বৃহস্পতিবার ● ১২ জুলাই ২০১২
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ঢাবিতে প্রথমদিনেই জমজমাট প্রযুক্তি উৎসব
ঢাবিতে প্রথমদিনেই জমজমাট প্রযুক্তি উৎসব
৷৷বদরুদ্দোজা মাহমুদ তুহিন৷৷ ঢাকা ইউনিভার্সিটি আইটি সোসাইটির (ডিউইআইটিএস) উদ্যোগে গতকাল (বুধবার) ১১ জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মত শুরু হয়েছে দু’দিনব্যাপী ‘ডিইউআইটিএস-স্যামসাং ক্যাম্পাস প্রযুক্তি উৎসব’। ‘আইসিটি এনাবল ক্যাম্পাস ফর বেটার এডুকেশন’ (উন্নত শিক্ষায় প্রযুক্তি নির্ভর ক্যাম্পাস) প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে এ আয়োজিত এ উৎসবে দেশের শীর্ষস্থানীয় ৩০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ শতাধিক শিক্ষক- শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। উৎসবের প্রথম দিনেই দেশের প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ অতিথি, অসংখ্য শিক্ষার্থীদের আগমনে জমজমাট হয়ে উঠে প্রযুক্তি উৎসব।
সকাল ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষাথী মিলনায়তনে (টিএসসি) বর্নাঢ্য র্যালির মাধ্যমে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ। উপস্থিত ছিলেন স্যামসাং বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টও সি এস মুন, ডিউইআইটিএস মডারেটর ড. শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া। উদ্বোধনী র্যালিটি টিএসসি মিলনায়নতন থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ফিরে আসে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে প্রযুক্তিবিষয়ক মেলা, সেমিনারসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রয়েছে। ডিইউআইটিএস যে প্রযুক্তি উৎসবের আয়োজন করেছে সেটি তথ্যপ্রযুক্তির এই অগ্রযাত্রাসহ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি আরো বলেন, সরকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিতে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। শিক্ষাখাতকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে দেশের সবকটি সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে একসঙ্গে সম্পৃক্ত করার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের মধ্যে অ্যাকাডেমিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে পারষ্পরিক সম্পৃক্ততা আনতে পারবে। একইভাবে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সম্পৃক্ত করার আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ ও সহযোগিতা থাকলে অবশ্যই ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির ভালো মন্দ সবই আছে। আমাদেরকে ভালোটি গ্রহণ করতে হবে। সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে আমাদেরকেই সচেতন হতে হবে। শিক্ষার্থী তথা তরুণ প্রজন্মকে আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে না পারলে জাতিকে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটি আয়োজিত এ উৎসব অবশ্যই শিক্ষার্থীদেও জন্য সহায়ক হবে। একই সঙ্গে তারা আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফ্রিল্যান্সার আয়োজিত প্রতিযোগিতায় বিশ্বের সেরা কনটেন্ট মেকার ও সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজার হিসেবে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ডেভসটিম চ্যাম্পিয়ন হওয়ায়, প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি নুরুল ইসলাম নাহিদসহ অতিথিরা।
দু’দিনব্যাপি এ উৎসবের প্রথমদিনে দুটি পর্বে উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, পলিসি মেকারদের নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন প্রকল্পের উপদেষ্ঠা আনীর চেীধুরী, সরকারের অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্ভাহী পরিচালক জ্ঞানেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও বিআইআইসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সূফি ফারুক ইবনে আবু বকর উপস্থিত ছিলেন। পরিচালনা করেন ড্যাফোডিল ইন্টান্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার জাবেদ মোর্শেদ।
উৎসবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রকল্প প্রদর্শন, গেমিং কনটেষ্ট, কুইজ প্রতিযোগিতা, কর্মশালা, সেমিনার, তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর বিতর্ক, বিজনেস আইডিয়া প্রতিযোগসহ রয়েছে নানা আয়োজন। এছাড়াও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও মিট দ্যা পার্সোনালিটির আয়োজন থাকছে।
উৎসবে মোট ২টি সেমিনার, ২টি কর্মশালা ও একটি আলোচনা পর্ব থাকছে। এছাড়াও রয়েছে ল্যাপটপ ও কম্পিউটার সার্ভিস ডেস্ক। উৎসব চলাকালীন কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সমস্যা সমাধান করা যাচ্ছে এখানে।
এ আয়োজনের মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ভর ক্যাম্পাস গড়তে প্রস্তাবনাও রাখা হবে।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রায় ২০টি প্রকল্প প্রদর্মিত হচ্ছে উৎসবে। এসব প্রকল্প থেকে সেরা তিন প্রকল্পকে পুরস্কৃত করা হবে। এছাড়া কুইজ প্রতিযোগিতা ও গেমিং কনটেস্টেও ঢাকা ও ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহন থাকছে।
প্রথমবারের মত তথ্য-প্রযুক্তি নিভর বিতর্কের আয়োজন করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তির সহয়তা নিয়ে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করতে পারবে। এটি বারোয়ারি পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহৎ এ আয়োজনে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তিপন্য প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। এছাড়াও এ আয়োজনে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছে বিশ্বেও সর্ববৃহৎ মাইক্রোপ্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইন্টেল। এতে সেমিনার পার্টনার হিসেবে আছে বাংলাদেশের সর্বাধিক পঠিত অনলাইন জবসাইট বিডিজবস্ ডট কম এবং গ্রামীন-ইন্টেল স্যোসাল বিজনেস। এছাড়াও এতে সর্বোতভাবে সহায়তা করছে বিডিওএসএন এবং আইডিয়া ফ্যাক্টরি।