সোমবার ● ১৫ অক্টোবর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » টেলিটকের থ্রিজিসেবা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
টেলিটকের থ্রিজিসেবা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সেলফোন অপারেটর টেলিটকের বহু প্রতীক্ষিত থ্রিজি (থার্ড জেনারেশন) সেলফোন সেবা চালুর মাধ্যমে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রোববার টেলিটকের থ্রিজি সেলফোন প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক উদ্বোধন করেন।
নতুন এ সেবা উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে সেলফোনে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যাবে এবং তথ্য ও ডাটা আদান-প্রদান দ্রুত ও সহজ হবে। সেলফোন গ্রাহকরা ভিডিও কল করাসহ উন্নত ডিজিটাল সেবা পাবেন। তৃতীয় প্রজন্মের সেলফোন প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ও বিভিন্নমুখী প্রয়োগ নিশ্চিত হবে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট আইটি বিশেষজ্ঞ সজিব ওয়াজেদ জয়, ডাক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব সুনীল কান্তি বোস ও বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জুন বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইসিটিই পারে উন্নয়নের বহুমাত্রিক ধারা দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে। জনগণকে বিশ্বের সঙ্গে দ্রুত যুক্ত করতে।
শেখ হাসিনা বলেন, নতুন এ সংযোজন তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ও সেবার বিকাশ ঘটার পাশাপাশি শিক্ষা, গবেষণা, শিল্প, কৃষি ও সেবাখাতসহ সব ক্ষেত্রেই এর ব্যাপক ব্যবহার নিশ্চিত করবে। তথ্যপ্রযুক্তির রফতানি বৃদ্ধি ও শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি করবে। এতে দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ও জনগণের ক্ষমতায়নে অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত হবে। এসব লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য এলাকাসহ সারা দেশকে সেলফোন নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে এবং সেলফোনে বাংলায় এসএমএস পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম তথ্যপ্রযুক্তি রপ্ত করেছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক নিয়ে ই-বুক তৈরি এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে নিম্ন মাধ্যমিকেও কম্পিউটার শিক্ষা চালু করা হবে। তার সরকার প্রতিটি স্কুলে কম্পিউটার দিয়েছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি আইসিটি দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে প্রায় তিন হাজার আইটি ল্যাব ও দুর্গম অঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ আইটি ল্যাব স্থাপন এবং যেখানে বিদ্যুৎ নেই সেখানে সোলার এনার্জির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আইসিটিতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা হচ্ছে। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্ক স্থাপনের কাজ চলছে। সাবমেরিন ক্যাবলের ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি ও ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য করা হয়েছে। টেলিযোগাযোগে নিজস্ব সামর্থ্য অর্জনে দেশে প্রথমবারের মতো স্যাটেলাইট স্থাপনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ডিজিটালাইজড বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ১০ কোটি মানুষ সেলফোন ব্যবহার করছে এবং প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট সেবা নিচ্ছে এ কথা উলেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ধনী-গরির, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সব নাগরিকের জন্য প্রযুক্তি বিভেদমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে থ্রিজি সংযোজনে সহায়তার জন্য চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
পরে প্রধানমন্ত্রী বোতাম টিপে টেলিটক থ্রিজি প্রযুক্তির উদ্বোধন করেন। তিনি এ নতুন সংযোজিত প্রযুক্তির মাধ্যমে টেলিফোনে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে টেলিফোনে আজিমপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেন।