রবিবার ● ১৩ অক্টোবর ২০২৪
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » প্রযুক্তিখাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের দাবি প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের
প্রযুক্তিখাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের দাবি প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের
গত ১২ অক্টোবর ঢাকায় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে “বৈষম্যহীন উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার: নতুন করে যাত্রা” শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রযুক্তিভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাংক টিপাপ (টেক ইন্ডাস্ট্রি পলিসি এডভোকেসি প্লাটফর্ম) আয়োজিত এই আলোচনা সভায় অংশ নেয় শতাধিক প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও বিশেষজ্ঞI
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নবনিযুক্ত কমিশনার মাহমুদ হোসেনI
টিপাপ প্লাটফর্মের সমন্বয়কারী ও বিডিজবস প্রধান ফাহিম মাসরুরের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় প্রযুক্তি শিল্পের পক্ষ থেকে ২০টি পরামর্শ তুলে ধরেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা আদর্শ প্রাণিসেবার ফিদা হক ও অবাক টেকনোলোজির প্রধান দিদারুল ভূইয়াঁI
অনুষ্ঠানে টেলিকম বিশেষজ্ঞ মাহতাবউদ্দিন আহমেদ ডাটা ও কল রেট কমানোর ব্যাপারে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেনI তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে কিছু বিশেষ গোষ্ঠীকে ব্যবসায়িক সুবিধা দেওয়ার জন্য নানা ধরণের কৃত্রিম স্তর তৈরী করে বিশেষ লাইসেন্স দেওয়া হয়েছেI সময় এসেছে ইউনিফাইড সিঙ্গেল লাইসেন্স পদ্ধতি প্রবর্তন করারI এছাড়াও বিটিআরসি’র সোশ্যাল অবলিগেশন ফান্ড নিয়ে স্বচ্ছতা আনার দাবি জানান তিনিI সাধারণ নাগরিক যাতে সহজে স্মার্টফোন নিতে পারে তার জন্য বিটিআরসির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় রুলস সংশোধন করার আহবান জানান এবং এখনই কল রেট সিলিং উঠিয়ে নেওয়ার দাবি জানান তিনিI
টালিপে’র প্রধান ড. শাহাদাত খান আলোচনায় বলেন, নতুন বাংলাদেশে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল অবকাঠামো হবে ডাটা ইনফ্রাস্ট্রাকচারI একজন নাগরিক যাতে তার নিজের তথ্য তার ইচ্ছামত ব্যবহার (বা শেয়ার) করতে পারে সেই সুবিধা তৈরী করতে হবেI নতুন এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ডাটা এনালাইসিস করে সহজেই একজন অতি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেI
সভায় উপস্থিত ফ্রিল্যান্সারদের পক্ষ থেকে বলা হয়, পেপ্যাল ও স্ট্রাইপের মতো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট প্ৰতিষ্ঠানগুলো যাতে বাংলাদেশে কাজ শুরু করতে পারে তার ব্যাপারে জরুরি উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া উচিতI
সফটওয়ার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ব্রেইনস্টেশনের প্রধান রাইসুল কবির বলেন, কোম্পানিগুলো যাতে দেশের বাহিরে মার্কেটিং ও বিনিয়োগ করতে পারে সেজন্য বাংলদেশে ব্যাংককে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আইওটি উদ্যোক্তা বন্ডস্টেইনের মীর শাহরুখ ইসলাম বলেন, বর্তমানে আইওটি ডিভাইসের উপর শুল্ক থাকার কারণে আইওটি ও এর আনুসাঙ্গিক শিল্পের বিকাশ হচ্ছে নাI এই ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিতI
অন্যরকম গ্রূপের প্রধান মাহমুদুল হাসান সোহাগ বলেন, গুনগতমানের আইসিটি শিক্ষা বা ট্রেনিং না দেওয়া গেলে প্রযুক্তিখাত নিয়ে বেশি দূর আগানো যাবে নাI
দেশীয় বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা মাসুদ মীর বলেন, দেশে বৈদ্যতিক গাড়ি তৈরী করা খুবই জরুরি হলেও নানা আমলাতান্ত্রিক কারণে এখনো বেশি দূর আগানো যায় নাইI অনেক বক্তাই দেশে ক্যাশলেস লেনদেনের বাধাগুলো দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিটিআরসি’র দৃষ্টি আকর্ষণ করেনI
বিটিআরসি কমিশনার মাহমুদ হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, বিটিআরসি’র নেতৃত্ব টেলিকম ইন্ডাস্ট্রিতে এছাড়া ডাটা ও কল রেট কমানোর ব্যাপারে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়েছেI খুব শিগ্রই বেশ কিছু সংস্কার দৃশ্যমান হবেI তিনি বিটিআরসি’র স্বায়ত্বশাসনের ব্যাপারেও গুরুত্ব আরোপ করেন এবং বলেন যে গত সরকার টেলিকম মন্ত্রণালয়কে ক্ষমতা দিতে গিয়ে বিটিআরসিকে অনেক ক্ষেত্রেই অকার্যকর করে ফেলেছেI
বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, তার প্রতিষ্ঠান খুব দ্রুতই ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে একটি বিজনেস এডভাইসারি কাউন্সিল তৈরী করবে যাদের পরামর্শে দেশি ও বিদেশী বিনিয়োগ কিভাবে বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
সঞ্চালকারী ফাহিম মাশরুর বলেন, গত এক দশকে প্রযুক্তিখাতে যে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে তাতে শুধু কিছু দালান কোঠা তৈরি হয়েছে। কোনো কর্মসংস্থান তৈরি হয় নাই। নতুন সরকারের সবচেয়ে বড় প্রায়োরিটি হওয়া উচিত তরুণদের কর্মসংস্থান তৈরি।