বৃহস্পতিবার ● ১১ অক্টোবর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » বিশালকায় কৃষ্ণগহ্বর পুঞ্জের সন্ধান দিলেন মানডা!
বিশালকায় কৃষ্ণগহ্বর পুঞ্জের সন্ধান দিলেন মানডা!
ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী মানডা ব্যানার্জি নেতৃত্বে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের একটি দল একগুচ্ছ বিশাল আকারের ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেয়েছেন। ‘ভার্গো’ নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে কয়েকশো কোটি কিলোমিটার দূরে বিশাল এ কৃষ্ণগহ্বর পুঞ্জের অবস্থান। রেডিয়েশন মাপা সম্ভব ছিল না বলেই এর আগে এ কৃষ্ণগহ্বরগুলোকে প্রাথমিক বিশ্ব বা শিশু বিশ্ব হিসেবে ডাকতেন জ্যোতিবিদরা। খবর ইকনমিক টাইমসের।
গবেষকরা জানিয়েছেন, বিশাল কৃষ্ণগহ্বর গুচ্ছের আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের নাড়া দিয়েছে। কারণ এর আগে কোনো কৃষ্ণগহ্বরের অবস্থান গবেষকদের কাছে এত দীর্ঘসময় পর্যন্ত অজানা থাকেনি।
গবেষকরা জানিয়েছেন, পৃথিবী থেকে ১ হাজার ১০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে প্রায় ৪০০ কৃষ্ণগহ্বর একত্রে অবস্থান করছে। পাতলা ধুলো দিয়ে তৈরি দানবাকৃতি মেঘে ঘেরা এ কৃষ্ণগহ্বরগুলোকে গবেষকরা বলছেন ‘কৃষ্ণগহ্বরের চিড়িয়াখানা’।
‘মান্থলি নোটিসেস অফ দ্য রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত নিবন্ধে মানডা ব্যানার্জি জানিয়েছেন, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ ব্যবহার করে তাঁরা এ কৃষ্ণগহ্বরগুলোর সন্ধান পেয়েছেন, যা কৃষ্ণগহ্বর সংক্রান্ত গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
মানডা ব্যানার্জি কৃষ্ণগহ্বর চিড়িয়াখানার দানবাকার এই কৃষ্ণগহ্বর প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, আমাদের সৌরজগতের সূর্যের চেয়েও হাজার গুণ বেশি ভর আর মিল্কিওয়ে ছায়াপথে থাকা কৃষ্ণগহ্বরগুলোর চেয়ে ১০ হাজার গুণ বেশি ভরবিশিষ্ট একটি কৃষ্ণগহ্বর এখানে রয়েছে যা এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত কৃষ্ণগহ্বরগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড়। গবেষকরা দৈত্যাকার এই কৃষ্ণগহ্বরটির নাম দিয়েছেন ‘ইউএলএএসজি১২৩৪+০৯০৭’। আকাশে এ দৈত্যাকার কৃষ্ণগহ্বরটি সবচে লাল বস্তু হিসেবে দেখা যায়। একে লাল রঙের দেখায় মূলত কৃষ্ণগহ্বরটিকে ঘিরে থাকা ধুলোর মেঘের কারণে, যা নীল রং শোষণ করে আর কেবল লাল রং প্রতিফলিত করে।
ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর মহাবিশ্বের অস্তিত্ব ও প্রকৃতি বিষয়ক একটি বহুল প্রচলিত ধারণা। কৃষ্ণগহ্বর মহাবিশ্বের এমন একটি বস্তু যা এত ঘন সন্নিবিষ্ট বা অতি ক্ষুদ্র আয়তনে এর ভর এত বেশি যে এর মহাকর্ষীয় শক্তি কোন কিছুকেই তার ভিতর থেকে বের হতে দেয় না, এমনকি আলো ও তড়িত্-চুম্বকীয় বিকিরণও ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর থেকে বের হতে পারে না। ব্ল্যাকহোলে পতিত কোনো বস্তুর বিকিরণ পর্যবেক্ষণ করে এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেন গবেষকরা।
গবেষকদের ধারণা, দৈত্যাকার এরকম কৃষ্ণগহ্বর কেবল কোনো ছায়াপথের কেন্দ্রের দিকেই থাকতে পারে। অন্য কোনো ছায়াপথের সঙ্গে সংঘর্ষে সৃষ্টি হয় ব্ল্যাকহোল যে সব নক্ষত্র ও ধূলিকণাকে নিজের দিকে টেনে নেয় এমন বস্তুর। -এসপিএ