রবিবার ● ১৩ অক্টোবর ২০২৪
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » ডিজিটাল মিডিয়ার আসক্তি পৃথিবীকে অশান্ত করছে
ডিজিটাল মিডিয়ার আসক্তি পৃথিবীকে অশান্ত করছে
আগে মানুষের জীবনযাপন অশান্ত হওয়ার পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ ছিল মাদক, এখন সেখানে জায়গা নিয়েছে ডিজিটাল মিডিয়ার আসক্তি। পারিবারিক বন্ধন কমছে; বিবাহবিচ্ছেদ, আত্মহত্যার প্রবণতা, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এসব বাড়ছে। সমাজবদ্ধ হয়ে থাকার বদলে একাকিত্ব থাকা মানুষের বিষন্নতা বাড়াচ্ছে। দৈনিক ১৫টি সিগারেটের ধুমপানে যে পরিমান ক্ষতি হয় একাকিত্বের ভয়াবহতাও সেরকম। তাই ভালো থাকার জন্য ইতিবাচক মানসিকতার চর্চা করে সমাজবদ্ধ হয়ে জীবনযাপনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
১১ অক্টোবর রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব বলেছেন বক্তারা। ‘UNLEASH THE POWER OF HEALING: Ultimate Guide to Decode Your Mind and Accelerate Inner Healing Towards Wellness’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে। বইটির লেখক ওয়েলনেস কোচ, মাইন্ড মেন্টর, করপোরেট ওয়েলনেস এক্সপার্ট ও পাবলিক স্পিকার ডা. মেছবাহ উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষাবিদ ও পাবলিকহেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মুজাহেরুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নূরুল আমিন, লাইফ স্প্রিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. সাইদুল আশরাফ কুশল, সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. সাইদুল ইসলাম সাইদ এবং এনসিসি ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. তৈয়ব আলী খান, সাংবাদিক ও গবেষক আ ফ ম মশিউর রহমান। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পেশার প্রায় অর্ধশত স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা ওয়েলনেস কোচিং এবং ওয়েলনেস সচেতনতা তৈরিতে ডা. মেছবাহ উদ্দিনের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এই বইটি সুস্থ ও সুখী জীবনযাপনের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে উল্লেখ করেন।
উন্নত জাতি হতে স্বাস্থ্যবান হওয়া দরকার জানিয়ে অধ্যাপক ডা. মুজাহেরুল হক বলেন, সবাইকে রোগ থেকে বেঁচে থাকতে হবে এবং রোগে আক্রান্ত হলে যতো দ্রুত চিকিৎসকের শরাপন্ন হওয়া যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে ডা. সাইদুল আশরাফ কুশল বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর এক নম্বর সমস্যা হতে যাচ্ছে বিষন্নতা। দৈনিক ১৫টি সিগারেটের ধুমপানে যে পরিমান ক্ষতি হয় একাকিত্বের ভয়াবহতাও সেরকম।
বইটি মনকে বুঝে সুস্থতা অর্জনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায় হতে পারে বলে মনে করেন লেখক। তিনি জানান, বইটি মূলত মন ও দেহের সুস্থতার জন্য গভীর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ কিংবা অসুস্থ জীবনযাপনের ধরন থেকে উন্নতি করে মানসিক শক্তি বৃদ্ধি, সুস্থতা, প্রকৃতসুখের আলিঙ্গন এমনকি ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় গাইডলাইন দেয়।
ডা. মেছবাহ উদ্দিন বলেন, মানসিক অবস্থাকে উপেক্ষা করে পরিপূর্ণ সুস্থতা কখনো সম্ভব নয়। সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি, সুখ ও সমৃদ্ধি অর্জনে মেন্টাল ফিটনেস এবং হোলিস্টিক ওয়েলনেস লাইফস্টাইল অনুশীলনের বিকল্প নেই। মানসিক অসুস্থতার মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সেজন্য প্রয়োজনীয় সচেতনতা ও দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি আমাদের মানসিক অবস্থা, খাদ্যাভাস, ও জীবনাচরণের প্রতি যত্নবান হওয়া সময়ের দাবি বলে তিনি মনে করেন। ফলে বইটি পাঠক এর সচেতনতা ও দক্ষতাবৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদী
শুধুমাত্র রোগের লক্ষ্মণ নয় বরং রোগ প্রতিরোধে করনীয় কিংবা অসুস্থতার মূল কারণকে চিহ্নিত করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন বইটির লেখক।
অনুষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানে ছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হ্যাপি ভেঞ্চারস। বইটি অ্যামাজন, রকমারিসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বইয়ের দোকানে এবং বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাচ্ছে।