বুধবার ● ২৪ আগস্ট ২০১১
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » তরল সার ‘ম্যাজিক গ্রোথ’ দেশের কৃষি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাতে পারে
তরল সার ‘ম্যাজিক গ্রোথ’ দেশের কৃষি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাতে পারে
‘ম্যাজিক গ্রোথ’ ॥ কৃষি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাতে পারে
০ এই তরল সার প্রয়োগে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ
০ ইউরিয়ার ব্যবহার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ কমে যাবে
০ বাংলাদেশের বিজ্ঞানীর আবিষ্কৃত এই তরল সার ব্যবহারে সরকারের ১৭শ’ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে
তরল সার ‘ম্যাজিক গ্রোথ’ দেশের কৃষি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাতে পারে। স্প্রের মাধ্যমে এ সার প্রয়োগে শুধু ফসল উৎপাদনই ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে না, জমিতে ইউরিয়ার ব্যবহার ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ হ্রাস পাবে। আউশ, আমন ও বোরো মিলিয়ে বর্তমানে দেশে প্রায় এক লাখ ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হচ্ছে। এ সব জমিতে যদি বিঘাপ্রতি ছয় কেজি করেও ইউরিয়া সাশ্রয় হয়, তবে বছরে প্রায় পাঁচ লাখ ৩১ হাজার টন ইউরিয়া কম ব্যবহার হবে। এতে বর্তমান আনত্মর্জাতিক বাজারমূল্যে সরকারের প্রায় ১৭শ’ কোটি টাকারও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। আর প্রতিবিঘায় যদি ৩০ কেজি করেও ধান উৎপাদন বেশি হয়, তাহলে বছরে প্রায় ২৬ লাখ টনের বেশি ধান উৎপাদিত হবে, যার বর্তমান বাজারমূল্য সাড়ে চার হাজার কোটি টাকারও বেশি।
জানা যায়, চাষী পর্যায়ে সাধারণ ধান চাষে প্রতিবিঘায় ৩০ থেকে ৪০ কেজি ইউরিয়া ব্যবহার করে থাকে। সেখানে তরল সার স্প্রের মাধ্যমে ব্যবহার করলে জমিতে ইউরিয়ার ব্যবহার বিঘায় ১০ থেকে ১৫ কেজিতে নেমে আসবে। আর তরল সার ম্যাজিক গ্রোথ পাতায় সপ্রের মাধ্যমে প্রয়োগের জন্য মাত্র এক থেকে দেড় কেজি ইউরিয়া ব্যবহার করতে হবে। এতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এ সার দেশের অন্যান্য এলাকার মতো উপকূলীয় অঞ্চলেও বেশি কার্যকর। লবণাক্ততার আগ্রাসনে যেখানে উপকূলীয় অঞ্চলে ধান চাষ অলাভজনক হয়ে পড়ছে, লবণের তীব্রতায় যেখানে লবণসহিষ্ণু জাতও আশানুরূপ ফল দিচ্ছে না, সেখানে এ সার উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষকদের জন্য আশার আলো নিয়ে এসেছে।
কৃষি বিজ্ঞানী আরিফ হোসেন খান তাঁর এ উদ্ভাবন প্রসঙ্গে বলেন, ১৯৯৪-৯৬ সালে বীজ আলু উৎপাদনের স্টেম কাটিং এবং সপ্রাউট কাটিং প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার সময় সপ্রে প্রযুক্তিটি পরীক্ষামূলকভাবে কিছু আলু গাছের ওপর প্রয়োগ করে ভাল ফল পাই। পরবর্তীতে এ বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছি এবং তরল সার ম্যাজিক গ্রোথকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছি। পরবতর্ীতে ধানের ওপর ‘ম্যাজিক গ্রোথ’ ব্যবহার করেও ব্যাপক সাফল্য পাই। প্রাথমিক অবস্থায় যদিও আমার ধারণা ছিল যে, সম্পূরক ডোজ হিসেবে ব্যবহার করলে হয়তবা ধানের ফলনের কিছু বৃদ্ধি ঘটবে। কিন্তু রাজশাহীর পবা উপজেলার টেংরামারী গ্রামের চাষী ইকবাল হোসেন পান্না জানান, তরল সার ব্যবহারের কারণে তাঁর ধানের চারা কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষা পেয়েছে। এছাড়া মূল জমিতে প্রয়োগের ফলে ধানের ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি ইউরিয়ার ব্যবহার কমে গেছে। ঠিক এমন সময় বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর কোন কিছু উদ্ভাবনের বিষয়ের ঘোষণা আমাকে আরও বেশি উৎসাহী করে তোলে। এরপর থেকে এ বিষয়টি নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রানত্মে চাষী পর্যায়ে ব্যাপকভিত্তিক গবেষণা করেছি এবং প্রতি ক্ষেত্রেই ধান ফসলের ওপর এর কার্যকারিতা খুবই ভাল বলে জানতে পেরেছি।
জানা যায়, তরল সার ম্যাজিক গ্রোথ ব্যবহার করলে আট ধরনের সুফল পাওয়া যায়। এগুলো হলো_ ধানের সুস্থ সবল চারা উৎপাদন করা সম্ভব হয়, ধানের চারা কোল্ড ইনজুরিতে তেমন ক্ষতি হয় না, তরল সার ব্যবহৃত ধানের চারা মূল জমিতে দ্রম্নত প্রতিষ্ঠিত হয়, ধানগাছ জমিতে সুস্থ সবলভাবে বৃদ্ধি পায়, কার্যকর কুশির সংখা্যা দ্রম্নত বৃদ্ধি পায়, তেমন রোগ এবং পোকামাকড়ের উপদ্রব হয় না, শীষে ধানের সংখ্যা বেশি হয়, ধানের রং ভাল হয়, ধানের পৃষ্টতা বেশি এবং চিটার ভাগ কম হয়, ইউরিয়া ব্যবহার মৌসুম, জমির প্রকৃতি এবং জাত ভেদে শতকরা ৩০ থেকে ৫০ ভাগ বা কোন কোন ক্ষেত্রে আরও বেশি কমে যায়, চাষী পর্যায়ে ধানের ফলন শতকরা ১০ থেকে ২০ ভাগ পর্যনত্ম বৃদ্ধি পায় এবং খরায় ধানগাছের সহনশীলতা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়াও লবণাক্ত মাটিতে তরল সারটি ব্যবহার করে ধান উৎপাদনের বিষয়ে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা নওগাঁ, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, নাটোর, চাঁপাইনাবাবগঞ্জ, রাজবাড়ী, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, রাঙ্গামাটি, খুলনা এবং গাজীপুর জেলায় ধান ফসলের ওপর তরল সার ব্যবহারের কৌশল প্রয়োগে অভাবনীয় ফল পাওয়া গেছে। দেশের শতকরা ৮০ ভাগ জমিতে জৈব পদার্থের ঘাটতি এবং শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ জমিতে ক্রিটিক্যাল লেভেলের নিচে জৈব পদার্থ রয়েছে। দেশের অধিক জনসংখ্যার খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করতে গিয়ে চাষী ভাইয়েরা একটি জমি থেকে বছরে ২-৩টি পর্যনত্ম ফসল ফলাচ্ছে। উচ্চ ফলনশীল এ সব ফসল ফলানোর ফলে জমি থেকে বিভিন্ন প্রধান খাদ্যসহ অনুখাদ্য দ্রম্নত নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বিভিন্ন খাদ্য উপাদানের ঘাটতিতে পড়ছে। এ সব অনুখাদ্য যদিও গাছ খুব অল্প পরিমাণে গ্রহণ করে থাকে তথাপিও ফসল উৎপাদনে এদের গুরম্নত্ব খুবই বেশি। যেমন ধানের জমিতে যদি জিঙ্কের ঘাটতি থাকে, তবে অন্যান্য খাদ্য উপাদান জমিতে যতই থাকুক না কেন সে খাদ্য উপাদান ধানগাছ সহজে গ্রহণ করতে পারে না। ফলে জমির অধিকাংশ ধানগাছ মারা যায় এবং ব্যাপক ফলন বিপর্যয় ঘটে। এছাড়া এসব বিভিন্ন অনুখাদ্যের অভাবে ধান ফসলের বিভিন্ন মেটাবলিক কার্যাবলী ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। ফলে গাছ সহজেই রোগাক্রানত্ম হয়ে পড়ে এবং কাঙ্ৰিত ফলন দিতে পারে না। তাছাড়া মাটিতে জৈব পদার্থের ঘাটতির কারণে মাটির অনুজৈবিক কার্যাবলীও কমে যাচ্ছে। ফলে মাটিতে প্রয়োগকৃত অন্যান্য প্রধান খাদ্য উপাদান (নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশ) সহজে গাছের গ্রহণ উপযোগী অবস্থায় আসছে না। সঙ্গে সঙ্গে জৈব পদার্থের ঘাটতির কারণে মাটিতে যে সব খারাপ উপসর্গ সৃষ্টি হওয়ার কথা তাও হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে আরিফ হোসেন খান বলেন, মাটিতে যখন কোন রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয়, বিশেষ করে অনুখাদ্য তখন তা জমির সব অংশে সমানভাবে পড়ে না, এটা প্রধান উপাদানের ক্ষেত্রেও হতে পারে। ফলে জমির সব গাছ সমানভাবে পুষ্টি পায় না বলে গাছের বৃদ্ধি এবং ফলনও কমবেশি হয়ে থাকে। এ বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিনের গবেষণায় আমার মনে হয়েছে আমাদের দেশের কৃষি জমির যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে জমিতে জৈবপদার্থ এবং বিভিন্ন খাদ্য উপাদান, বিশেষ করে অনুখাদ্যের ব্যাপক ঘাটতির সৃষ্টি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যখনই পাতার মাধ্যমে ধানগাছের ওপর বিভিন্ন খনিজ খাদ্য উপাদান প্রয়োগ করা হচ্ছে তখন গাছ সে সব উপাদান দ্রম্নত গ্রহণ করছে। এতে চারা দ্রম্নত সুস্থ সবল গাছে পরিণত হচ্ছে এবং কাঙ্ৰিত ফলন দিচ্ছে। ধানগাছের ওপর আমার উদ্ভাবিত তরল সার এতটাই কার্যকর হচ্ছে যে, চাঁপাইনাবাবগঞ্জ জেলার এক বিশিষ্ট চাষী হাবিবুর রহমান জানান, তিনি তাঁর ধানের জমিতে তরল সার ব্যবহারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফসলের রংঙের পরিবর্তন বুঝতে পেরেছেন।
দেশের দৰিণাঞ্চলে ফসল উৎপাদনে এখন লনণাক্ততাই প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিন দিন এই লবণাক্ততার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে লবণাক্তায় আক্রানত্ম জমির পরিমাণ মোট আবাদী জমির এক-তৃতীয়াংশ ছাড়িয়ে গেছে। ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষি অলাভজনক হয়ে পড়ছে। কৃষকের এই হতাশাজনক অবস্থার মাঝে তরল সার ‘ম্যাজিক গ্রোথ’ ক্রমবৃদ্ধিমান লবণাক্তার মাঝে কৃষকদের জন্য আশার আলো নিয়ে এসেছে।
জানা যায়, বর্তমানে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ১০ লাখ হেক্টররও বেশি জমি লবণাক্তায় আক্রানত্ম হয়ে পড়েছে, যা মোট আবাদী জমির এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি। বিশেষ করে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর লবণের তীব্রতা এতটাই বেড়েছে যে, লবণসহিষ্ণু ব্রিধান-৪৭ জাত আবাদেও ভাল ফলন পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে খাদ্য উদ্বৃত্তের দৰিণাঞ্চল এখন খাদ্য ঘাটতি এলাকায় পরিণত হয়েছে।
এই অবস্থার মাঝে কৃষি বিজ্ঞানী আরিফ হোসেন খান ১৩টি খনিজ পদার্থের সংমিশ্রণে তরল সার আবিষ্কার করে কৃষকদের হাতাশার মাঝে আশার সৃষ্টি করেছেন। দীর্ঘ ২০ বছর গবেষণা করে তিনি এ সার উদ্ভাবন করতে সৰম হয়েছেন, যা বিভিন্ন সফলের ওপর প্রয়োগে ম্যাজিকের মতো কাজ করছে। তাই এ সারের নাম দিয়েছেন ‘ম্যাজিক গ্রোথ’।
এ প্রসঙ্গে কৃষিবিদ আরিফ হোসেন খান বলেন, “আমার উদ্ভাবিত তরল সারটি দেশের লবণাক্ত মাটিতে ধান উৎপাদনেও কার্যকর হচ্ছে দেখে আমি আরও বেশি উৎসাহী হয়েছি। আমার জানা মতে, লবণাক্ত মাটিতে বা সাধারণ মাটিতে ‘ফলিয়ার ফিডিং’ কৌশল ব্যবহার করে অধিক পরিমাণ ধান উৎপাদনের বিষয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের কোথাও এমন গবেষণা আজ পর্যনত্ম হয়নি।” তিনি বলেন, এ সার খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের মালঠ গ্রামের কৃষী ইসলাম গাজীর জমির ব্রিধান-৪৭এর ওপর প্রয়োগ করা হয়। এক বিঘা সাত কাঠা জমির পাঁচ কাঠা জমিতে তরল সার প্রয়োগ করা হয়। পুরো মৌসুমে বোরো ধানের জমিতে ধান গাছের পাতার ওপর তরল সার স্প্রে করে তিনবার প্রয়োগ করা হয়। প্রথম প্রয়োগ করা হয় ধানগাছ রোপণের ৩৫ দিন পর। দ্বিতীয়বার প্রয়োগ করা হয় প্রথম প্রয়োগের ১৪ দিন পর এবং তৃতীয়বার প্রয়োগ করা হয় দ্বিতীয় প্রয়োগের ১০ দিন পর। এতে দেখা যায়, তরল সার প্রয়োগে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়েছে। হলুদাভ গাছ সবুজ বর্ণ ধারণ করেছে। স্বাভাবিকভাবে ধানের ছড়া বের হয়েছে। ফলে যে অংশে চাষী তরল সার প্রয়োগ করেছেন সে অংশে চাষী স্বাভাবিক ফলন পেয়েছে। শুধু তাই নয়, ধান চাষে দ্বিতীয় টপ ড্রেসিং করতে হয়নি বলে বিঘাপ্রতি প্রায় ১৫ কেজি ইউরিয়া সাশ্রয় হয়েছে। আর জমির যে অংশে তরল সার প্রয়োগ করা হয়নি, সে অংশের প্রায় সব ধানের গাছ মারা গেছে। যাওবা কিছু গাছ বেঁচে ছিল সেগুলোতে তেমন কুশি বের হয়নি, যে শীষ বের হয়েছে তা আকারে ছোট এবং চিটার ভাগ বেশি ছিল। অর্থাৎ তরল সার না দেয়া লবণাক্ত জমিতে প্রায় ৯০ ভাগ ফলন বিপর্যয় হয়েছে।
জনাব আরিফ হোসেন খান বিএডিসির একজন উপপরিচালক। বর্তমানে পাবনা অঞ্চলে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘মাটির লবণাক্ততা, অমস্নতা ও ৰারজনিত সমস্যা থাকলে মাইক্রো নিউটিয়েন্ট মাটিতে আবদ্ধ হয়ে যায়। ফলে গাছ মাটি থেকে মাইক্রো নিউটিয়েন্ট উত্তোলনে ব্যর্থ হয় বলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় বা গাছ মারা যায়। কিন্তু তরল সার ওই গাছে স্প্রের মাধ্যমে দিলে গাছ পাতার মাধ্যমে খাদ্য গ্রহণ করে। ফলে খাদ্য উপাদান গাছের মধ্যে ঢুকে তা বিভিন্ন মেটাবলিক কার্যাবলীতে অংশ নিয়ে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে।
এই তরল সার বটিয়াঘাটা উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিহির বৈরাগী তাঁর এলাকায় ব্রিধান-২৮-এর ওপর প্রয়োগ করেও ভাল ফল পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। মোট ২৬ শতক জমিতে তরল সার মাত্র একবার ব্যবহার করা হয়েছিল। এতে বিঘায় প্রায় আট মণ ধান বেশি পেয়েছেন। তরল সার ব্যবহৃত জমিতে দ্বিতীয় টপ ড্রেসিংয়ের সার ব্যবহার করতে হয়নি বলে বিঘা হিসেবে প্রায় ১২ কেজি ইউরিয়া সাশ্রয় হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আরিফ হোসেন খান বলেন, এই সার দীর্ঘদিন আমি আলু ও সবজিতে প্রয়োগ করে এসেছি। এখন ধানের ওপর প্রয়োগেও ভাল ফল পাওয়া যাচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত জমিতে ধান চাষে এ সার গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, শীতের সময়ও এ সার প্রয়োগে কার্যকর ফল পাওয়া গেছে। এ তরল সার প্রয়োগে শীতে চারা নষ্ট হয় না, বরং চারার স্বাস্থ্য ভাল থাকে এবং ভালভাবে বেড়ে ওঠে। তাই এ সার ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা গেলে অনত্মত ৩০ থেকে ৫০ ভাগ ইউরিয়া সাশ্রয় হবে এবং ফলন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
॥ কাওসার রহমান ॥