রবিবার ● ৬ জানুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » স্মার্টফোন বাজারে অ্যাপলকে আরো পেছনে ফেলবে স্যামসাং
স্মার্টফোন বাজারে অ্যাপলকে আরো পেছনে ফেলবে স্যামসাং
স্মার্টফোনের বিক্রির দিক দিয়ে চলতি বছরে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপলকে আরও পেছনে ফেলবে স্যামসাং। এ বছর খাতটিতে কোম্পানিটির বিক্রি প্রবৃদ্ধি হবে ৩৫ শতাংশ। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকস জানায়, একাধিক মডেল ও বিভিন্ন দামের স্মার্টফোন দিয়েই এ অর্জনে সক্ষম হবে দক্ষিণ কোরীয় কোম্পানিটি। খবর রয়টার্সের।
প্রতিষ্ঠানটির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, এ হুমকি মোকাবেলায় আগামী বছর আইফোন মিনি বাজারে আনতে পারে অ্যাপল। ব্যয়বহুল আইফোনের বিকল্প হবে অপেক্ষাকৃত সস্তা এ পণ্য।
স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকসের নির্বাহী পরিচালক নিল মস্টন বলেন, বিভিন্ন মডেল ও দামের স্মার্টফোন থাকায় এ বছর অ্যাপলের থেকে বিক্রির দিক দিয়ে খানিকটা এগিয়ে যাবে স্যামসাং।
চলতি বছর বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোনের সরবরাহ হবে সাড়ে ৮৭ কোটি ইউনিট, যা গত বছরের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি। অবশ্য ২০১১ সালের তুলনায় ২০১২তে বিক্রি বেড়েছিল ৪১ শতাংশ। মূলত উত্তর আমেরিকা, চীন ও এশিয়া-পশ্চিম ইউরোপের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সামান্য কমে যাওয়ায় স্মার্টফোন বিক্রির প্রবৃদ্ধি তুলনামূলক কম হচ্ছে বলে জানান মস্টন।
গত বছর সাড়ে ২১ কোটি ইউনিট বিক্রি করলেও এবার তা ২৯ কোটির ঘরে নিয়ে যেতে আশাবাদী স্যামসাং। একইভাবে ১৮ কোটি আইফোন বিক্রির আশা করছে অ্যাপল, যা গত বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি। স্যামসাংয়ের ক্ষেত্রে এ প্রবৃদ্ধি ৩৫ শতাংশ।
এ বিক্রির মাধ্যমে বিশ্বের স্মার্টফোনের বাজারে স্যামসাংয়ের দখল হবে ৩৩ শতাংশ। গত বছর এ হার ছিল ৩১ শতাংশ। অন্যদিকে এ বাজারে অ্যাপলের দখল হবে ২১ শতাংশ। গত বছর এ হার ছিল ২০ শতাংশ।
চলতি বছরেই স্যামসাংয়ের মূল স্মার্টফোন গ্যালাক্সি এসের চতুর্থ সংস্করণ বাজারে আসতে পারে। এপ্রিলে বাজারে আসবে গ্যালাক্সি নোট থ্রি ফ্যাবলেট এবং আরও কয়েকটি মডেলের স্মার্টফোন। মস্টন বলেন, স্যামসাং পণ্যের নকশা অনেক বেশি বৈচিত্র্যপূর্ণ। এ কারণেই অ্যাপলের চেয়ে বেশি বিক্রিতে সক্ষম কোম্পানিটি।
গত বুধবার টপেকা ক্যাপিটাল মার্কেটসের গবেষক ব্রায়ান জে হোয়াইট জানান, চীন ও ভারতের মতো বাজারগুলো ধরার জন্য ছোট আকৃতি ও স্বল্প মূল্যের আইফোন মিনি নিয়ে আসতে পারে অ্যাপল।
হোয়াইট জানান, চলতি বছরের মে কিংবা জুনে আইফোন ৫এস বাজারে আনতে পারে অ্যাপল। নতুন মডেলটির স্ক্রিনেও রকমভেদ থাকবে, যা আইফোন মিনি আনারই পূর্বপ্রস্তুতি।
অবশ্য মস্টন জানান, আগামী বছরের আগে আইফোন মিনি বাজারে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, তিন বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি প্রিপেইড গ্রাহকের জন্য উপযোগী আইফোন মিনি আনার কোনো বিকল্প নেই। কারণ বর্তমানে আইফোন কেনার সামর্থ্য এদের বেশির ভাগেরই নেই।
বর্তমানে আইফোন ৫-এর বিক্রি ও প্রবৃদ্ধি দুটোই দারুণ বাড়ছে। এ কারণে আইফোন মিনি আনার মতো অবস্থায় নেই অ্যাপল। আনলেও সেটা খুব বেশি লাভজনক হবে না অ্যাপলের জন্য। সাধারণত কোনো অ্যাপল পণ্যের বিক্রিতে একটু ভাটা পড়ার পরই নতুন পণ্য বা সংস্করণ আনা হয়।
মস্টন বলেন, ‘আশা করছি ২০১৪ সালে আইফোন মিনি বাজারে আসবে। কারণ তখন প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে নতুন পণ্যের দিকে হাত বাড়াতে হবে অ্যাপলকে।’
একসময় স্মার্টফোনের বাজারে পিছিয়ে থাকলেও দ্রুতই অ্যাপলকে ছাড়িয়ে এ খাতে শীর্ষস্থান দখলে সক্ষম হয়েছে স্যামসাং। স্মার্টফোনের বিক্রি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোম্পানিটির শেয়ার মূল্য ও আয় হু হু করে বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মূল্য ছিল ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ওয়ান। এ বিক্রির সুবাদেই পরপর পাঁচ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০১২ পর্যন্ত) রেকর্ড মুনাফা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে স্যামসাং।
ওদিকে স্মার্টফোন ও অন্যান্য বহনযোগ্য যন্ত্রের বাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সাপে-নেউলে অবস্থায় রয়েছে স্যামসাং-অ্যাপল। মজার বিষয় হচ্ছে, বাজার দখলে মরিয়া হলেও অ্যাপলের পণ্যগুলোর যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী মূল কোম্পানি স্যামসাং। - এসবিবি