বুধবার ● ৫ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সৃজনশীল, উদ্ভাবনী এবং সমস্যা সমাধানকারী হিসেবে গড়ে তোলা হবে: প্রতিমন্ত্রী পলক
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সৃজনশীল, উদ্ভাবনী এবং সমস্যা সমাধানকারী হিসেবে গড়ে তোলা হবে: প্রতিমন্ত্রী পলক
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সৃজনশীল, উদ্ভাবনী এবং সমস্যা সমাধানকারী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের ফলে দেশের মেধাবী তরুণ-তরুণীরা সাশ্রয়ী মূল্যের নির্ভরযোগ্য উচ্চ-গতির ইন্টারনেট সহ যেকোনো ডিভাইস ব্যবহার করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী গত ৪ জুন ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের ফ্ল্যাগশিপ সিএসআর প্রোগ্রাম উইমেন ইন টেক, বাংলাদেশ-এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
পলক বলেন, দেশের ২৬০০ ইউনিয়নে ফাইবার-অপটিক কেবল সংযোগ আমরা স্থাপন করেছি। ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে সবার জন্য সাশ্রয়ী করে তুলেছি। এর ফলে বাংলাদেশে ১৩০ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে। তিনি বলেন, গত দেড় দশকে আমরা ২৫০০ স্টার্ট-আপ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। ইনোভেশন ডিজাইন এন্টারপ্রেনারশিপ একাডেমির অধীনে ৩৮৫টি স্টার্ট-আপকে অনুদান দিয়েছি। প্রতিমন্ত্রী জানান, নারীর ক্ষমতায়ন এবং প্রযুক্তিতে নারীদের যুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ‘শি পাওয়ার’ প্রকল্প দিয়েছেন। যার ফলে আমরা সারাদেশে ১০,৫০০ নারীকে প্রশিক্ষণ দিতে সক্ষম হয়েছি। ‘শি পাওয়ার’ প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের পর আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ‘হার পাওয়ার’ প্রকল্প পেয়েছি। এই প্রকল্পের অধীনে, আমরা আইটি ফ্রিল্যান্সিং, ই-কমার্স, কল সেন্টার এজেন্ট এবং সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ৫ মাসের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। প্রশিক্ষণের পর, আমরা এক মাসের মেন্টরশিপ দিচ্ছি। একজন উদ্যোক্তার জন্য শুধুমাত্র প্রশিক্ষণ এবং তহবিল যথেষ্ট নয়, তাদের মেন্টরশিপ, কোচিং এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দরকার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পলক আরো বলেন, আমরা আশা করবো আগামী বছর হুয়াওয়ে বাংলাদেশে তাদের ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ তৈরি করবে। একইসঙ্গে হুয়াওয়ে বাংলাদেশে যেনো একটি গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র উপস্থাপন করে। যেখানে আমাদের নারী প্রকৌশলীরা বিশেষ অবদান রাখবে। একইভাবে আগামী ১৭ বছর এখনকার মতোই চীন সরকার বাংলাদেশের স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে এবং পাশে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জারা জাবীন মাহবুব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশে ইউনেস্কোর অফিস প্রধান ও প্রতিনিধি ড. সুজান ভাইজ, আইইউটি-এর ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এবং হুয়াওয়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও হুয়াওয়ে বাংলাদেশের সিইও প্যান জুনফেং। পরে প্রতিমন্ত্রী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন
উল্লেখ্য, হুয়াওয়ের কৌশলগত সহযোগী হিসেবে এই প্রতিযোগিতার অংশ ছিলো ইউনেস্কো বাংলাদেশ। প্রতিযোগিতায় ৭৫০ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্য থেকে চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৮ জনকে বাছাই করা হয়। একক ও দলীয়-দুই রকম প্রতিযোগিতা ছিল। আইসিটিকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে নতুন সমাধান সম্ভব এবং এর ব্যবসায়িক সফলতার সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে দলভিত্তিক আইডিয়াগুলোকে নির্বাচিত করা হয়। প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ‘এমপাওয়ার’; প্রথম রানার আপ হয়েছে ‘তেরা বিন’- যাদের বিজনেস আইডিয়া ছিল সোলার কম্পোস্টার ও অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে কীভাবে বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করা যায়। দ্বিতীয় রানার আপ হিসেবে নির্বাচিত ‘সোলনেট’- দলটি ক্লাউড প্রযুক্তি ও অ্যাপ ব্যবহার করে কীভাবে সহজে ও কম খরচে সোলার প্ল্যান্ট তৈরি ও ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে কাজ করেছে।
এছাড়া, চারজন প্রতিযোগী তাঁদের বিশেষ পারফরমেন্সের কারণে ব্যক্তিগতভাবে বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ীরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের ছাত্রী কায়সারী ফেরদৌস, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির গ্রাজুয়েট মাহমুদা নাঈম, এসবিআইটি লিমিটেডের ডিজাইন ভেরিফিকেশন ইঞ্জিনিয়ার সুমাইয়া তারিক লাবিবা এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির ইইই বিভাগের ছাত্রী সাফরিনা কবির। এই বিজয়ীরা চীনে সফর করে দেশটির স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার সুযোগ পাবেন।