বুধবার ● ৮ আগস্ট ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » অস্ট্রেলিয়ায় বেড়েই চলছে সাইবার জালিয়াতি
অস্ট্রেলিয়ায় বেড়েই চলছে সাইবার জালিয়াতি
বিশ্বব্যাপী বাড়ছে সাইবার জালিয়াতি। হ্যাকাররা নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নামে পরিচয় দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটাচ্ছে প্রায়ই। সম্প্রতি এ প্রবণতা বেড়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। এ পর্যন্ত হ্যাকাররা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। তারা সরকারি কর্মকর্তার পরিচয়েও প্রতারণা করে থাকে, যাতে লোকজন খুব সহজেই প্রতারিত হয়। খবর সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের।
অস্ট্রেলিয়ার ফেয়ার ট্রেডিং বিভাগের তথ্য অনুসারে, বছরের প্রথম সাত মাসে তারা হাজারের বেশি সাইবার জালিয়াতির অভিযোগ পেয়েছেন। গত মাসের প্রথম দুই সপ্তাহেই পাওয়া গেছে ৫০টি অভিযোগ। এ রকমই জালিয়াতির ঘটনায় এক নারী তার সঞ্চয় করা ১১ হাজার ডলার খুইয়েছেন। সরকারি কর্মকর্তার পরিচয় ধরে এক হ্যাকার তার বাসার কম্পিউটারে প্রবেশ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয়। তিনি ব্যাংকে অতিরিক্ত ফি জমা দিয়েছেন বলে জানিয়ে সেগুলো উঠিয়ে নিতে বলা হয়।
হ্যাকিংয়ের ঘটনাগুলো দারুণভাবে সাজানো থাকে। যোগাযোগের জন্য দেয়া হয় বিশ্বাসযোগ্য একাধিক ফোন নাম্বার। ফলে ক্রেতারা ধারণা করেন, তারা সরকারের কোনো বিভাগের সঙ্গেই কথা বলছেন। জালিয়াতরা মূল্য হ্রাসে বাড়ি মেরামত, গাছ ছাঁটাই করে দেয়ার কথা জানায়। সম্পদ বাড়ানোর স্কিমের কথা বলেও মানুষকে প্রলুব্ধ করে তারা। মেরিল্যান্ডের এক অধিবাসী মে মাসের শুরুতে জালিয়াত চক্রের শিকার হন। তাকে বলা হয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তিনি হাজারের বেশি ডলার জিতেছেন। তাকে আরও বলা হয়, তিনি যেন নিকটবর্তী পোস্ট অফিসে গিয়ে কিছু অর্থ জমা করে একটি অ্যাকাউন্ট চালু করেন। তাহলে তিনি তার প্রাপ্য অর্থ পাবেন। প্রতারণার বিষয়টি বুঝে ওঠার আগেই তিনি ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের একটি অ্যাকাউন্টে ৭০০ ডলার জমা রাখেন।
ফেয়ার ট্রেড মন্ত্রী অ্যান্থনি রবার্টস জানিয়েছেন, অনেকেই প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারলেও কিছু কিছু মানুষ রয়েছেন, যারা সহজেই প্রতারকদের ফাঁদে পা দেন। রবার্ট বলেন, জালিয়াতরা কৌশলী ও চতুর হওয়ায় অনেক নির্দোষ মানুষ তাদের অর্থ হারাচ্ছেন। জালিয়াতরা সরকারি কর্মকর্তার ছদ্মবেশ ধরেও জালিয়াতি করছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষের আস্থাকে কাজে লাগাচ্ছে তারা। ফেয়ার ট্রেডিং ও কর অফিসের কর্মীদের পরিচয়েও জালিয়াতি করছে তারা। তিনি আরও বলেন, প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিরা হীনম্মন্যতায় ভোগেন। অনেক ঘটনা নিয়ে তারা কোনো অভিযোগও করেন না। বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিই অভিযোগ করতে গিয়ে অস্বস্তি বোধ করেন।
ভেরা ফেগালি নামে এক নারী ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের একটি অ্যাকাউন্টে ১ হাজার ২০০ ডলার জমা দেয়ার পর বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এক জালিয়াত নিজেকে কর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তার বাসায় টেলিফোন করে। ফেগালির কর বাবদ অর্থ বাকি রয়েছে বলে জানিয়ে তা পরিশোধ করতে অনুরোধ করে। প্রতারণার শিকার ফেগালি বলেন, ‘যখন কেউ টেলিফোন করে আপনার কাছে সরকারের প্রতিনিধি বলে পরিচয় দেয় এবং পোস্ট অফিসে গিয়ে অর্থ পরিশোধ করতে বলে, তখন আপনি তাদের বিশ্বাস করাই স্বাভাবিক।’