বুধবার ● ১৬ জানুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » নেটওয়ার্ক নিরাপত্তায় শীর্ষে থাকার লক্ষ্য সিসকোর
নেটওয়ার্ক নিরাপত্তায় শীর্ষে থাকার লক্ষ্য সিসকোর
নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা ব্যবসা চাঙ্গা করে এ বাজারের শীর্ষস্থান দখলে আগ্রহী সিসকো সিস্টেমস। তবে এ বাজারে প্রতিষ্ঠানটির দখল ক্রমেই কমছে। এ থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছেন প্রধান নির্বাহী জন চেম্বারস। খবর রয়টার্সের।
প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা অবশ্য চেম্বারসের এ উদ্যোগের ফলাফল নিয়ে সন্দিহান। তাদের মতে, নিজস্ব সিকিউরএক্স পণ্য দিয়ে এ বাজার দখলের চেষ্টা রীতিমতো সুখকল্পনা। এ বাজারে ভালো করতে হলে নতুন নতুন অধিগ্রহণ করতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে। নতুবা এ বাজারে শীর্ষে আসার স্বপ্ন দুরূহ হবে প্রতিষ্ঠানটির।
ব্যবসা চাঙ্গা করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত ডিসেম্বরে সিসকোর ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ ক্রিস ইয়াংকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদে নিয়োগ দেন চেম্বারস। দুই তিন বছরের মধ্যে নিয়োগ ও অধিগ্রহণে ব্যয় করার জন্য ইয়াংকে সবুজ সংকেত দিয়ে রেখেছেন তিনি। চেম্বারসের মতে, সিসকোর নিরাপত্তা ব্যবসা চাঙ্গা করার জন্য ইয়াংই যোগ্য ব্যক্তি।
গত পাঁচ বছরে ছোট ছোট কোম্পানির কাছে বাজারের ১০ শতাংশ হারিয়েছে সিসকো। এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে জুনিপার নেটওয়ার্কস, চেকপয়েন্ট সিস্টেমস ও পালো আলটো নেটওয়ার্কসের মতো উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান। ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ভিডিও স্ট্রিমের মতো সব খাতেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে সিসকো। এসব ক্ষেত্রে প্রথাগত ফায়ারওয়াল জটিল নিরাপত্তা সুরক্ষা দিতে সক্ষম নয়।
নিরাপত্তা গবেষণা-পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সিকিউরসিসের বিশ্লেষক ও সভাপতি মাইক রথম্যান বলেন, সক্ষমতার ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে কয়েক বছর পিছিয়ে পড়েছে সিসকো। এ কারণেই একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণের দিকেই নজর দিতে হবে ইয়াংকে।
সিসকোও নিজেদের ঘাটতি সম্পর্কে সচেতন। নিরাপত্তা ব্যবসাকে গুছিয়ে তুলতে প্রতিষ্ঠানটি কিছু দিন ধরে নতুন কোম্পানি অধিগ্রহণের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু বাজারে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানও হাতে গোনা। সিসকোর নজর রয়েছে পালো আলটো নেটওয়ার্কস, ফায়ারআই, সোর্সফায়ার, ফর্টিনেট ও ব্যারাকুডা নেটওয়ার্কসের দিকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ইয়াংকে নিয়োগ দেয়ার আগেই কোম্পানিগুলোর যেকোনো একটি কিনে নেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
জুলাই ২০১২তে পাবলিক কোম্পানিতে রূপান্তর হয় পালো আলটো নেটওয়ার্কস। এর আগেই কোম্পানিটিকে কিনে নিতে চেয়েছিল সিসকো। কিন্তু লেনদেনের সমঝোতা না হওয়ায় সে উদ্যোগ ভেস্তে যায়। এ বিষয়ে এক সূত্র জানায়, কোম্পানির দর নিয়ে তাদের মধ্যে কয়েক শ কোটি ডলারের পার্থক্য ছিল।
গত ১২ মাসে পালো আলটো আর মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার নির্মাতা ওয়ার্কডের মতো নবীন কোম্পানিগুলোর দাম হুহু করে বেড়েছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, এদের কিনতে গেলে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোরও অর্থসংকটে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্যবসা বাড়াতে ১৯৯৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৬০টি ছোট কোম্পানি কিনেছে সিসকো। সাম্প্রতিক সময়ে সফটওয়্যার, ভিডিও ও বেতার খাতের কোম্পানিই বেশি কিনেছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৯ সালে স্ক্যানসেফকে কেনাই ছিল প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ নিরাপত্তা কোম্পানি ক্রয়। অবশ্য বর্তমানে ভালো মানের নবীন কোম্পানি কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও সেগুলোর দামের কারণে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।
ফায়ারআইকে চলতি বছরেই পাবলিক কোম্পানিতে রূপান্তর করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এর নবনিযুক্ত সিইও ডেভিড ডিওয়াল্ট। অপর পছন্দের প্রতিষ্ঠান সনিকওয়ালকে গত বছর কিনে নেয় কম্পিউটার নির্মাতা ডেল। এ অবস্থায় ফর্টিনেটের দিকেই লক্ষ্যস্থির করেছে সিসকো। রথম্যান জানান, ব্যারাকুডা নেটওয়ার্কসের শেয়ারও গোপনে কিনে নিতে পারে সিসকো। - এসবিবি