
শনিবার ● ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » ভিয়েতনামে রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্যে ৩ ব্লগার আটক
ভিয়েতনামে রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্যে ৩ ব্লগার আটক
মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও বৈদেশিক নীতির সমালোচনা করে ব্লগ লেখার দায়ে ভিয়েতনামে তিন ব্লগারকে ৪ থেকে ১২ বছরের জেল দিয়েছেন দেশটির এক আদালত। বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। খবর এপির।
ব্লগার নগুয়েন ভান হেইকে ব্লগিংয়ের কারণে দেশটির ৮৮ ধারা অনুযায়ী ১২ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। একই কারণে দেশটির আরেক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা তা ফোঙ তানকে ১০ বছরের জেল দেয়া হয়।
হো চি মিং শহরের বিচারক নগুয়েন ফি লোঙ্গ বলেন, তাদের অপরাধ খুবই গুরুতর। তারা রাষ্ট্রবিরোধী কথা বলেছে। তাদের কঠিন শাস্তির প্রয়োজন।
আরেক ব্লগার ফ্যান তান হাই আদালতের কাছে প্রতিশ্রুতি করেন, তিনি এ ধরনের ব্লগ আর লিখবেন না। পরে তাকে ৪ বছরের জেল দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুলান্ড ভিয়েতনাম সরকারের কাছে বন্দীদের ছেড়ে দেয়ার দাবি জানায়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
দেশটির সংবিধানের ৮৮ ধারা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ধারাটিকে অস্পষ্ট ও ভিয়েতনাম সরকারের শোষণের হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করে আসছে।
আদালত রায়ে আরও জানান, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনজনকে আরও তিন থেকে পাঁচ বছর গৃহবন্দী হয়ে থাকতে হবে।
আদালতের শুনানিতে নগুয়েন ভান হেই বলেন, ‘আমি কখনো রাষ্ট্রের বিপক্ষে না। আমি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নই, বরং কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কথা বলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ভিয়েতনামের আইন অনুযায়ী নাগরিকদের নিজস্ব মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে।
আদালতের বিচারক লঙ্গ বলেন, তারা তাদের জনপ্রিয়তার ভুল ব্যবহার করেছে। তারা ইন্টারনেটে ভিয়েতনামের নেতাদের ও কমিউনিস্ট পার্টির নামে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে জনগণের বিশ্বাস নষ্ট করছে।
নগুয়েনের আইনজীবী রায়ের পর জানান, ‘আমি আদালতকে জানিয়েছি নগুয়েনের দোষ নেই। ৮৮ ধারার শাস্তির মধ্যে সে পড়ে না।’
মানবাধিকার সংস্থাগুলো তিন ব্লগারের মুক্তির দাবি জানিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া শাখার সহপরিচালক ফিল রবার্টসন বলেন, এটি পুরোপুরি হতাশাজনক। এ থেকে বোঝা যায়, দেশটির মানবাধিকারের অবস্থা কতটা খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। ভিয়েতনামে বেসরকারি সব গণমাধ্যম নিষিদ্ধ। দেশটির সব সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেল রাষ্ট্রপরিচালিত।
উল্লেখ্য, ২০১১-১২ সালের রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের প্রতিবেদনে ভিয়েতনাম ১৭৯টি দেশের মধ্যে ১৭২তম স্থান দখল করে। সাইবার নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রতিবেদনে দেশটিকে ইন্টারনেটের শত্রু বলা হয়। -এসবিবি