বৃহস্পতিবার ● ১৫ নভেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » রিকন্ডিশন্ড ইঞ্জিনের বাজার চট্টগ্রাম
রিকন্ডিশন্ড ইঞ্জিনের বাজার চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের ধনিয়ালাপাড়ায় পুরনো (রিকন্ডিশন্ড) ইঞ্জিনের ব্যবসা শুরু হয় মেসার্স এমকে রহমান এন্টারপ্রাইজের হাত ধরে। তবে স্বাধীনতার আগ পর্যন্তও প্রতিষ্ঠান ছিল মাত্র তিনটি, বর্তমানে ২০০ ছাড়িয়েছে। এর সুবাদে ধনিয়ালাপাড়ার পরিচয় এখন রিকন্ডিশন্ড ইঞ্জিনের বাজার হিসেবে। এ বাজারকে ধোলাইখাল বলেও ডাকেন কেউ কেউ।
ধনিয়ালাপাড়ায় যে ২০০টি প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, এর মধ্যে প্রায় ১০০টিই বিভিন্ন দেশ থেকে সরাসরি ইঞ্জিন ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানি করে। পরে তা দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে যেসব গাড়ি ব্যবহার হয়, তার বেশির ভাগই রিকন্ডিশন্ড। স্বাভাবিকভাবেই রিকন্ডিশন্ড ইঞ্জিনের চাহিদাও বেশি। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন গড়ে ৭-১০ কোটি টাকার রিকন্ডিশন্ড ইঞ্জিন বিক্রি হয়।
সারা বছরই পুরনো ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশের চাহিদা থাকে। ছোট ট্রলার-নৌকা থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের গাড়ির ইঞ্জিন এখানে পাওয়া যায়। দাম পড়ে ৩০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা। জাপান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও থাইল্যান্ড থেকে এসব ইঞ্জিন আমদানি করা হয়। অনেক প্রতিষ্ঠান এসব ইঞ্জিন বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারিতে বিক্রি করেন। সরকারি কোষাগারেও জমা পড়ে মোটা অঙ্কের রাজস্ব।
চিটাগাং রিকন্ডিশন্ড ইঞ্জিন অ্যান্ড মোটর পার্টস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সামসুল আলম এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, এ খাতের ব্যবসায়ীরা প্রতি বছর সরকারকে কয়েক শ কোটি টাকার রাজস্ব দেন। তবে আমদানিতে ৬২ শতাংশ শুল্কের পাশাপাশি কাস্টমসে ভোগান্তিও পোহাতে হয় ব্যবসায়ীদের। অনেক সময় ইঞ্জিনের সঙ্গে কিছু যন্ত্রাংশও বাক্সের মধ্যে খোলা অবস্থায় চলে আসে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব যন্ত্রাংশের শুল্ক আদায় করে।
ধনিয়ালাপাড়াকে অনেকে চট্টগ্রামের ধোলাইখাল হিসেবে ডাকলেও এ নিয়ে এখানকার ব্যবসায়ীদের রয়েছে ঘোর আপত্তি। তাদের দাবি, ধনিয়ালাপাড়াই দেশের একমাত্র রিকন্ডিশন্ড ইঞ্জিনের পাইকারি ও খুচরা বাজার। ঢাকার ধোলাইখালসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বিক্রেতারাও এখান থেকেই পাইকারি দামে ইঞ্জিন কেনেন। রাজধানীতে অবস্থানের কারণেই ধোলাইখালের পরিচিতি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সব ধরনের গাড়ির ইঞ্জিনই এ বাজারে পাওয়া যায়। প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মিনি ট্রাক, ট্রাক, বড় বাস ছাড়াও চার, ছয়, আট সিলিন্ডার গাড়ির রিকন্ডিশন্ড ইঞ্জিন এখানে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে টয়োটা করোলা, নোয়া, ভক্সি, এক্স-ইও, প্রিমিও, এলিয়ন মডেলের ইঞ্জিন।
এ বিষয়ে অটোমেক্স ট্রেডিংয়ের ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম বলেন, সারা বছরই ইঞ্জিন বিক্রি হয়। তবে শীত মৌসুমে বিক্রি কিছুটা বাড়ে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ইঞ্জিনের সরবরাহ আদেশ আসে। ইঞ্জিন কিনতে অনেক সময় সশরীরেও এ বাজারে হাজির হন ব্যবসায়ীরা।