বৃহস্পতিবার ● ১৯ জুলাই ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » বদলে যাচ্ছে সেলফোনের প্রযুক্তি
বদলে যাচ্ছে সেলফোনের প্রযুক্তি
অল্প সময়ের ব্যবধানেই বদলে যাচ্ছে সেলফোনের প্রযুক্তি। যুক্ত হচ্ছে নিয়ারফিল্ড কমিউনিকেশনের (এনএফসি) মতো সুবিধা কিংবা মোশন সেন্সিং প্রযুক্তি। অনেকটা অগোচরেই বিদায় নিচ্ছে একসময়ের জনপ্রিয় কিছু প্রযুক্তি। হারাতে বসা সে ধরনের কয়েকটি প্রযুক্তি -
ইনফ্রারেড: এ শতকের প্রথম দিকে বেশির ভাগ উচ্চপ্রযুক্তির সেলফোনে থাকত ইনফ্রারেড সুবিধা। ইডিজিই ও ব্লুটুথের মাধ্যমে ডাটা ট্রান্সফারের সুবিধা এখন জনপ্রিয় হলেও সে সময় ইনফ্রারেডই ছিল ভরসা। ঠিক যেভাবে ভিডিও প্রযুক্তি বিদায় দিয়েছে রেডিওকে, একইভাবে ব্লুটুথের কাছে বাজার হারিয়েছে ইনফ্রারেড। প্রযুক্তিটির সমস্যা ছিল, এর মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদানে দুটি সেলফোনকে খুব কাছাকাছি রাখতে হতো। একটু এদিক-ওদিক হলেই বিঘ্ন ঘটত। আদান-প্রদান গতি সীমাবদ্ধ থাকত সেকেন্ডে ২ কিলোবাইটের মধ্যে। অথচ ব্লুটুথে পাওয়া যায় সেকেন্ড ২৪ কিলোবাইট গতি। তবে ইনফ্রারেডের নিরাপত্তা ব্লুটুথের চেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ট্র্যাকপ্যাড নেভিগেশন: আগে সেলফোন কেনার সময় অনেকেই চার বাটনের ট্র্যাকপ্যাড আছে কি না, তা যাচাই করতেন। এখন টাচস্ক্রিনের জনপ্রিয়তায় ট্র্যাকপ্যাডের প্রয়োজন নেই বললেই চলে। ট্র্যাকপ্যাডের মাধ্যমে অতটা দ্রুত কাজ করা যায় না, যতটা করা যায় টাচস্ক্রিনে। কিছু কিছু সেলফোনে থাকত দুই বাটনের ট্র্যাকপ্যাড, যাতে কাঙ্ক্ষিত মেনুতে যেতে সময় লাগত অনেক বেশি। আরআইমের তৈরি ব্ল্যাকবেরি স্মার্টফোনে থাকা ট্র্যাকপ্যাডগুলো এখনো বেশ জনপ্রিয়। এগুলোও দিন দিন জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে স্মার্টফোনের টাচস্ক্রিনের কাছে। স্মার্টফোনের টাচস্ক্রিনে কম্পিউটার মাউসের মতো স্বাচ্ছন্দ্য পাওয়া যায় বলে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে কি-প্যাডের ট্র্যাকপ্যাড।
রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিন: সেলফোনে টাচস্ক্রিন প্রযুক্তি নতুন নয়। গত শতকের নব্বইয়ের দশক থেকেই প্রচলন রয়েছে এর। তবে রেজিস্টিভ টাচের জায়গা দখল করে নিয়েছে ক্যাপাসিটিভ টাচ প্রযুক্তি। আইফোনের হাত ধরেই এর প্রচলন শুরু। এ ধরনের স্ক্রিন আগের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। রেজিস্টিভ টাচস্ক্রিনে ৩টি লেয়ার থাকত। সেগুলো একই সঙ্গে একাধিক স্পর্শ নিয়ে কাজ করতে পারত না।
সাদাকালো ডিসপ্লে: বর্তমান বাজারের প্রায় সব সেলফোনই রঙিন। অথচ একটা সময় ছিল যখন রঙিন ডিসপ্লের সেলফোন কিনতে গেলে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হতো। আর এখন খুব কম দামের সেলফোনেও ব্যবহূত হয় রঙিন ডিসপ্লে। বিশ্লেষকরা নকিয়ার ১১০০ ও ৩৩১০ মডেলের সেলফোনের কথা উল্লেখ করেন। অনেকের মতে, সেলফোনগুলো কোনোভাবেই নষ্ট হওয়ার নয়। এত শক্তপোক্ত সেলফোনগুলোর ডিসপ্লেও সাদাকালো।
সিম্বিয়ান অপারেটিং সিস্টেম: খুব বেশি দিন হয়নি, নকিয়া বিদায় জানিয়েছে সেলফোন অপারেটিং সিস্টেম সিম্বিয়ানকে। এ সিম্বিয়ানকে পুঁজি করে অনেকগুলো জনপ্রিয় স্মার্টফোন বাজারে এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ও অ্যাপলের আইফোনের কাছে বাজার হারিয়েছে নকিয়ার সিম্বিয়ান। বাজারে টিকতে না পেরে সিম্বিয়ান বাদ দিয়ে জোট বেঁধেছে মাইক্রোসফটের সঙ্গে। যারা নকিয়ার পুরনো দিনের স্মার্টফোন ব্যবহার করেছেন, তারা অবশ্যই মিস করবেন সিম্বিয়ানকে।
সূত্র: দি ইকোনমিক টাইমস