বুধবার ● ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » অক্টোবরে চূড়ান্ত হচ্ছে অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা
অক্টোবরে চূড়ান্ত হচ্ছে অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা
অনলাইন সাংবাদপত্রগুলোকে নিয়মের মধ্যে আনতে আগামী অক্টোবরের মধ্যে ‘অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা-২০১২’ চূড়ান্ত হচ্ছে। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক খসড়ার ওপর আগামী ১০ দিনের মধ্যে অনলাইন গণমাধ্যমের কাছ থেকে লিখিত মতামত চাওয়া হয়েছে।বুধবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনলাইন সংবাদ মাধ্যম প্রধান ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে নীতিমালা নিয়ে মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তথ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন।
সভায় বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এর এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন, বিডিনিউজের সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স এডিটর বেবী মওদুদ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসানুল করিম হেলাল, আইএনবির ব্যারিস্টার জাকির হোসেন, পিটিবি নিউজের আশিষ কুমার দে, প্রাইম খবরের প্রধান সম্পাদক এসএম মেজবাহ উদ্দিন, অল হেডলাইন নিউজ-এর নিউজ করেসপন্ডেন্ট সালিম সামাদ, ঢাকানিউজ২৪.কম এর স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এম জে ইসলাম, সহ অনলাইন গণমাধ্যমের ১১ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তবে প্রথম সারির অপর একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বার্তা২৪.কম এর সম্পাদক সরদার ফরিদ আহমেদকে এ আলোচনাসভায় ডাকা হয়নি।
এতে সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএফইউজে সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল ভূঁইয়া এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ।
তথ্য সচিবের সঙ্গে সরকারের পক্ষে আরও ছিলেন বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামালউদ্দিন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবুল হোসেন ও এসএম হারুন-অর-রশিদ, পিআইডি’র অতিরিক্ত মুখ্য তথ্য কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।
সভায় খসড়া নীতিমালা নিয়ে আলোচনার সময় অনলাইনের পক্ষে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিরা খসড়া নীতিমালার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তারা খসড়া নীতিমালায় ৫ লাখ টাকা জমা ও ৫০ হাজার টাকা নবায়ন ফি নির্ধারণের বিষয়টির বিরোধিতা করেন। সংবাদপত্রের ক্ষেত্রে এ নিয়ম না থাকলেও অনলাইনে এমনটি কেন থাকবে, এমন প্রশ্ন তোলেন প্রতিনিধিরা।
সভায় প্রতিনিধিরা বলেন, সংবাদপত্রের মতো অনলাইন নীতিমালা না হলে এটি হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে একটি প্রতিবন্ধকতা।
সভায় গণমাধ্যমে প্রধানরা খসড়া নীতিমালায় লাইসেন্স নবায়নের বিষয়টি বাতিল ও জাতীয় রেগুলেটরি কমিটিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রাখার দাবি জানান।
সভায় তথ্য সচিব বলেন, “আমরা নীতিমালার মাধ্যমে অনলাইন গণমাধ্যমের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করতে চাই না। বরং নীতিমালাকে বিকাশের সহায়ক করতে চাই।”
কমিউনিটি রেডিওর নীতিমালাকে ভিত্তি ধরে এ খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সরকারি হিসেবে সারাদেশে ২০০ অনলাইন সংবাদপত্র থাকলেও অনলাইন সংবাদ মাধ্যম পরিচালনার জন্য দেশে কোনো আইন, নীতিমালা ও অধ্যাদেশ নেই। সে কারণে নীতিমালা জরুরি বলে জানান তথ্য সচিব।
তথ্য সচিব জানান, বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আলাদাভাবে আলোচনায় বসা হবে।
খসড়া নীতিমালায় যা আছে
লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে জন্য এককালীন পাঁচ লাখ টাকা তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। প্রতিবছর নবায়ন ফি দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা। সরকার প্রয়োজনে লাইসেন্স ফি পুনর্নিধারণ করতে পারবে। মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিন পূর্বে লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করতে হবে। কোনো কারণে নির্দিষ্ট সময়ে লাইসেন্স নবায়নে ব্যর্থ হলে ৫ হাজার টাকা সারচার্জ জমা দিয়ে সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে।
আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত ফরমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে পাঁচ হাজার টাকার অফেরতযোগ্য ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার জমা দিয়ে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
আবেদনের সাথে আর্নেস্ট মানি বাবদ অফেরতযোগ্য দুই লাখ টাকা ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার জমা দিতে হবে। লাইসেন্স পাওয়ার পর এ আর্নেস্ট মানি জামানত হিসেবে গণ্য হবে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো অনলাইন গণমাধ্যমের মালিক বা পরিচালক সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে একাধিক অনলাইন গণমাধ্যমের মালিক বা পরিচালক হতে পারবেন।
সরকারের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে, বিটিআরসির প্রদত্ত শর্ত ভঙ্গ করলে, নীতিমালার শর্ত ভাঙলে এবং সরকারের কোনো নির্দেশ প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করা হবে।
সম্প্রচারিত বিষয়ের রেকর্ড (কনটেন্ট) কমপক্ষে ৯০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে।
অনলাইন গণমাধ্যম স্থাপন ও পরিচালনায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সভাপতি করে ১৪ সদস্যের ‘জাতীয় রেগুলেটরি কমিটি’ গঠন করা হবে। এছাড়া যুগ্ম সচিবকে (সম্প্রচার) সভাপতি করে ৯ সদস্যের একটি তদারকি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়া নীতিমালায়। সূত্রঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম