মঙ্গলবার ● ২২ জানুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » শীঘ্রই ইউটিউব চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে - ইনু
শীঘ্রই ইউটিউব চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে - ইনু
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে দেশ দ্রুত এগিয়ে চললেও চার মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে আছে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইউটিউব। সারা বিশ্বে ইউটিউব খোলা থাকলেও বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা পিছিয়ে পড়ছে প্রতিনিয়তই। এ ব্যাপারে বিটিআরসি এখনো সিদ্ধান্তহীনতায়। ইউটিউবের মালিক গুগলের কাছে ই-মেইল পাঠিয়েই বসে আছে বিটিআরসি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মতে, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা সরকারের ‘নির্বুদ্ধিতা’র পরিচয়। এতে জনগণের পাশাপাশি সরকারও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) কটাক্ষ করে তৈরি করা একটি মার্কিন চলচ্চিত্রকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী বিতর্ক তৈরি হলে ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইউটিউব বন্ধ করে দেয়। এখন আর ইউটিউব দেখা যাচ্ছে না। তবে বিকল্প কিছু পদ্ধতিতে বিকল্প সার্ভারে ইউটিউব ব্যবহার করতে পারছেন কিছু ব্যবহারকারী। কিন্তু বাংলাদেশের মূল সার্ভারে ইউটিউব বন্ধ থাকায় সাধারণ ব্যবহারকারীরা গুগল বাংলাদেশ, জি মেইলসহ আরও বেশকিছু জনপ্রিয় ও প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে সমস্যায় পড়েছে বর্তমান প্রজন্ম।জানা যায়, বিটিআরসির নির্দেশে দেশের ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়েগুলো (আইআইজি) ইউটিউব সংযোগ বন্ধ করে রেখেছে। দুই আইআইজি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) ও ম্যাঙ্গো টেলিকমের পক্ষ থেকে ইউটিউব ব্লক করে রাখা হয়েছে। ইন্টারনেট গেটওয়ে কোম্পানি ফাইবার অ্যাট হোমের সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক আব্বাস ফারুক জানিয়েছেন, বিটিআরসির নির্দেশ অনুয়ায়ী ইউটিউব বন্ধ রাখা হয়েছে। অনুমতি পেলেই গেটওয়ে খুলে দেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু গতকাল জানান, বিটিআরসি গুগলের সঙ্গে মিলে কাজ করছে। শীঘ্রই যাতে ইউটিউব দেখা যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, বিতর্কিত ওই চলচ্চিত্রের ভিডিও ক্লিপ সরিয়ে নিতে ১৮ সেপ্টেম্বর বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গুগলের যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য অফিসের ঠিকানায় পাঠানো হয়। এখনো কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। পরে ই-মেইলও পাঠানো হয় গুগলের ঠিকানায়। গত মাসে বাংলাদেশে গুগলের অফিস খোলা হলে সেখানে কোনো যোগাযোগ করেনি বিটিআরসি। বিটিআরসির কর্মকর্তারা মনে করছেন, গুগল বাংলাদেশের কর্মকর্তারাই আসবেন তাদের কাছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি ফারজানা আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে ইউটিউব বন্ধ রাখা নির্বুদ্ধিতার পরিচয়। শুধু ভিডিওটি ‘ব্লক’ করা যেত। পুরো ইউটিউব বন্ধ করায় অনেক ইতিবাচক উদ্যোগও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে সরকারি কার্যক্রমও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ব, কিন্তু ইউটিউব বন্ধ রাখব এমন সিদ্ধান্ত ‘হাস্যকর’। কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক ইউটিউব বন্ধ প্রসঙ্গে তার ব্লগ ও কলামে লিখেছেন, মাথা ব্যথার জন্য মাথা কাটতে হয় না। আর মাথায় উকুন হলে মাথা কাটার প্রশ্নই আসে না। চুল কেটে ন্যাড়া হওয়া চলে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ইউটিউব খুলে দিন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিবন্ধকতা দূর করুন।