শনিবার ● ৫ জানুয়ারী ২০১৩
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » নতুন বছরে প্রযুক্তির হালচাল
নতুন বছরে প্রযুক্তির হালচাল
অ্যাপলের আইফোন আর আইপ্যাড তো মানুষের কম্পিউটার ব্যবহারের অভ্যাসই বদলে দিয়েছে। গুগলের অ্যান্ড্রয়েড প্রতিমুহূর্তে সমৃদ্ধ হচ্ছে। উইন্ডোজ-৮ দিয়ে ট্যাবলেট আর পিসি ব্যবহারের পার্থক্যটা প্রায় ঘুচিয়ে দিয়েছে মাইক্রোসফট। বড় বড় কোম্পানির পাশাপাশি ছোট অনেক কোম্পানিও এ বছর প্রযুক্তি খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। এসব নতুনত্ব সম্পর্কে পাঠকদের জানাতে এ প্রতিবেদন
ট্যাবলেট বনাম পিসি
ট্যাবলেট জগতে আইপ্যাডই সেরা। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে এর ক্ষুদে সংস্করণ। তবে পায়ের নিচে শক্ত জমিন পাওয়া শুরু করেছে অ্যান্ড্রয়েডও। তবে সব কাহিনীর একটাই শেষ; ল্যাপটপের কপাল পুড়ছে। আগে যেগুলো ল্যাপটপে করা হতো, এখন সে কাজগুলোর বেশির ভাগই করা সম্ভব হচ্ছে ট্যাবলেটে। প্রচলিত কম্পিউটার এখনো উঠে যায়নি, কনটেন্ট তৈরির মতো ভারী কাজগুলোর জন্য এখনো ডেস্কটপ কিংবা ল্যাপটপই ভরসা। কিন্তু নতুন করে ল্যাপটপ কেনা নয়; ক্রেতারা এখন ভিড় জমাচ্ছেন ট্যাবলেটের দোকানেই। এর পাশাপাশি জায়গা করে নিচ্ছে ই-রিডার। কাগজের বই কিনে পড়ার হ্যাপা না করে এতেই মজায় পড়ার সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। উইন্ডোজ-৮ আসার পর ধারণা করা হয়েছিল, পিসির যুগ বোধহয় দীর্ঘায়িত হলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ধারণার সমর্থনে তেমন কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। পিসির বাজার চলতি বছর আরও কমিয়ে দেবে ট্যাবলেট।
হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার সমন্বয়
নিজেদের কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার তৈরিতে স্বনির্ভর হতে হবে, প্রথম থেকেই এটাই মেনে আসছে অ্যাপল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোও গ্রহণ করেছে এ ধারণা। এখন শুধু হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যারই নয়, কম্পিউটারের তথ্য ব্যবস্থা, মৌলিক অ্যাপ্লিকেশন, অনলাইন তথ্যপ্রবাহ সবই নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে কম্পিউটার নির্মাতারা। গত অক্টোবরেই নিজেদের প্রথম ট্যাবলেট ‘সারফেস’ বাজারে ছাড়ে মাইক্রোসফট। এ মাসেই আসবে সারফেসের আরও শক্তিশালী সংস্করণ। এ বছরেই মাইক্রোসফটের স্মার্টফোন এলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
অ্যাপলের পথ অনুসরণ করছে গুগলও। নেক্সাস ব্র্যান্ডের একটি স্মার্টফোন আর দুটি ট্যাবলেট বাজারে ছেড়েছে শীর্ষ ইন্টারনেট সেবাদাতা এ প্রতিষ্ঠান। মটোরোলা মোবিলিটিকে কিনে হার্ডওয়্যার তৈরির সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠেছে তারা। পুরোপুরি অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক স্মার্টফোন তৈরির পথেও অনেকটা এগিয়ে গেছে মটোরোলা।
টেলিভিশনে নতুনত্ব
স্যামসাংসহ অন্য শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো এরই মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারে সক্ষম টিভি বাজারে এনেছে। শুধু তাই নয়, এ টিভিতে ইন্টারনেট ভিডিও দেখা এবং ট্যাবলেটের মতো অ্যাপ্লিকেশনও ব্যবহার করা যায়। যদিও এ পদ্ধতি বর্তমান সময়ে খুব একটা সহজ নয় আর ভোক্তারাও এর সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নিতে পারেননি। এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে অ্যাপল। আর অ্যাপল মানেই নতুন চমকের অপেক্ষা। এরই মধ্যে অ্যাপলের ৯৯ ডলারের টিভি বক্স বেশ সাড়া ফেলেছে। আইফোন, আইপ্যাড আর ম্যাকবুকে রয়েছে এয়ারপ্লে নামের পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে এসব যন্ত্রে থাকা কনটেন্ট খুব সহজেই বেতার সংযোগের মাধ্যমে টিভিতে ব্যবহার করা যায়। এ বছর তাই টেলিভিশনের বাজার এগিয়ে যাবে আরও অনেকখানি।
সস্তা স্মার্টফোন
এখন পর্যন্ত স্মার্টফোন সব শ্রেণীর মানুষের হাতে পৌঁছতে পারেনি এর দাম আর ব্যবহারের উপযুক্ত পরিবেশের অপর্যাপ্ততার কারণে। পুরনো মডেলগুলোর দাম অবশ্য একটু কম, তার পরও ইন্টারনেট ব্যবহারসহ অন্যান্য কাজে একটু বেশিই খরচ পড়ে স্মার্টফোনে। তবে অ্যান্ড্রয়েডের কারণে এ দাম আরও কমার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত। উইন্ডোজ ফোনও এ ক্ষেত্রে খুব একটা পিছিয়ে নেই।
আর টেলিকম অপারেটরাও ইদানীং তথ্য ব্যবহার ফি কমিয়ে আনছেন। প্রচলিত নেটওয়ার্কের বদলে ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে কল করার পদ্ধতিও স্মার্টফোন ব্যবহারের খরচ আরও কমিয়ে আনবে।
ব্যয়বহুল, উন্নত মিউজিক প্লেয়ার
মিউজিক-সংশ্লিষ্টরা প্রায়ই অভিযোগ করেন আইপড কিংবা অন্যান্য মিউজিক প্লেয়ারে রেকর্ডিংয়ের মানটা বজায় থাকে না। কারণ, এগুলো বেশি গান ধারণ করার সুবিধার্থে মিউজিক ফাইলগুলোকে সংকুচিত করে। এ অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে ৭০০ ডলার মূল্যের অ্যাস্টেল অ্যান্ড কার্ন একে-১০০ মিউজিক প্লেয়ার নিয়ে এসেছে কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান আইরিভার। মূল রেকর্ডিংয়ের পুরো স্বাদ পাওয়া যাবে এ প্লেয়ারে। এ রকম আরও কিছু ব্যয়বহুল মিউজিক ডিভাইস আসতে পারে এ বছর। - এসবিবি