রবিবার ● ১১ নভেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » নিয়মিত আয়োজনের প্রত্যয়ে শেষ হলো ডব্লিউসিজি - ২০১২
নিয়মিত আয়োজনের প্রত্যয়ে শেষ হলো ডব্লিউসিজি - ২০১২
আগামী বছর থেকে নিয়মিত প্রতিযোগিতা আয়েজন ঘোষণার মধ্য দিয়ে ঢাকায় শেষ হলো উত্তেজনা পূর্ণ বিশ্ব সাইবার গেমস প্রতিযোগিতা (ডব্লিউসিজি) বাংলাদেশ ২০১২। ২০১৩ সালে কি-বোর্ড, জয়স্টিক, মাউস, গেম প্যাড নিয়ে কম্পিউটারের পরাবাস্তব পর্দায় আরও নৈপূণ্য দেখানোর প্রত্যয় নিয়ে ঘরে ফিরলো নতুন প্রজন্মের গেমাররা।
গতকাল শনিবার ঢাকার ইনডিপেন্ডিন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (আইইউবি) ক্যাম্পাসে পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় তিন দিনের ডব্লিউসিজি বাংলাদেশ। এবারের আসরে দলগত পর্বে কল অব ডিউটি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এহসান জামানের নেতৃত্বাধীন ভয়েড স্ম্যাশ। আর রানার্স আপ হয়েছে তাজবির মাহমুদ এর ভয়োড হোস্টাইল। অপর খেলা কাউন্টার স্ট্রাইকে জর্জেস আলম নেতৃত্বাধীন ইভোল্যুশন গেমিং এর প্রথম দল চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ হয় জন সরওয়ার্দি’র ইভোল্যুশন গেমিং এর দ্বিতীয় দল। একক খেলায় মোস্ট ওয়ান্টেড প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আলিফ রহমান চৌধুরি। ফিফা ২০১২ খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সালমান হোসেন। অপরদিকে উভয় খেলায় রানার্স আপ হয়েছে তৌফিক সাদাত (এনএফএস) এবং ওয়ায়েস আলম (ফিফা ২০১২)।
প্রতিযোগিতার শেষ দিনে বৃহস্পতিবার রাতে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল খেলা শেষে বিজয়ীদের পুরুস্কৃত করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির ভিসি এম ওমর রহমান, কম্পিউটার সোর্স এর পরিচালক এ ইউ খান জুয়েল, ডব্লিউসিজির বাংলাদেশ ব্যবস্থাপক এইচ এম ফয়েজ মোর্শেদ, বিসিএস কম্পিউটার সিটি সভাপতি মজিবুর রহমান, ইনডিপেডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভলপমেন্টস অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স জ্যেষ্ঠ্য ব্যবস্থাপক কাজী ফারুক আহমেদ।
পুরুস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আইউবি উপাচার্জ এম ওমর রহমান বলেন, দেশের তরুণ প্রজন্মের মেধার বিকাশে এ ধরনের প্রতিযোগিতা ভূমিকা রাখতে সক্ষম। আশা করি এ ধরনের খেলায় দেশের তরুণরা আন্তর্জাতিক ভাবেও দেশের সুনাম বয়ে আনবে।
মজিবুর রহমান বলেন, আমি যখন এখানে বসে ফিফা ২০১২ দেখছিলাম মনে হচ্ছিল আমি মাঠে বসেই কাকা-মেসির লড়াই দেখছি। সাহিত্যে আমরা যে পরাবাস্তবতার কথা বলি তা-ই কিন্তু কম্পিউটারের এই ভার্চুয়াল গেম। এর বিকাশ আমাদের তরুণ প্রজন্মের কল্পনা শক্তি বাস্তবে রূপ দিবে।
আগামী বছর থেকে নিয়মিত প্রতিযোগিতা আয়েজন ঘোষণা দিয়ে আয়োজক প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার সোর্স পরিচালক এ ইউ খান জুয়েল বলেন, মেধার বিকাশে খেলা-ধূলার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু দিন দিন মাঠ কমে যাচ্ছে। তাই আগামী বছর থেকে ঘরে বসেই মাঠের লড়াইয়ে শ্রেষ্ঠত্বের এই সুযোগ নিয়মিত করা হবে।
প্রতিযোগিতায় প্রাথমিক পর্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ৮০০ গেমার । ফিফা ২০১২ গেমসে বিজয়ী সালমান হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকেই গেমস খেলছি। গেমস খেলে পুরুস্কার পাওয়ায় অনেক ভালো লাগছে। দুইটি বিভাগের চারটি বিভাগে বিজয়ী ৮ জনকে দেয়া হয় আড়াই লাখ টাকা মূল্যমানের কম্পিউটার গেমিং অ্যাক্সেসরিজ।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় রাজধানীর বসুন্ধরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারসপাস হলে শুরু হয় সাইবার গেমে শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার এই লড়াই। প্রতিযোগিতায় এনএফএস মোস্ট ওয়ান্টেড-এ ১২০ জন, ফিফা ২০১২-এ ২৫০জন এবং কাউন্টার স্ট্রাইকে ২০টি এবং কল অব ডিউটি-তে ৫ সদস্যের ২৫টি টিম আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে অংশ নেয়। শেষ দিন শনিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় ফাইনাল রাউন্ড। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে খোলা আকাশের নিচে প্রজেক্টেরের খেলার চূড়ান্ত পর্ব।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের ৯০ শতাংশই ছিলো কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অংশ নেয়া গেমারদের মধ্যে ছিলো শারীরিক ভাবে খেলতে অসমর্থ খেলোয়াড়ও। মায়ের সাথে হুইল চেয়ারে বসে খেলতে এসেছিলেন মাসক্যুলার ডিজঅ্যবল আফফান ইবনে ওসমান। মোস্ট ওয়ান্টেড এনএফএস-এ অংশ নিয়ে সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়লেও তার অদম্য স্পৃহাকে উদ্বুদ্ধ করতে পুরুস্কৃত করা হয় বিবিএ পড়া এই খেলোয়াড়কে।
প্রতিযোগিতা যৌথভাবে আয়োজন করে আইইউবি ও কম্পিউটার সোর্স লিমিটেড। ষষ্ঠবারের মতো দেশে অনুষ্ঠিত সাইবার গেমিং জগতের অলিম্পিক খ্যাত ডব্লিউসিজি বাংলাদেশ’র এবারের আসরের টাইটেল স্পন্সর ছিল মোজো । সহযোগী স্পন্সর ছিল লজিটেক, অ্যাপাসার, সিএসএম, রেজার, অ্যান্টেক, কোরসেয়ার এবং স্টিল সিরিজ।