শনিবার ● ৪ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » নতুন “ডিজিটাল সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪” মানবাধিকার লঙ্ঘনের নতুন হাতিয়ার
নতুন “ডিজিটাল সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪” মানবাধিকার লঙ্ঘনের নতুন হাতিয়ার
আজ ৪ জানুয়ারি বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র সম্মেলন কেন্দ্রে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘ভয়েস ফর রিফর্ম’ আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেন, ‘সাইবার সিকিউরিটি আইন ২০১৮’ বাতিল করে “ডিজিটাল সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪” জারি করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খার সাথে বিশাল বিশ্বাসঘাতকতাI এই অধ্যাদেশে জনগণের মৌলিক মানবাধিকারের বিষয়সমূহ সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা হয়েছেI তাড়াহুড়া করে আগের আইনের নানা বিতর্কিত ধারা বহাল রেখে নতুন কিছু জিনিস যুক্ত করে একটি জগাখিচুড়ি অধ্যাদেশ তৈরী করা হয়েছে বলে বক্তারা বলেনI
মানবাধিকার কর্মী আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক মানবাধিকার কর্মী আইরিন খান, মানবাধিকার বিষয়ক আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়া, রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের দিদারুল আলম ভূঁইয়া, রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার ফুয়াদ, রাজনীতিবিদ ববি হাজ্জাজ, eআরকি’র প্রধান সিমু নাসের, টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের সাবহানাজ রশীদ দিয়া, ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-আহবায়ক ফাহিম মাশরুরসহ অনেকেI
আইরিন খান বলেন, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতির সংস্থার বিভিন্ন মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট কনভেনশনে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছেI এই আইনের বেশ কিছু ধারা সেগুলোর সাথে সাংঘর্ষিকI
ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, নারী ও শিশুসহ যাদের সুরক্ষার জন্য এই আইনে নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে, নতুন এই অধ্যাদেশটি তৈরী করার সময় তাদের সাথে কোনো কথা বলা হয়নিI
রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের দিদারুল আলম অভিযোগ করেন, আগের সাইবার নিরাপত্তা আইন দিয়ে যেসকল ব্যক্তির বিরদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে তার বেশিরভাগই এখনো প্রত্যাহার করা হয় নি, যদিও অনেক উপদেষ্টা ও বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সেগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছেI
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, আমলারা সরকারকে ভুল পথে পরিচালিত করছে বলেই এরকম বাজে ও গণবিরোধী একটি অধ্যাদেশ সামনে আনা হয়েছেI
ফাহিম মাশরুর বলেন, এই অধ্যাদেশের সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে পুলিশের হাতে পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তারি ক্ষমতা দেওয়াI এর মাধ্যমে পুলিশকে সাধারণ জনগণকে হয়রানি ও চাঁদাবাজির করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছেI এছাড়া পুলিশ ইচ্ছা করলেই যে কারো মোবাইল তল্লাশি করতে পারবে যা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও ব্যক্তিস্বাধীনতার লঙ্ঘনI
অনুষ্ঠানের সভাপতি ও সঞ্চালক মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম বলেন, কয়েক হাজার জীবনের বিনিময়ে যে পরিবর্তন এসেছে এবং তার ধারাবাহিকতায় যে নতুন সরকার এসেছে, তাদের কাছ থেকে এরকম একটি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী অধ্যাদেশ কোনোভাবেই আশা করা যায় নাI কোনোভাবেই এই অধ্যাদেশ চূড়ান্তভাবে প্রণয়ন করা যাবে নাI মানবাধিকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সকল নাগরিকের মতামত নিয়ে নতুন করে সাইবার জগতে সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় আইন বা অধ্যাদেশ তৈরির উদ্যোগ নিতে হবেI খসড়া অধ্যাদেশটি অবিলম্বে বাতিল করতে হবেI