটির হালনাগাদ করানোর বিষয়টিকে তিনি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবেন। - এসবিবি