মঙ্গলবার ● ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » প্রযুক্তির সাহায্যে নারীর প্রতি সহিংসতা মোকাবেলা শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
প্রযুক্তির সাহায্যে নারীর প্রতি সহিংসতা মোকাবেলা শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে প্রয়োজন জেন্ডার সংবেদনশীলতা ও মিডিয়া সাক্ষরতা। এ বিষয়গুলো প্রাথমিক পর্যায় থেকেই জাতীয় শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভূক্ত করা প্রয়োজন। ১০ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ২০২৪ এবং সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ৭৬তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে, বেসরকারী গবেষনা সংস্থা ভয়েস আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সভায় বক্তারা মানবাধিকার রক্ষার্থে, প্রযুক্তির সাহায্যে নারীর প্রতি অনলাইন সহিংসতা নির্মূল নিশ্চিত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
সভার সভাপতি ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সংগঠনের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, নারীর অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে গণ্য করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কিছুটা পিছিয়ে আছে। আমরা দেখতে পাই, বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে, নারীরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশের ফলে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।
উন্নয়ন সংস্থা, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের ২০২২ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল সহিংসতার মধ্যে নারীরা আপত্তিকর, ইঙ্গিতপূর্ণ ও বিদ্বেষমূলক উক্তি দ্বারা সবচেয়ে বেশি নাজেহাল হয়ে থাকেন। প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ নারীর এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই বছর, সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়েরনেস ফাউন্ডেশনের জরীপে দেখা গেছে, বর্তমানে নারীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ব্যক্তিগত একাউন্ট হ্যাকিং এর শিকার হচ্ছেন আশংকাজনক হারে। ৬০% নারী এই ধরনের হ্যাকিং এর সম্মুখীন হয়েছেন।
সভায় উপস্থিত নারীরা বলেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে সাইবার বুলিং, স্টকিং, অনলাইন হয়রানি, ডক্সিং, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে বানানো আপত্তিজনক ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটছে যা নারীদের ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং পেশাগত ভাবমূর্তিকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করছে। এ ধরণের প্ল্যাটফর্মে পরিচয় গোপন রাখার সুবিধা থাকায় অপরাধীরা এসব কাজ করতে উৎসাহ পাচ্ছে, কিন্তু ভুক্তভোগীদের পরিচয় প্রকাশ্যে চলে আসছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশেই নয়, এই ধরণের বিষয়গুলো বিশ^ব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে এবং দিনদিন এর মাত্রা বেড়ে চলছে।
আলোচনায় অনলাইনে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসার প্রতি জোর দেয়া হয়। এ সময় বাস্তবসম্মত সমাধান হিসেবে ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়নে জাতীয় পাঠ্যক্রম প্রণয়ন, জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা, কার্যকর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, নারীর ক্ষমতায়নে উদ্যোগ গ্রহন, পেশাগত প্রশিক্ষণ এবং ডিজিটাল সুরক্ষায় উন্নতব্যবস্থা কার্যকর করতে অনুরোধ জানানো হয়।