সোমবার ● ১৬ জুলাই ২০১২
প্রথম পাতা » আইসিটি আপডেট » তথ্য ফাঁসের নতুন এক ওয়েবসাইট অ্যানোইয়া
তথ্য ফাঁসের নতুন এক ওয়েবসাইট অ্যানোইয়া
হ্যাকিংয়ে খুব একটা সাড়া ফেলতে পারছে না অ্যানোনিমাস। উইকিলিকসও নিয়মিত তথ্য ফাঁস করছে না। এ অবস্থায় উইকিলিকসের মতো তথ্য ফাঁসের নতুন এক ওয়েবসাইট চালু করেছে হ্যাকার গ্রুপ অ্যানোনিমাস। সাইটটির নাম দেয়া হয়েছে পার: অ্যানোইয়া (পটেনশিয়ালি অ্যালার্মিং রিসার্চ: অ্যানোনিমাস ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি)। প্রযুক্তিবিষয়ক ব্লগ ওয়্যারড এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
বেশকিছু লক্ষ্য নিয়ে গত মার্চে চালু করা হয় সাইটটি। গোপনীয় বিভিন্ন তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে সহজে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এটি চালু করা হয়েছে।
এ সাইট চালুর মাধ্যমে অ্যানোনিমাস এর কার্যক্রমের মধ্যেও পরিবর্তন আনল। এর আগে এ দলটি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গিয়ে গোপন দলিলাদি ফাঁস করত। এ ছাড়া টরেন্টের মাধ্যমে এ ফাইলগুলো সবার হাতের নাগালে নিয়ে আসত। নতুন এ ওয়েবসাইটটির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের গোপনীয় তথ্য প্রকাশ করে সাধারণ জনগণের মধ্যে আরও বেশি সাড়া ফেলতে চায়।
অ্যানোনিমাসের এক সদস্য সম্প্রতি ওয়্যারডের সঙ্গে অনলাইন চ্যাট করেন। সে সময় তিনি এ সাইটটি চালুর প্রেক্ষাপট ও লক্ষ্য সম্পর্কে বলেন। তার তথ্য অনুযায়ী, পুরোপুরি উইকিলিকসের মতো করে এগোবে না অ্যানোনিমাস। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা উইকিলিকসের মাধ্যমে ফাঁস করত। এর বদলে অ্যানোনিমাস নিজেই এ তথ্য সংগ্রহ করবে।
অ্যানোনিমাসের ওই সদস্য আরও জানান, এত দিন পর্যন্ত অ্যানোনিমাস বিভিন্ন তথ্য ফাঁস করেছে। তা নিয়ে মিডিয়ায়ও অনেক লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু যে তথ্যগুলো ফাঁস করা হয়েছে, সেগুলো খুব একটা প্রচার পায়নি।
বিষয়টি নিয়ে ওই সদস্য বলেন, ‘কেউ এ তথ্যগুলো নিয়ে ভাবে না। কারণ তারা এ তথ্যগুলো সঠিকভাবে জানতে পারে না। আমরা চাই এ তথ্যগুলো সবার হাতে পৌঁছুক। এ ওয়েবসাইট তৈরির পেছনে উইকিলিকসেরও অবদান রয়েছে বলে জানান ওই সদস্য। তার ভাষায়, উইকিলিকস অনেক দেরিতে তথ্য প্রকাশ করত। পরবর্তীতে যে সময় তথ্যগুলো প্রকাশ পেত, তখন তার তেমন কোনো আবেদনও থাকত না। তাই আমরা এ ওয়েবসাইটটি তৈরি করেছি, যাতে সম্ভাব্য কম সময়ে সব তথ্য ফাঁস করা যায়।
অ্যানোনিমাসের ওয়েবসাইটটি চালুর ফলে উইকিলিকসের জনপ্রিয়তা কমবে কি না জানতে চাইলে ওই সদস্য বলেন, ‘আমি ঠিক জানি না। এটা আসলে উইকিলিকসের ওপরই নির্ভর করে।’
তিনি আরও বলেন, ওয়েবসাইটটি চালুর পর উইকিলিকসের একজন তাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে অ্যানোনিমাসও কথা বলতে আগ্রহী জানান ওই সদস্য।
গত শুক্রবার উইকিলিকস এক টুইটে জানায়, আইন প্রণয়নকারী সংস্থাগুলোর নির্দেশনায় চলছে অ্যানোনিমাস। এর বিপরীতে অ্যানোনিমাসের পক্ষ থেকে আরেক টুইটে বলা হয়, উইকিলিকস অ্যানোনিমাসের ওপর ক্রমেই নির্ভরশীল হয়ে উঠছে।
উইকিলিকসের ফাঁস করা দলিলগুলো থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গেলেও বিস্তারিত কোনো কিছু জানা যায় না। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঘটনার প্রেক্ষাপটগুলো উল্লেখ করা থাকে না দলিলে। অ্যানোনিমাস এ বিষয়টিও সরবরাহ করবে বলে জানান ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তির ই-মেইল হ্যাক করে কোনো জরুরি দলিল পাওয়া গেলে ওই ব্যক্তির আগের পাঠানো-মেইলগুলোও প্রকাশ করা হবে। এর ফলে ই-মেইল পাঠানোর ইতিহাস ও কারণও জানতে পারবেন পাঠকরা।
ওয়েবসাইটটিতে এখনো উন্নতির অনেক জায়গা রয়েছে বলে জানান ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের ওয়েবসাইটটি খুব সাদামাটা। ধীরে ধীরে আমরা এতে সার্চ বাটনসহ অন্যান্য ফিচার যোগ করব।’
বিভিন্ন দলিল ফাঁস করা হলেও অ্যানোনিমাসকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সহজে খুঁজে পাবে না বলেও জানান তিনি। তার ভাষায়, ‘আমরা তথ্যগুলোও নাম-পরিচয়হীনভাবে ফাঁস করব এবং অবশ্যই আমরা আমাদের আসল পরিচয় প্রকাশ করব না।’