বৃহস্পতিবার ● ২ আগস্ট ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » হার্ডডিস্ক বাজারে সিগেটের দখল ৪২ শতাংশ
হার্ডডিস্ক বাজারে সিগেটের দখল ৪২ শতাংশ
গত বছর থাইল্যান্ডে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন পণ্য, বিশেষ করে হার্ডডিস্কের দাম বেড়ে যায় অনেকটা। এ অবস্থায় ভালো মুনাফা করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হার্ডডিস্ক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিগেট। ২০১১-১২ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা শত কোটি ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়েছে। সব মিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ডিজিটালকে (ডব্লিউডি) টপকে হার্ডডিস্ক বাজারের শীর্ষে রয়েছে সিগেট। খবর রয়টার্সের।
ডিস্ক নির্মাতা এ প্রতিষ্ঠানটির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল। সর্বশেষ দুই প্রান্তিক তুলনা করলে এগিয়ে ডব্লিউডি, কিন্তু বার্ষিক হিসাবে সিগেটের হার্ডডিস্কের বাজারে দখলের পরিমাণ ৪২ শতাংশ। এ কারণে এখনো এ বাজারের কর্তৃত্ব সিগেটের হাতে।
স্যামসাংয়ের হার্ডডিস্ক ব্যবসা কিনে নেয়ার পর বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে সিগেটের মোট আয় হয়েছে ৪৪৮ কোটি ডলার। তিন সপ্তাহ আগে এক পূর্বাভাসে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছিল, চতুর্থ প্রান্তিকে ৫০০ কোটি ডলার আয় করতে পারে সিগেট। কিন্তু চতুর্থ প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী এর পরিমাণ কিছুটা কম। তবে আগের বছরের একই সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে প্রতিষ্ঠানটির আয় ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। তবে তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটির আয় বেড়েছে মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ। বিশ্লেষকরা জানান, থাইল্যান্ডের বন্যার কারণে হার্ডডিস্কের যে সংকট হয়েছিল, তা পুরোটা কেটে গেছে। তাই চতুর্থ প্রান্তিকে হার্ডডিস্ক নির্মাতাদের আয় খুব বেশি বাড়েনি।
সিগেটের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে সিগেটের মুনাফা হয়েছে ১১৩ কোটি ডলার, যা এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় ৭৫১ শতাংশ বেশি। গত বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা তার আগের বছরের তুলনায় ৮ শতাংশ কম হয়েছিল।
২০১১-১২ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির হার্ডডিস্ক বিক্রি হয়েছে ৬ কোটি ৬০ লাখ ইউনিট। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী ডব্লিউডির চেয়ে পিছিয়ে ছিল সিগেট। এ সময় ডব্লিউডি বিক্রি করেছে ৭ কোটি ১০ লাখ ইউনিট। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির আয় হয়েছে ৪৮০ কোটি ডলার, কিন্তু মুনাফা হয়েছে ৭৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। অর্থাত্ প্রতিষ্ঠানটির প্রচুর বিক্রি হলেও রাজস্ব কমেছে। থাইল্যান্ডে বন্যায় ডব্লিউডির পিছিয়ে পড়ায় সিগেট সুযোগ কাজে লাগিয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে বর্তমানে সিগেট যে মুনাফা করছে তা প্রতিষ্ঠানটি ধরে রাখতে পারবে কি না, এ নিয়ে বিশ্লেষকরা সংশয়ে।
পুরো অর্থবছরে সিগেটের রাজস্ব ও মুনাফার পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ৯০ লাখ ও ২৮৬ কোটি ডলার। এর আগের বছর এর পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ৯৭ কোটি ও ৫১ কোটি ১০ লাখ ডলার। অন্যদিকে ২০১১-১২ অর্থবছরে ডব্লিউডির রাজস্ব ও মুনাফা যথাক্রমে ১ হাজার ২৪৮ কোটি ও ১৬১ কোটি ডলার। বার্ষিক বিক্রি ও মুনাফার ভিত্তিতে সিগেট এখনো হার্ডডিস্ক বাজারের কর্তৃত্ব ধরে রেখেছে।
হার্ডডিস্ক ছাড়াও স্যামসাংয়ের সঙ্গে অংশীদারে নতুন এসএসডি বাজারে আনছে সিগেট। এ ছাড়া অন্যান্য হাইব্রিড ড্রাইভ বাজারে আনার কথা রয়েছে। বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল, ওসিজেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে অধিগ্রহণ করতে পারে সিগেট। তবে ওসিজেড না হলেও তারা অন্য একটি সলিড স্ট্রেট ড্রাইভ (এসএসডি) নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে অধিগ্রহণ করেছে।
সিগেটের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) প্যাট ও ম্যালের সূত্র ধরে রয়টার্স জানায়, প্রতিষ্ঠানটি এসএসডি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করতে আগ্রহী। আর্থিক খতিয়ান প্রকাশের সময় সিগেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্টিভ লাকজো জানান, সিগেটের নতুন ফ্ল্যাশ ড্রাইভ আসছে। তিনি বলেন, স্যামসাংয়ের সঙ্গে অংশীদারি ভিত্তিতে নতুন কিছু পণ্য বাজারে আনা সম্ভব হবে। এ বছরের শেষ নাগাদ এ ধরনের কিছু পণ্য পরীক্ষামূলকভাবে হলেও বাজারে পাওয়া যাবে। নোটবুকের জন্য তৈরি তৃতীয় প্রজন্মের হার্ডড্রাইভও পাওয়া যাবে।
এসএসডির প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা ডেনসবিটসকেও অধিগ্রহণের কথা জানিয়েছেন লাকজো। প্রতিষ্ঠানটির সহায়তায় পরবর্তী প্রজন্মের এসএসডি নিয়ে গবেষণা চলছে।