
বুধবার ● ৯ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাড়ছে অভিবাসীর সংখ্যা: ডিজিটাল অভিবাসনে কাজ করছে আমি প্রবাসী
চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাড়ছে অভিবাসীর সংখ্যা: ডিজিটাল অভিবাসনে কাজ করছে আমি প্রবাসী
বাড়তি খরচ, প্রশাসনিক জটিলতা এবং চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নানা অনিয়মের কারণে কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশ যাত্রা বাংলাদেশের অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। দেশ ছাড়ার আগে অনেককে অপ্রত্যাশিত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। তবে এক্ষেত্রে একটি সমাধান হতে পারে ডিজিটাল অভিবাসন সেবা, যা দালালদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ও বিদেশে চাকরির নির্ভরযোগ্য তথ্য দিয়ে অভিবাসীদের বিদেশ যাত্রা কিছুটা সহজ করতে পারে।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর সেফ, অর্ডারলি অ্যান্ড রেগুলার মাইগ্রেশন (জিসিএম)’ এর আঞ্চলিক পর্যালোচনার জাতীয় পরামর্শ সভায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন অভিবাসনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘দারিদ্র্য ও বেকারত্ব শূন্যে নামিয়ে আনার একটি শক্তিশালী মাধ্যম হতে পারে অভিবাসন, যা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের থ্রিজিরো তত্ত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
আমি প্রবাসীর ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ১০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কাজের জন্য বিদেশে গেছেন, যার মধ্যে সৌদি আরব (৬ লাখ ২৭ হাজার কর্মী) ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্য। তবে আগ্রহী অভিবাসীরা প্রায়ই প্রতারক দালাল, অতিরিক্ত অভিবাসন খরচ এবং জটিল প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হন, যা বিদেশে গমনে বাধার সৃষ্টি করে।
শ্রমিকদের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয় উচ্চ অভিবাসন ব্যয়। সরকার কর্তৃক নিয়োগ ফি নির্ধারিত হলেও, অনেক নিয়োগকারীই অভিবাসীদের কাছ থেকে নিয়োগ বাবদ হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। ফলে স্বচ্ছ ও প্রযুক্তি-নির্ভর অবকাঠামোর প্রয়োজনীয়তা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি। ডিজিটাল অভিবাসন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান আমি প্রবাসী কাজ করে চলছে সেই লক্ষ্যেই। তারা অভিবাসীদের জন্য প্রতিনিয়ত অভিবাসন প্রক্রিয়া সহজতর করেছে, নির্ভরযোগ্য চাকরির সুযোগ তৈরি করছে এবং দালালদের উপর থেকে নির্ভরতা কমাচ্ছে।
এদিকে, বিদেশ যাত্রায় নারীরা এখনো বেশ পিছিয়ে। ২০২৪ সালে মোট অভিবাসী শ্রমশক্তির মাত্র ৬ শতাংশ ছিলেন নারী। বিশেষকরে গৃহকর্মে নিয়োজিত নারী শ্রমিকরা চাকরির নিরাপত্তা, চুক্তি লঙ্ঘন এবং প্রবাসে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। প্রাক বহির্গমন প্রশিক্ষণ (পিডিও) এবং কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্র সমূহে দক্ষতা উন্নয়নের বিভিন্ন কোর্সে ভর্তির সংখ্যা বাড়লেও, নিরাপদ এবং স্বচ্ছ অভিবাসন চর্চা এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, বাংলাদেশিদের বিদেশ যাত্রার আগ্রহ প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৪ সালে নতুন বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৭৬ জন। অদক্ষ শ্রমিক রপ্তানি থেকে শুরু করে পেশাদার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, আইটি এবং নির্মাণ শিল্পে শ্রমিক যোগানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
আমি প্রবাসীর প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক ই হক বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অভিবাসনকে কাজে লাগাতে চাইলে আমাদেরকে শোষণমূলক কার্যকলাপ দূর করতে হবে, সঠিক তথ্যদিয়ে কর্মীদের সাহায্য করতে হবে এবং একটি স্বচ্ছ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে যেখানে প্রত্যেক অভিবাসী সমান মর্যাদা এবং সমান নিরাপত্তার সাথে সুযোগ পেতে পারেন।’
বাংলাদেশ তার অভিবাসন খাতকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে এবং আমি প্রবাসী অনলাইন ওয়ানস্টপ সার্ভিস, দ্রুততম ডকুমেন্ট প্রসেসিং, অনলাইন প্রশিক্ষণ এবং সরাসরি বিদেশি নিয়োগকারীদের সাথে সংযোগের মাধ্যমে সেই লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।