মঙ্গলবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি পড়াশোনা » ক্লাউডের ডিপ্লয়মেন্ট মডেল
ক্লাউডের ডিপ্লয়মেন্ট মডেল
ক্লাউডের ব্যবহারকারী কারা, তার উপরে ভিত্তি করে কয়েক রকমের মডেল চালু আছে। এগুলো হলো পাবলিক ক্লাউড
কমিউনিটি ক্লাউড
প্রাইভেট ক্লাউড
হাইব্রিড ক্লাউড
আসুন দেখে নেই কোনটার বৈশিষ্ট্য কী, আর উপরের উদাহরণের কোনটার সাথে মিলে যাবে কোন মডেল …
পাবলিক ক্লাউড (Public Cloud)
পাবলিক ক্লাউড হলো এমন ক্লাউড যা আম জনতার জন্য উন্মুক্ত। অর্থাৎ ফেল-কড়ি-মাখ-তেল মডেলে যে টাকা দিবে, সেই সার্ভিস পাবে, এমন ক্লাউডকে বলা হয় পাবলিক ক্লাউড। যেমন আমাজনের EC2। এসব ক্লাউডে সুবিধা হলো যে কেউ এর সেবা নিতে পারে। আর অসুবিধাটা হলো একই জায়গায় একাধিক ক্লায়েন্টের আনাগোনার ফলে নিরাপত্তার সমস্যা হতে পারে।
বিয়ে বাড়ির উদাহরণটাই দেখুন - আক্কাসের পার্টি সেন্টার যে কেউ যেকোনোভাবে ভাড়া নিতে পারে। ফলে সুবিধাটা বেশ ভালো কম বাজেটের লোকজনের জন্য। কিন্তু একই সময়ে একাধিক বিয়ে সেখানে চলতে পারে (ঢাকার সোহাগ কমিউনিটি সেন্টারের মতো :) ), ফলে এক বিয়ের লোক আরেক বিয়েতে খেয়ে যাচ্ছে, বা চোর-বাটপার ঢুকে পড়ছে, এমন দুশ্চিন্তা থাকতে পারে অনেকের।
কমিউনিটি ক্লাউড (Community Cloud)
কমিউনিটি ক্লাউডও শেয়ার করা হয় অনেকের মাঝে, পাবলিক ক্লাউডের মতোই যে টাকা দেয়, সেই সার্ভিস পায়। তবে পার্থক্য হলো একটি ক্ষুদ্রতর কমিউনিটির লোকজনই এর সুবিধা নিতে পারে। ধরা যাক, ঢাকার আজিমপুর কলোনির লোক্জনের চাহিদা মেটানোর জন্য একটা ক্লাউড বসানো হলো, কেবল আজিমপুর কলোনিবাসীই এর সার্ভিস নিতে পারবে। তাহলে সেটা পাবলিক ক্লাউড না হয়ে হবে প্রাইভেট ক্লাউড। উপরের উদাহরণে আলিশান-কালিধারা এলাকার পার্টি সেন্টারটা এরকম। কেবল ঐ এলাকার লোকজনেই এটা ব্যবহার করতে পারছেন। সুবিধা হলো, কমিউনিটির মধ্যে ইউজার সীমাবদ্ধ থাকে বলে এখানে অনেক সমস্যা যেমন সিকিউরিটির সমস্যাগুলা নাই। আর অসুবিধা হলো এখানে ক্লায়েন্টের সংখ্যা সীমিত বলে খরচ বেড়ে যাবে।
প্রাইভেট ক্লাউড (Private Cloud)
প্রাইভেট ক্লাউডকে ক্লাউড বলা চলে কিনা এই নিয়ে মতভেদ আছে। এই রকম ক্লাউড হলো কোনো বড় সংস্থার নিজের নানা সার্ভিস চালাবার জন্য নিজের ডেটা সেন্টারকেই ক্লাউড মডেলে ব্যবহার করা। “মুরগি” ইদ্রিসের কথাই ধরুন, সে যেভাবে নিজের ডজন খানেক ছেলেপেলের বিয়ের জন্য নিজস্ব পার্টি সেন্টার বানিয়েছে, অনেক বড় কোম্পানি সেরকম নিজের নানা কাজ করার জন্য ওভাবে নিজস্ব একটা ক্লাউড বানায়। সমস্যা হলো, এতে করে কিন্তু খরচ অনেক হচ্ছে, নিজস্ব ডেটা সেন্টার বসাতে হচ্ছে, ম্যানেজ করার জন্য লোক রাখা লাগছে। তবে বড় সংস্থার ক্ষেত্রে সুবিধাও আছে, কোনো বড় কোম্পানিতে ১০টা ডিপার্টমেন্ট থাকলে ১০টা ডেটা সেন্টার না বসিয়ে ১টাকেই ক্লাউড মডেলে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা যাচ্ছে। ধরা যাক, বাংলাদেশ সরকার তার নানা মন্ত্রণালয়ের কম্পিউটার ব্যবহারের hখরচ কমাতে চায়। সেক্ষেত্রে একটা সরকারী প্রাইভেট ক্লাউড ভালো সমাধান হতে পারে।
হাইব্রিড ক্লাউড (Hybrid Cloud)
হাইব্রিড ক্লাউড হলো পাবলিক আর প্রাইভেটের সংমিশ্রন। এখানে প্রাইভেট ক্লাউড দিয়ে প্রাথমিক চাহিদা মেটানো হয়, আর প্রাইভেট ক্লাউডের ধারণক্ষমতা অতিক্রান্ত হয়ে গেলে পাবলিক ক্লাউডের সাহায্য নেয়া হয়। উপরের উদাহরণে “জুতা” মাহমুদের পার্টি সেন্টারটা অনেকটা এরকম। অতিরিক্ত দাওয়াতি আসলে তারা চলে যায় আক্কাসের পার্টি সেন্টারে।
পাবলিক ক্লাউডের চাইতে হাইব্রিড ক্লাউডের খরচ বেশি, কারণ স্থানীয় স্থাপনা তো বানাতেই হচ্ছে এখানে। তবে স্থানীয়ভাবে কাজ করিয়ে নেয়ার সুবিধাগুলো থাকছে, তার সাথে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোরও একটা ব্যবস্থা এখানে থাকছে পাবলিক ক্লাউডে পাঠানোর মাধ্যমে।
তো, এই হলো ক্লাউডের নানা ডিপ্লয়মেন্ট মডেল, অর্থাৎ ক্লাউড ব্যবহারের নানা তরিকা। ভোক্তার চাহিদা কীরকম এবং তথ্য বা এপ্লিকেশনের কী কী সিকিউরিটি বা পার্ফর্মেন্স ফিচার লাগবে, তার ভিত্তিতে বেছে নিতে হবে যথোপযুক্ত মডেল।
- এস এম জুবায়ের