শনিবার ● ৬ অক্টোবর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » লাভের ধারায় ফিরতে চার বছর সময় লাগবে এইচপির
লাভের ধারায় ফিরতে চার বছর সময় লাগবে এইচপির
ব্যবসা গুছিয়ে লাভের ধারায় ফিরতে ন্যূনতম আরও চার বছর সময় লাগবে হিউলেট প্যাকার্ডের (এইচপি)। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেগ হুইটম্যান গত সপ্তাহের বুধবার ওয়াল স্ট্রিটের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনায় এ তথ্য জানান। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।
তার ভাষায়, ২০১৬ সাল পর্যন্ত এইচপি কম আয় ও মুনাফা অর্জন করবে। এ সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের ব্যবসা গুছিয়ে নেবে। তার এ মন্তব্যের পর থেকেই বিনিয়োগকারীরা এইচপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। হুইটম্যানের বক্তব্যের পর নাসডাক শেয়ারবাজারে এইচপির শেয়ারদর ৮ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া লেনদেনের বর্ধিত সময় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারমূল্য ১৩ শতাংশ কমে যায়। এক দশকের মধ্যে ওই দিন প্রতিষ্ঠানটির দর সর্বোচ্চ কমে যায়।
প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের কিছু ঘটতে পারে তা মেগ হুইটম্যান নিজেও জানতেন। তার পরও তিনি সরাসরি বিনিয়োগকারীদের সামনে বলার সাহস দেখিয়েছেন। প্রতি প্রান্তিকে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের ফিরিস্তি শোনানোর চেয়ে প্রতিষ্ঠানটির উন্নতির দিকে মনোযোগ দিতে চান তিনি। এ কারণে সাময়িক সময়ের জন্য শেয়ারের দাম কমে গেলেও মেগ হুইটম্যান এ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিলেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
বিশ্লেষকরাও হুইটম্যানের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। মুর ইনসাইটস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিক মুরহেড বলেন, ‘প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকেন। তাদের একটি কথায় প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম ব্যাপক ওঠানামা করতে পারে। এ অবস্থায় হুইটম্যান অকপটে সত্যি কথা বলে দৃঢ়চিত্তের পরিচয় দিয়েছেন। এইচপির এখন খুবই করুণ দশা। ঘুরে দাঁড়াতে একটু সময় লাগতেই পারে। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনেরও (আইবিএম) একই সময় লেগেছিল।
পারসোনাল কম্পিউটার, প্রিন্টার এবং কম্পিউটার সার্ভার বিক্রিতে এইচপি এখনো বিশ্বসেরা। গত বছর প্রতিষ্ঠানটি সব মিলিয়ে ১২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার আয় করেছিল। কিন্তু ২০১২ অর্থবছরে এ আয় ১২-১৩ শতাংশ কমবে বলে প্রতিষ্ঠানটি পূর্বাভাস দিয়েছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির পরিচালন মুনাফা গত বছর ৭ শতাংশ থাকলেও ভবিষ্যতে তা সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছে এইচপি। এ ছাড়া শেয়ারপ্রতি আয়ও গত বছরের তুলনায় এ বছর ১৬ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন হুইটম্যান।
১৩ মাস আগে মেগ হুইটম্যান এইচপির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর থেকে তিনি এইচপির ব্র্যান্ডিং ও বৈশ্বিক বিপণন এবং পণ্য উন্নয়নের খাতিরে প্রতিষ্ঠানটির উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা পদে রদবদল ঘটিয়েছেন। আগামী বছর থেকে এ পরিবর্তনগুলো দৃশ্যমান হবে বলে জানিয়েছেন হুইটম্যান।
বিশ্লেষকদের দেয়া মেগ হুইটম্যানের বক্তব্য অনুযায়ী, নিম্নমানের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ এবং ব্যবস্থাপনা এইচপির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তিনি আরও বলেন, এইচপি পণ্য উন্নয়ন কমানো এবং লোকসানি ব্যবসাগুলো বন্ধের প্রক্রিয়ায় আছে।
একটা সময় প্রিন্টার কার্টিজ থেকে এইচপি ৯০ শতাংশের বেশি মুনাফা অর্জন করত। আরও কম দামে প্রিন্টার কার্টিজ সরবরাহকারীদের কাছ থেকে বর্তমানে তারা ব্যাপক প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে। ব্যবহারকারীরা একসময় মানচিত্র ও বোর্ডিং পাস প্রিন্ট দিত। কিন্তু স্মার্টফোন এসে কাজ আরও সোজা করে দিয়েছে। এ কারণে তারা প্রিন্টার ব্যবহার কমিয়ে দিচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশে কম দামি কার্টিজ এবং বেশি দামের প্রিন্টার বেচছে এইচপি। -এসবিবি