সোমবার ● ১৩ আগস্ট ২০১২
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » গ্রাহকের ৯২ কোটি টাকা ফেরত দিতে হবে বাংলালিংককে
গ্রাহকের ৯২ কোটি টাকা ফেরত দিতে হবে বাংলালিংককে
অনুমোদনহীন সেবার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া ৯২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ফিরিয়ে দিতে দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ সেলফোন অপারেটর বাংলালিংককে নির্দেশ দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে এ বিষয়ে এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ বা আগামীকালের মধ্যে এ বিষয়ে বাংলালিংককে চিঠি দেয়া হবে বলে বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ বলেন, গ্রাহকদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে এ টাকা নেয়া হয়েছে। গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দিতে বাংলালিংককে নির্দেশ দেয়া হবে। আর অনুমোদন ছাড়া এ সেবা চালুর কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনুমোদনহীনভাবে আয় করা এ অর্থ অবৈধ। এক মাসের মধ্যে এ প্যাকেজের মাধ্যমে আয় করা টাকা গ্রাহকদের এবং জরিমানার টাকা বিটিআরসিকে দিতে হবে তাদের।
জানা গেছে, বিটিআরসির অনুমোদন ছাড়াই দিনে ৪ টাকা দিলে ৬৫ পয়সা মিনিটে কথা বলার সুযোগ দিয়ে গত বছরের শুরুর দিকে একটি অফার চালু করে বাংলালিংক। এ প্যাকেজের আওতায় গ্রাহকদের কাছ থেকে ৯২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা নেয়া হয়। পরে এ অফারের বিষয়ে বাংলালিংকের কাছে জানতে চায় বিটিআরসি। এ সময় প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জানায়, প্রতিদিন ৪ টাকা হারে গ্রাহকদের কাছ থেকে মোট ৯২ কোটি টাকা নেয়া হয়েছে। গত ডিসেম্বরে এ সেবা বন্ধ করে দেয় হয়। তবে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া এ অর্থ প্রি-পেইডের ক্ষেত্রে আই-টপ-আপ হিসেবে এবং পোস্ট-পেইড গ্রাহকের ক্ষেত্রে বিলের সঙ্গে সমন্বয় করে ফেরত দিতে বলেছে বিটিআরসি।
তবে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বাংলালিংকের জ্যেষ্ঠ পরিচালক (বিপণন) শিহাব আহমেদ।
সেলুলার মোবাইল ফোন অপারেটর রেগুলেটরি অ্যান্ড লাইসেন্সিং গাইডলাইন অনুযায়ী, প্রতিটি প্যাকেজ চালুর আগে বিটিআরসির অনুমোদন নিতে হবে অপারেটরদের। অনুমোদনহীন সেবার বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিটিআরসি। গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রক হিসেবে বিটিআরসি এ অবস্থান নিয়েছে। সেলফোন অপারেটররা অনুমোদনহীন বেশ কয়েকটি সেবা দিচ্ছে বলে বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো এসব প্যাকেজ চালু করেছে। সম্প্রতি এ ধরনের অনুমোদনহীন বেশ কয়েকটি প্যাকেজের বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এদিকে, গত সপ্তাহে সেলফোন অপারেটরদের টুজি লাইসেন্স নবায়ন করেছে বিটিআরসি। তবে এখন গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করতে অপারেটরদের বাধ্য করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ জন্য বিদ্যমান নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনা হতে পারে। বিটিআরসির একটি সূত্র জানায়, অপারেটরগুলো যেসব অফার দিচ্ছে সেগুলোতে এমনভাবে সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয় যাতে করে গ্রাহক এর পুরো সুবিধা ভোগ করতে না পারেন। এসব ক্ষেত্রে অব্যবহূত অংশ পুনর্ব্যবহারের সুযোগ রাখা হয় না। অথচ এ জন্য পুরো টাকা দিতে হয় গ্রাহককে। ফ্রি টক টাইম, ফ্রি এসএমএস ও ইন্টারনেট বান্ডল অফারের ক্ষেত্রে এ অভিযোগ রয়েছে। অনৈতিক এসব অফার চালুর ক্ষেত্রে অপারেটররা অনেক ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়েও দেনদরবার করছে বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান।
প্রসঙ্গত, জুনশেষে দেশে সেলফোন গ্রাহক সংখ্যা ৯ কোটি ৩৭ লাখ পেরিয়েছে। এর মধ্যে বাংলালিংকের গ্রাহকসংখা ২ কোটি ৫৫ লাখ।-SBB