বুধবার ● ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » প্রচারণার জন্য ফেসবুক পেজ খুলছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদরা
প্রচারণার জন্য ফেসবুক পেজ খুলছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদরা
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদরা প্রচারণার জন্য ইদানিং ফেসবুক ব্যাবহার করছেন। শুরুটা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। কেন তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রণবের পক্ষ নেবেন না, তা জানাতে ফেসবুকে খুলেছিলেন পেজ। প্রণবের বিপক্ষে প্রচারণা চালানোর জন্যও মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ফেসবুককে। পরবর্তী সময়ে তিনি প্রণবের পক্ষে সমর্থন দিলেও ফেসবুক ব্যবহারের প্রথাটি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদদের মধ্যে খুব ভালোভাবেই চালু করে দেন। এখন এ অঞ্চলের রাজনীতিবিদরা ফেসবুকের ওয়াল পোস্টের মাধ্যমে নিজেদের মতামত পৌঁছে দিচ্ছেন জনগণের কাছে। সুবিধাও আছে এতে। রাজনীতিবিদদের বক্তব্য সাংবাদিকদের হাতে পড়ে পরিবর্তন হচ্ছে না, দ্রুত পৌঁছে দেয়া যাচ্ছে মতামত।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের অধীনে দেশের আইনশৃঙ্খলার কতটুকু উন্নতি বা অবনতি হয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী সম্প্রতি কী করেছেন- এসব নিয়েই আলোচনা হচ্ছে এখন ফেসবুকে। নেতাদের পাশাপাশি এ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন সমর্থকরাও।
ধর্ষণের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের সমর্থন প্রকাশ, সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য এখন রাজনীতিবিদরা বেছে নিচ্ছেন ফেসবুক।
পশ্চিমবঙ্গের বন ও পরিবেশমন্ত্রী হিতেন বর্মণ এ বিষয়ে এনডিটিভিকে বলেন, আপনি যদি একজন রাজনীতিবিদ হন তাহলে ফেসবুকের মতো সাইটে অ্যাকাউন্ট থাকা খুবই জরুরি। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন দ্রুত জনগণের কাছে তথ্য পৌঁছে দেয়া যায়, অন্যদিকে তথ্যে ভুল হওয়ার আশঙ্কাও কম থাকে।
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সহযোগী হিসেবে কাজ করা কংগ্রেসও এ অঞ্চলের জনগণের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফেসবুক পেজ খুলেছে। এ অঞ্চলে কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রদীপ ভট্টাচার্য এটি নিয়মিত ব্যবহার করেন।
বামপন্থী দলগুলো ১৯৯০ সালে ভারতে কম্পিউটার ব্যবহারের বিরুদ্ধে থাকলেও তারাই ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি নিয়মিত। ভারতের চতুর্থ বৃহত্ প্রদেশের জনগণের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের জন্য ফেসবুকই তাদের ভরসা।
তবে একটি বিষয় তিনটি দলের মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায়। গত বছর পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের জন্য কংগ্রেস, তৃণমূল ও বামপন্থীদের মধ্যে ফেসবুকে অনেক কাদা ছোড়াছুড়ি হলেও তাদের প্রধান নেতৃবৃন্দের অফিশিয়াল কোনো বিবৃতি ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়নি।
ভারতের ১৩তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় এ বিষয়টিরও পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। তিনি সে সময় ফেসবুকে তার মতামত স্পষ্টভাবেই প্রকাশ করেছিলেন।
ফেসবুককে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করেছেন মমতা ব্যানার্জি। ১৮ জুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় প্রচারণা চালানোর জন্য তিনি যে পেজটি খোলেন সেখানে এ পর্যন্ত ৯২ হাজার লাইক পড়েছে। এ ছাড়া এ পর্যন্ত তিনি পেজটিতে ১৮টি পোস্ট দিয়েছেন, যার প্রতিটিতে গড়ে ২ হাজার মন্তব্য পড়েছে।
তবে মুদ্রার বিপরীত দিকও রয়েছে। এ মমতাই আবার ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ধুয়ে দিয়েছিলেন। তিনি একসময় বলেছিলেন- যারা ফেসবুক ব্যবহার করেন, সরকারকে বিভ্রান্ত করতে চান তাদের বিপক্ষে তিনি।
এ বিষয় নিয়ে আবার মমতাকে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেসের ভট্টাচার্য। তিনি বলেন- এটি খুবই আশ্চর্য, তিনি একবার ফেসবুকের পক্ষে আরেকবার বিপক্ষে বলেন।
পশ্চিমবঙ্গে ফেসবুক ব্যবহার করেন এমন রাজনীতিবিদদের মধ্যে আরও রয়েছেন শহর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূলের নেতা সানকুদেব পাণ্ডা, কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিম্রা ও সিপিআইএমের নেতা সুজন চক্রবর্তী, সামিক লাহিড়ী, তন্ময় ভট্টচার্য।