মঙ্গলবার ● ১১ সেপ্টেম্বর ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » স্টিভ জবস ইলেকট্রনিকস ছাত্রবেলা
স্টিভ জবস ইলেকট্রনিকস ছাত্রবেলা
।। রামিশাহ তাসবিহ নির্ঝর ।।
জন্ম ১৯৫৫ সালে সানফ্রান্সিসকোয়। সদ্য জন্ম নেয়া জবসকে অন্য পরিবারে দত্তক দিতে হয়। বিশ্ব কাঁপানো প্রযুক্তিপণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার জীবনের শুরুটা ছিল এমন নাটকীয়।
জবসকে দত্তক নিয়েছিলেন পল জবস ও ক্লারা জবস। জবস দম্পতি শিশুটির নাম দেন স্টিভ পল জবস। তার প্রকৃত মা ক্যারলের ইচ্ছা ছিল, যারা শিশুটিকে দত্তক নেবেন, তারা যেন স্নাতক ডিগ্রিধারী হন। কিন্তু পরে দেখা গেল, পল জবস উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়া করেছিলেন। ক্লারাও কখনোই স্নাতক পাস করেননি। অগত্যা ক্যারল নতুন শর্ত দেন, জবসকে অবশ্যই কলেজ পর্যন্ত লেখাপড়া করাতে হবে।
পাঁচ বছর বয়সেই জবসের নতুন মা-বাবা তাকে নিয়ে চলে আসেন ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউয়ে। সেখানেই শুরু হয় জবসের নতুন জীবন। প্রাথমিক শিক্ষার পাটটা শুরু হয়েছিল পরিবার থেকেই। কিন্তু পরে প্রথাগত শিক্ষাজীবনটা ঠিক সুবিধার হয়নি জবসের জন্য। শিক্ষকরা তার মা-বাবাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, জবসকে দিয়ে লেখাপড়া হবে না। এর চেয়ে ওকে কোনো একটা কাজে ঢুকিয়ে দেন। মাউন্টেন ভিউয়ের মন্টা লোমা এলিমেন্টারি স্কুলে চতুর্থ গ্রেডে পড়ার সময় জবসের শিক্ষককে ঘুষ দিতে হয়েছিল। তবু তার মা-বাবা হাল ছাড়েননি।
লেখাপড়ার চেয়ে জবস অনেক বেশি আনন্দ পেতেন বাবার ভাঙা যন্ত্রপাতির গ্যারেজে সময় কাটাতেই। তার বাবা ছিলেন ইলেকট্রনিকস মেরামতকারী। পারিবারিক গ্যারেজে বসেই বাবা পল রেডিও, টিভিসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতি মেরামত করতেন। ছোট্ট জবসের জীবনে সেই সময়টা ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। এ সময়ই ইলেকট্রনিকসে তার আগ্রহ তৈরি হয়। পরে তিনি কুপারটিনো জুনিয়র হাইস্কুল এবং হোমস্টিড হাইস্কুল থেকে লেখাপড়া শেষ করেন। তখন মাঝেমধ্যেই তিনি হিউলেট-প্যাকার্ড কোম্পানির লেকচারগুলোয় অংশগ্রহণ করতেন। পাশাপাশি কাজ করতেন স্টিভ ওজনিয়াক ও বন্ধু বিল ফার্নান্দেজের সঙ্গেও। স্টিভ ওজনিয়াক ও বিল ফার্নান্দেজ ‘দ্য ক্রিম সোডা কম্পিউটার’ নামে একটি কম্পিউটার বোর্ড বানিয়েছিলেন ১৯৬৯ সালে। জবসও খুব আগ্রহ নিয়েই গ্রীষ্মকালীন কর্মচারী হিসেবে যুক্ত হন তাদের সঙ্গে।
১৯৭২ সালে হাইস্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে ভর্তি হন পোর্টল্যান্ডের রিড কলেজে। তার মা-বাবার জমানো টাকা দিয়ে কলেজটা ঠিক চালানো যাচ্ছিল না। ফলে ছয় মাসের মধ্যেই কলেজ ছাড়তে হয়। কিন্তু তার পরও বসে ছিলেন না জবস। পরে ১৮ মাস তিনি তার মতো করে লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন। সে সময় করা কোর্সগুলোর মধ্য থেকে বাদ যায়নি ক্যালিগ্রাফিও। পরে প্রত্যেকটি শিক্ষাই তিনি কাজে লাগিয়েছিলেন তার পেশাগত জীবনেও। এই সর্বহারা জীবন থেকেও খুঁজে নিয়েছিলেন কাজের শিক্ষাটুকু!